সোনালী চুলের মায়াবী মানব

সর্বকালের সেরা আর্জেন্টাইন ফুটবলার কে? এই প্রশ্নের উত্তরে এ যুগের ফুটবল ভক্তরা একযোগে বলে উঠবেন ক্ষুদে জাদুকর লিওনেল মেসির নাম। কিন্তু আপনি যদি বিশ শতকের ফুটবল দেখা মানুষ হন তাহলে হয়ত আপনার উত্তর হবে ডিয়েগো ম্যারাডোনা। এরা দুজনেই অসামান্য একেকজন ফুটবলার।তবে অনেকের মতে, সর্বসেরা আর্জেন্টাইন ফুটবলার কিন্তু এই দুজনের কেউই নন। তবে কে? উত্তরে বলব আলফ্রেডো ডি স্টেফানোর নাম।

সর্বকালের সেরা আর্জেন্টাইন ফুটবলার কে? এই প্রশ্নের উত্তরে এ যুগের ফুটবল ভক্তরা একযোগে বলে উঠবেন ক্ষুদে জাদুকর লিওনেল মেসির নাম। কিন্তু আপনি যদি বিশ শতকের ফুটবল দেখা মানুষ হন তাহলে হয়ত আপনার উত্তর হবে ডিয়েগো ম্যারাডোনা। এরা দুজনেই অসামান্য একেকজন ফুটবলার।তবে অনেকের মতে, সর্বসেরা আর্জেন্টাইন ফুটবলার কিন্তু এই দুজনের কেউই নন। তবে কে? উত্তরে বলবো আলফ্রেডো ডি স্টেফানোর নাম।

অনেকের কাছেই আলফ্রেডো ডি স্টেফানোর নামটা অপরিচিত হতে পারে। তবে ফুটবল যাদের আগ্রহের বিষয়ের মধ্যে উপরের দিকে থাকে তাদের কাছে কিন্তু এই নাম অতি পরিচিত। তবে, ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস – কখনও বিশ্বকাপে খেলারই সুযোগ পাননি তিনি।

ডি স্টেফানোর জন্ম আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। তার দাদা ইতালি থেকে এসে আর্জেন্টিনায় বসত গড়েছিলেন। বাবা আলফ্রেডো সিনিয়রও ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন রিভার প্লেট ফুটবল ক্লাবের। মা ইউলাইলা ছিলেন ফ্রেঞ্চ এবং আইরিশ বংশোদ্ভূত। বুয়েন্স আয়ার্সের রাস্তায় রবারের ফুটবল দিয়ে খেলার মাধ্যমেই তার ফুটবলে হাতেখড়ি হয়।

ছোটবেলা থেকেই বেশ প্রতিভাবান হলেও আশ্চর্যজনকভাবে ১৯ বছর বয়সেও তখনও রিভার প্লেটের ৩য় দলেই পড়ে ছিলেন আলফ্রেডো ডি স্টেফানো। টাকা-পয়সা নিয়ে ক্লাবের সাথে গন্ডগোল হওয়ায় তাকে ধারে খেলতে পাঠানো হয় পাশেরই আরেক ক্লাব অ্যাটলেটিকো হারিকেনে। কিন্তু তার প্রতিভার কথা বুঝতে পেরে রিভার প্লেট আর দেরি না করে পরের সিজনেই তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। এসেই রাতারাতি তারকা বনে যান স্টেফানো। ১৯৪৭ সালে লীগে টপ স্কোরার পাশাপাশি লিগও জেতান রিভার প্লেটকে। অসাধারণ গতির জন্য তাকে ডাকা শুরু হয় ‘সদ্য ব্লন্ড অ্যারো’ নামে।

১৯৪৯ সালে কলম্বিয়ান লিগের ক্লাব মিলোনোরিয়াস অব বোগাটায় চলে যান। তার ক্যারিয়ারের প্রথম ১২ বছরে তিনি আর্জেন্টাইন এবং কলম্বিয়ান লিগে মোট ছয়টি লিগ শিরোপা জেতেন।

