তবুও ওয়েকআপ কল!

শুরুর বিপর্যয় সামলে আফিফ-মিরাজ বীরত্বে প্রায় হাত থেকে ফসকে যাওয়া ম্যাচটা আজ জিতে নিল বাংলাদেশ। এই অনবদ্য জয়ের রেশে অবশ্য স্বস্তিতে ভেসে যাওয়ার সুযোগ নেই। আজকের ব্যাটিং ইনিংসের ওই শুরুর ফেইজটাকে একটা ওয়েক আপ কল হিসেবে ধরা যায়। তাই পরশুদিন ফজল হক ফারুকীকে নিয়ে আরো ভালো হোমওয়ার্ক করে মাঠে নামাটা জরুরি।

ফজল হক ফারুকী দুর্দান্ত বল করেছেন। প্রথম স্পেলটা এক কথায় অসাধারণ ছিল। এখান থেকে ম্যাচ জিততে না পারাটা খুবই দু:খজনক ঘটনা আফগানদের জন্য।

যেমনটা বলছিলাম, ফারুকী বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত। কিন্তু আনপ্লেয়েবল কি ছিলেন? ডিসেন্ট অ্যানাফ পেইসে বলকে ছোটো-ছোটো বাঁক খাইয়েছিলেন। কিন্তু খুব বেশি কি স্যুইং পেয়েছিলেন?

আমার মতে দুইটা প্রশ্নের উত্তরই হবে না-বাচক।

বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের প্রথম পাঁচ ওভারে একাই চারটা উইকেট তুলে নিয়ে তুমুল বিপর্যয় সৃষ্টি করেন বাঁহাতি সিমার ফজল হক ফারুকী। নতুন বলকে শুরু থেকেই ছোটোখাটো বাঁক খাওয়াতে থাকেন তিনি। যদিও ওই চার উইকেটের মূলত দুইটা এসেছে তাঁর বাঁক খাওয়ানো ডেলিভারি থেকে৷

দুই ডানহাতি লিটন ও রাব্বির ক্ষেত্রে ওভার দ্য উইকেট থেকে বলকে হালকা বাঁক খাইয়ে ভেতরে ঢুকান ফারুকী। তাতে ব্যাট ও প্যাডের বিরাট ফাঁকা দিয়ে বল উইকেটরক্ষকের দস্তানায় জমার আগে লিটনের ব্যাটের কানা ঘেষে যায়। আর রাব্বির বেলায় বলটা একদম অফস্ট্যাম্প উপড়ে ফেলে মাটি থেকে।

অন্যদিকে তামিম ও মুশফিকের উইকেটের সময় দুইটা ডেলিভারিই একদম সোজা হয়ে আসছিল। তামিম সামনের পায়ে ডিফেন্স করতে গিয়ে বলের লাইনেই যেতে পারেননি, ফলে বল আঘাত হানে প্যাডে। আর মুশফিকও সোজা বলটার লাইনে যেতে পারেননি সময়মতো। তাঁর ব্যাট হিট করে প্যাডে এবং ততক্ষণে বল প্যাডে লেগে যায়। ফলাফল দুজনেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন।

আসলে ফজল হক ফারুকী আমাদের ব্যাটসম্যানদের জন্য পুরাই চমক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন আজ। ওই ভরদুপুরে চট্টগ্রামের উইকেটে বল মুভ করবে বলে ন্যূনতম ধারণাও কারো ছিল বলে মনে হয় না। সারাজীবন এখানে হাঁটু সমান উচ্চতার সোজা বলগুলা খেলেই অভ্যস্ত তাঁরা। তাই হঠাৎ করে ডিসেন্ট পেসের সাথে হালকা বাঁক খাওয়া বলগুলায় শুরুতেই ভড়কে যান বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।

যা-ই হোক। শুরুর বিপর্যয় সামলে আফিফ-মিরাজ বীরত্বে প্রায় হাত থেকে ফসকে যাওয়া ম্যাচটা আজ জিতে নিল বাংলাদেশ। এই অনবদ্য জয়ের রেশে অবশ্য স্বস্তিতে ভেসে যাওয়ার সুযোগ নেই। আজকের ব্যাটিং ইনিংসের ওই শুরুর ফেইজটাকে একটা ওয়েক আপ কল হিসেবে ধরা যায়। তাই পরশুদিন ফজল হক ফারুকীকে নিয়ে আরো ভালো হোমওয়ার্ক করে মাঠে নামাটা জরুরি।

আর দিনশেষে আমার কাছে এই ম্যাচের সারমর্ম হয়ে থাকবে ফারুকীর বিধ্বংসী প্রথম স্পেল এবং আফিফ-মিরাজের নয়ন জুড়ানো, মন ভরানো ও ম্যাচ জেতানো জুটিটা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...