হারিস কী টেস্ট খেলার যোগ্য নন?

বিগ ব্যাশ খেলার জন্যই টেস্টকে ‘না’ বলেছেন হারিস। কারণ, ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে বিগ ব্যাশ শেষ হবে চার ফেব্রুয়ারি। আর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাকিস্তান দল এই সময়ই টেস্ট সিরিজ খেলবে। কোনো ভাবেই বিগ ব্যাশ মিস করতে চাননি হারিস।

ক্যারিয়ারে একটি মাত্র টেস্টই খেলেছেন হারিস রউফ। প্রায় এক বছর আগে সেই টেস্টের পর আবারো লাল বলের ক্রিকেটের জন্য বিবেচনা করা হয়েছিল পাকিস্তানে এ পেসারকে।  অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আগামী ১৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচ সিরিজের জন্য ঘোষিত ১৮ সদস্যের প্রাথমিক দলের জায়গা পেয়েছিলেন তিনি।

সে সময় টেস্ট খেলতে সম্মত হলেও দু’দিন বাদেই মত বদলে ফেলেন হারিস রউফ। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন এক ‘সার্কাস’ শুরু হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেটে। মূলত ফিটনেস ও ওয়ার্কলোডের কারণেই হারিস এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আর তা নিয়ে রউফের মুখোমুখি অবস্থানেই দাঁড়িয়েছেন পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচক ওয়াহাব রিয়াজ। রউফের এ সিদ্ধান্ত যে পাকিস্তানের ক্রিকেটকে ‘আঘাত’ করবে, সেটি কড়া ভাষায় জানান পাকিস্তানের সাবেক এই পেসার। ওয়াহাব রিয়াদ বলেন, ‘দু’দিন আগে হারিসের সাথে কথা হল, বলল টেস্ট খেলতে প্রস্তুত। এখন ওয়ার্কলোড আর ফিটনেসের কারণ দেখিয়ে বলছে খেলবে না।’

পাকিস্তান দলের ডিরেক্টর হিসেবে সদ্যই যোগ দিয়েছেন মোহাম্মদ হাফিজ। ওয়াহাবও নির্বাচক হিসেবে একদমই নতুন। দু’জনের সাথেই টেস্ট খেলার ব্যাপারে কথা হয় হারিস রউফের।

ওয়াহাব রিয়াজ বলেন, ‘আমি ও হাফিজ এই ব্যাপারে ওর (হাফিজ) সাথে কথা বলেছি। অধিনায়ক ও কোচ – দু’জনই ওকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্টে দেখতে চায়। ও ইমপ্যাক্ট বোলার। ওকে বলাও হয়েছিল অস্ট্রেলিয়াতে দিনে ১০-১২ ওভারের বেশি বোলিং করতে হবে না। আমর ট্রেইনার ও ফিজিও’র সাথেও কথা বলেছি। ওর ফিটনেসে এমন কোনো ইস্যু নেই যাতে অস্ট্রেলিয়াতে খেলতে সমস্যা হবে।’

ওয়াহাব সাফ জানিয়ে দেন, জাতীয় দলে খেলতে হলে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, নাহলে ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়বে। তিনি বলেন, ‘চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের এভাবে না বলার সুযোগ দেখি না। আর হারিস রউফ যদি জাতীয় দলে খেলতে চায় তাহলে তাঁকে ত্যাগ স্বীকার করেই খেলতে হবে। একজন ক্রিকেটার যত বড়ই হয়ে যান না কেন, পাকিস্তান দলকেই তাঁর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে, না হলে তাঁকে আমরা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থেকে বাদ দেব।’

যদিও, ওয়াহাব রিয়াজের এমন মন্তব্যের বিপক্ষেও মতামত আছে। এই ঘটনার পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন পাকিস্তানের আরেক সাবেক ক্রিকেটার আকিব জাভেদ।

তিনি বলেন, ‘হারিস রউফ টি-টোয়েন্টিতে খেলে। সে টেস্ট খেলেনি প্রায় এক বছর। সে কিভাবে টেস্ট খেলবে এতদিন বিরতির পর? পিসিবি শুধু মুখেই বলে, ওরা ক্রিকেটারদের সম্মান দেয়। কিন্তু তাঁরা যে ক্রিকেটারদের উপর চাপ প্রয়োগ করে এটা স্বীকার করে না। রউফকে টেস্ট খেলানোর কোনো যুক্তিই নেই। ঠিক কোন পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে তাঁকে দলে নেওয়া যেত?’

হারিস নিজেও এই যুক্তিটাই নির্বাচককদের দিয়েছেন। নিজের সামর্থ্যের কথা বিবেচনা করে আপাতত সাদা বলের ক্রিকেটেই বেশি মন দিতে চান হারিস। তবে, এই ইস্যুর জের ধরে বিগ ব্যাশে খেলার সুযোগ হারাতে পারেন এই পেসার। কারণ, নির্বাচকদের মতের বিরুদ্ধে যাওয়ায় তাঁকে এনওসি বা অনাপত্তিপত্র না-ও দিতে পারে পিসিবি।

পিসিবির অন্দরমহল মনে করে, এই বিগ ব্যাশ খেলার জন্যই টেস্টকে ‘না’ বলেছেন হারিস। কারণ, ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে বিগ ব্যাশ শেষ হবে চার ফেব্রুয়ারি। আর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাকিস্তান দল এই সময়ই টেস্ট সিরিজ খেলবে। কোনো ভাবেই বিগ ব্যাশ মিস করতে চাননি হারিস।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...