তখনই ডি স্টেফানোর উপর চোখ পড়ে ইউরোপিয়ান ফুটবল জায়ান্টদের। আর কেনই বা চোখ পড়বে না তার উপর। রিভার প্লেটের ক্যারিয়ারে ৪৬ ম্যাচে ৪৯ গোল, সেখান থেকে লোনে খেলা ক্লাব হুরাকেনে ২৫ ম্যাচে ১০ গোল আর সেখান থেকে কলম্বিয়ান লিগের মিলিয়োনিয়োরস ক্লাবে ১০২ ম্যাচে ৯০ গোল, এভাবেই নিজেকে মেলে ধরেছিলেন নিজেকে।নিজের ফুটবল প্রতিভার পুরোটাই তখন দেখাচ্ছিলেন স্টেফানো। তাই তো ইউরোপিয়ান ফুটবল জায়ান্টরা সেই সময় অনেক বেশি ঝুঁকে পড়েছিলেন তার উপর।

তার ভেতর অসাধারণ কিছু ছিল বলেই তার উপর নজর রেখেছিল এখনকার মত সেই সময়েরও বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি ক্লাব বার্সেলোনা। সর্বপ্রথম বার্সেলোনাই ডি স্টেফানোকে সাইন করানোর ব্যাপারে এগিয়েছিল। ধরা যায়, একরকম সাইন করিয়েই ফেলেছিল। অনেক দিন ধরে স্কাউট করে আসা বার্সেলোনা নিজেদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা সাইনিং করতে চেয়েছিল স্টেফানোকে সাইন করানোর মাধ্যমে।

তারা চেয়েছিল স্টেফানোর হাত ধরেই ইউরোপে তাদের রাজত্ব গড়ে উঠুক। কলম্বিয়ান ক্লাব মিলিয়নিয়োরসের সাথে কথা পাকাপাকি করে ডিল প্রায় হয়েই গিয়েছিল। কিন্তু এই ডিলে বাগড়া বাঁধিয়েছিল ডি স্টেফানোর ছোট বেলার ক্লাব রিভার প্লেট। যদিও প্রায় ৪ বছর ধরে তিনি সেই ক্লাবের হয়ে খেলছিলেন না। রিভার প্লেট স্টেফানোকে পুরোপুরি ভাবে মিলিয়োনিয়োরসের কাছে বিক্রিও করেনি, তাই বার্সেলোনা স্টেফানোকে কেনার পরেও স্প্যানিশ এফএ এর ছাড়পত্র না পাওয়ায় তাকে খেলাতে পারেনি।

এদিকে বার্সালোনার মতই আর এক স্প্যানিশ ইউরোপিয়ান জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ নিজেদের ক্লাবকে সমৃদ্ধ করতে স্টেফানোকে নজরে রেখেছিল এবং তারা শেষ পর্যন্ত স্টেফানোর প্রথম ক্লাব রিভার প্লেটের সাথে যোগাযোগ করে যাদের কাছে ছিল স্টেফানোকে বিক্রি করার আসল সত্ত্ব। রিভার প্লেট থেকে রিয়াল স্টেফানোকে কিনেছিল এবং রিভার প্লেটও তৈরি ছিল স্টেফানোর বিক্রির টাকাটা মিলিয়োনিয়োরসের সাথে শেয়ার করতে।

তাই যখন দুই ক্লাবই স্টেফানোকে দাবী করেছিল তখন স্প্যানিশ এফএ এবং ফিফা পড়েছিল মহা সমস্যায়। এই মামলা পুরোপুরি মিটে যেতে প্রায় তিন মাস সময় লাগে। তিন মাস পরে রায় হয়েছিল স্টেফানো ১৯৫৩-১৯৫৪ মৌসুম খেলবেন রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এবং এরপর থেকে খেলবেন বার্সেলোনার হয়ে। কিন্তু বার্সেলোনা এই ঝামেলায় প্রায় তিনমাস মাঠের বাইরে থাকা প্লেয়ারের ফর্ম হয়ত পড়ে যাবে ভেবে নিজেদের শেয়ার ছেড়ে দেয়। তাতে পুরোপুরি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে যান স্টেফানো। এই একটা জায়গাতেই বার্সেলোনা হয়ত নিজেদের ইতিহাসের সব থেকে বড় ভুলটি করেছিল স্টেফানোকে ছেড়ে দিয়ে।

এরপরেই নিজেকে বিধ্বংসী রূপে উপস্থাপন করেন স্টেফানো। নিজেকে প্রমাণ করলেন বিশ্বের সব থেকে কমপ্লিট ফুটবলার হিসেবে। ৫ ফুট ১০ ইঞ্চির এই মানুষটিকেই এখন পর্যন্ত ফুটবল ইতিহাসের সব থেকে কমপ্লিট প্লেয়ার বলা হয়ে থাকে।

