কোথাও কি একটা ভুল করে ফেলল ভারত? সে ভুলটা হয়ে যেতে পারে গুরুতর। অভিষেক শর্মাকে বাদ রেখে বিশ্বকাপের স্কোয়াড ঘোষণা করাটা হতে পারে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। এমন মারকুটে একজন তরুণের দারুণ ফর্মের ফায়দাই যে তুলতে হয়ত ব্যর্থ হলো ভারত।
ভারতের ১৫ সদস্যের বিশ্বকাপ দলে নেই কোন ব্যাকআপ ওপেনার। যদিও সাঞ্জু স্যামসন ওপেনিংয়ে খেলতে পারেন। তবুও নির্দিষ্ট সেই রোলের জন্যে কাওকে নেয়নি ভারত। তরুণ যশ্বসী জয়সওয়ালের সাথে অধিনায়ক রোহিত শর্মা থাকছেন ইনিংস উদ্বোধনের মূল দায়িত্বে। অন্তত ব্যাকআপ হিসেবে অভিষেক সুযোগ পেতেই পারতেন।
মাত্র ২৪ বছর বয়স অভিষেকের। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) মঞ্চে তিনি রীতিমত তাণ্ডব চালাচ্ছেন। বেদম প্রহারে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছেন প্রতিপক্ষের বোলারদের। প্রায় ২০০ স্ট্রাইকরেটে তিনি রান করে যাচ্ছেন নিয়ম মাফিক। এমনকি ৪০০ এর বেশি রান করা ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট তার।
এই মৌসুম জুড়ে ২০৯.৪১ স্ট্রাইকরেটে রান করে যাচ্ছেন অভিষেক। ছক্কা হাঁকানোর দিক থেকেও রয়েছেন সবার উপরের দিকে। লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ অবধি তিনি ছক্কা হাকিয়েছেন ৪১টি। চারের থেকেও বেশি ছক্কা হাকিয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ৩৫ চারের মার এসেছে তার ব্যাট থেকে।
ধারাবাহিকভাবে বড় রানও অভিষেক করেছেন। ৩টি অর্ধশতকের সাথে ৪৬৭ রান যুক্ত করেছেন নিজের নামের পাশে। গড় তার ৩৮.৯১। এমন একজন ব্যাটারকে রীতিমত উপেক্ষা করে দল ঘোষণা করেছেন ভারত দল। তাতে করে বরং অবিচার করা হয় অভিষেকের সাথে।
দারুণ ছন্দে রয়েছেন তিনি। আত্মবিশ্বাসেও টইটুম্বুর। আগ্রাসনের উদাহরণ তিনি পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে শেষ ম্যাচেও রেখেছেন। প্রায় ২৩৬ স্ট্রাইকরেটে ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছেন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে। তার এমন মারকাটারি ব্যাটিংয়ের কল্যাণেই ২১৫ রানের টার্গেটেও জয় পেয়েছে হায়দ্রাবাদ। এই কাজ অবশ্য নিয়ম করেই করে যাচ্ছেন অভিষেক।
কিন্তু তাকে বিশ্বকাপের দলে নেওয়ার সাহসটুকু দেখায়নি ভারতীয় নির্বাচকরা। এর পেছনে কারণ হিসেবে নিশ্চয়ই অভিজ্ঞতার অভাব সামনে এসেছে। সেদিকটা আমলে নিলে হয়ত ২০০৭ বিশ্বকাপ জেতাই হতো না ভারতের। অভিজ্ঞতাই যে শেষ কথা নয়, তা তো সেবার মহেন্দ্র সিং ধোনিই প্রমাণ করেছিলেন। তারুণ্য নির্ভর একটা দল নিয়ে জিতেছিলেন শিরোপা।
অভিষেক রয়েছেন সম্ভবত নিজের ক্যারিয়ারের সেরা ছন্দে। এমন সময়ে একজন খেলোয়াড়কে ব্যবহার করাটা হতে পারতে বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু সেদিকে ভারত দলের ভ্রুক্ষেপ যেন নেই। সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি অবশ্য। ওদিকে যে অস্ট্রেলিয়া জেক ফ্রেসার ম্যাকগার্ককে ট্র্যাভিলিং রিজার্ভ হিসেবে দলের সাথে নিয়ে যাবে বিশ্বকাপে। তেমন একটি সুযোগ অভিষেকও নিশ্চয়ই প্রত্যাশা করেন।