ফ্রান্স ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের করা একটি পোলে ডি স্টেফানো ভোটের মাধ্যমে পৃথিবীর চতুর্থ সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ঘোষিত হয়েছিলেন। তার আগে এক নম্বরে ছিলেন ব্রাজিলিয়ান গ্রেট পেলে, দুই নম্বরে ফুটবল ঈশ্বর দিয়েগো ম্যারাডোনা আর তৃতীয় হয়েছিলেন ক্রুইফ। তারপরের অবস্থানেই ছিলেন স্যার ডন আলফ্রেডো ডি স্টেফানো।

ডি স্টেফানো রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের সেই তিনজন খেলোয়াড়ের একজন, যারা রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে টানা পাঁচটা ইউরোপিয়ান ট্রফি জিতেছিলেন। বাকি দুইজন ছিলেন ফ্রান্সিস্কো গেন্তো আর জোশে মারিয়া জারাগা। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে স্টেফানো শুধু একটানা পাঁচটি ইউরোপিয়ান ট্রফিই জেতেননি, মাদ্রিদের হয়ে তিনি আরও ৮ টি স্প্যানিশ লিগ জিতেছেন এবং একবার কোপা দেল রে জিতেছেন। তখন ক্লাব বিশ্বকাপ বা ইউরোপিয়ান সুপার কাপ বা স্প্যানিশ সুপার কাপ বলে কোনো টুর্নামেন্ট ছিল না, আবার রিয়াল মাদ্রিদ কোপা দেল রে’তে অংশগ্রহণ করেনি বলেও শোনা যায়।

ডি স্টেফানো অনেক যুগ ধরে রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকার শীর্ষে ছিলেন। পরবর্তীতে তাকে সরিয়ে রিয়ালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন রাউল গঞ্জালেজ এবং তারপরে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ডি স্টেফানোর গোল ছিল ২৮২ ম্যাচে ২১৬। এখনও তিনি স্প্যানিশ লিগের ইতিহাসের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ গোলদাতা। এখনও তিনি এল ক্লাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের টপ স্কোরার। রিয়াল মাদ্রিদকে বিংশ শতাব্দীর সেরা ক্লাব হিসেবে যখন ঘোষণা করা হয়, তখনও ডি স্টেফানো বেঁচে ছিলেন।

তিনি ছিলেন একজন পাওয়ারফুল, দ্রুতগতির, স্কিলফুল এবং প্রোলিফিক ফরোয়ার্ড। সেই সাথে তার ছিল অসাধারণ স্ট্যামিনা আর ছিলেন ট্যাক্টিক্যালি অনেক বেশি ভার্সেটাইল, অনেক বেশি ক্রিয়েটিভ এবং সব থেকে বড় বিষয় ছিল অন্যদের ছাড়িয়ে যাওয়ার মানসিকতা।

তার আরও একটি বড় গুণ ছিল মাঠের যেকোনো পজিশনে খেলতে পারতেন। অনেকবারই বলা হয়েছে তিনি একটানা পাঁচটি ইউরোপিয়ান ট্রফি জিতেছিলেন। তিনি ইউরোপিয়ান কাপে খেলা প্রতিটি ফাইনালেই গোল করেছেন এবং এই বিরল কীর্তি শুধুমাত্র এই একজনেরই আছে। আর একটানা ৫ ফাইনালে গোল তো করেছেনই, সেই সাথে ছিল একটি অবিস্মরণীয় হ্যাটট্রিক।

১৯৬০ সালে ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে ইন্ট্রাক্ট ফ্র্যাঙ্কফ্রুটের বিপক্ষে হাম্পডেন পার্কে রিয়াল মাদ্রিদ ৭-৩ গোলে জেতে। অনেক ফুটবল বিশারদ মনে করেন এই ম্যাচটা ইউরোপের মানুষের দেখা অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতা-পূর্ণ এবং ফুটবলের অতিমানবীয় ম্যাচ। এই ম্যাচটাতেই স্টেফানো হ্যাটট্রিক করেন। তাঁর অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের কারণেই রিয়াল মাদ্রিদ তাদের ইতিহাসের একটানা পাঁচটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বা ইউরোপিয়ান কাপের পঞ্চমটা জিতেছিল।

প্রতিপক্ষ দলটি ম্যাচের ১৮ মিনিটে গোল করে লিড নিয়েছিল, কিন্তু তারা হয়ত ভুলে গিয়েছিল প্রতিপক্ষ দলে ছিল স্টেফানো আর পুস্কাস। স্টেফানো ম্যাচের ২৭ মিনিটে দলকে এনে দেয় সমতা। এরপরে ৩০ মিনিটে করেন নিজের দ্বিতীয় গোল এবং রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে যায় ২-১ গোলে। এরপর প্রতিপক্ষের উপর পেরেঙ্ক পুসকাসের ঝড় বয়ে যায়। ৪৫+১ মিনিটে নিজের প্রথম গোল করেন পুসকাস। এরপর বিরতি থেকে ফিরে ৫৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন পুস্কাস আর ৬০ মিনিটে গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি। এতেও থামেননি পুসকাস, ৭১ মিনিটে আবারও গোল করে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোপিয়ান কাপে চারটি গোল করার কীর্তি গড়েন।

এই ম্যাচটি হাইলাইট করার কারণ, এই ম্যাচটার মতই অসাধারণ ক্যারিয়ার ছিল স্যার ডি স্টেফানোর। ১৯৫০ এর পরবর্তীতে যদি ফিফা বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের উপাধি দিত তাহলে হয়ত একটানা ৬/৭ বার স্টেফানোই জিততেন সেই সম্মাননাটি। ফিফার নিয়ম না থাকার কারণে স্টেফানো তিনটি জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। তিনি একাধারে কলম্বিয়া জাতীয় দলে খেলেছেন ৪ ম্যাচ, স্পেন জাতীয় দলে ৩১ ম্যাচ খেলে করেছিলেন ২৩ গোল এবং আর্জেন্টিনার হয়ে ৬ ম্যাচে করেছিলেন ৬ গোল।

আর্জেন্টিনার হয়ে খেলা ৬ ম্যাচ ছিল দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই কোপা আমেরিকাতে। ১৯৪৭ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে তিনি কোপা আমেরিকায় ৬ ম্যাচ খেলে ৬ গোল করেন এবং আর্জেন্টিনাকে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন।

কিন্তু তার জীবনের সব থেকে বড় ব্যর্থতা একটিই। তিনি কোনো জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি। ইনজুরির কারণেও খেলা হয়নি বিশ্বকাপ। আবার কোনোবার তার খেলা জাতীয় দল বিশ্বকাপের মঞ্চ পর্যন্তই পৌঁছাতে পারেনি। একটি বিশ্বকাপের অপূর্ণতায় তাকে বিশ্ব মঞ্চে খেলোয়াড়দের সর্বশ্রেষ্ঠ হওয়ার দৌঁড়ে পিছিয়ে দিয়েছিল। যদি কখনও তিনি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেতেন তাহলে হয়ত তার ম্যাজিকে বিশ্বকাপটা জিতলেও জিততে পারতো আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া কিংবা স্পেন।

আর তার নামও উঠে আসতো সর্বকালের সর্বসেরাদের তালিকায়। সে সময় ফ্রান্স ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ব্যালন ডি অর প্রদান করত। স্টেফানো ১৯৫৭ এবং ১৯৫৯ সালে দুইবার এই পুরস্কার জেতেন। রিয়াল মাদ্রিদে ইতিহাস রচনা করে ১৯৬৪ সালে তিনি এস্পানিওলে চলে যান এবং সেখান থেকে ৪০ বছর বয়সে অবসর গ্রহণ করেন।

৮ বছর আগে ২০১৪ সালে এই নশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় নেন ফুটবলের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে নাম লেখা এই কিংবদন্তি। শেষ করব ফুটবলের আরেক মহামানব ববি চার্লটন আলফ্রেডো ডি স্টেফানোর খেলা দেখে যে মন্তব্য করেছিলেন সেটা দিয়ে – ‘Who is this man? He takes the ball from the goalkeeper, he tells the full-backs what to do; wherever he is on the field he is in position to take the ball, you can see his influence on everything that is happening… . I had never seen such a complete footballer. It was as though he had set up his command center at the heart of the game. He was as strong as he was subtle. You just could not keep your eyes off him.’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...