এক জুটির রেকর্ড গাঁথা

একটা স্মরণীয় দিন, একটা রেকর্ডের দিন। অন্তত বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে কথাগুলো সত্য। শুধু বাংলাদেশ নয় ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে কথাগুলো একেবারে ষোল আনা সত্য। রেকর্ডের বুকে কাঁটাছেড়া হলো। নতুন দুই নাম লেখা হলো। একজন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও আরেকজন মেহেদী হাসান মিরাজ নিজেদের নামটি নতুন এক রেকর্ডের পাশে লেখালেন ইতিহাসের পাতায়।

একটা স্মরণীয় দিন, একটা রেকর্ডের দিন। অন্তত বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে কথাগুলো সত্য। শুধু বাংলাদেশ নয় ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে কথাগুলো একেবারে ষোল আনা সত্য। রেকর্ডের বুকে কাঁটাছেড়া হলো। নতুন দুই নাম লেখা হলো। একজন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও আরেকজন মেহেদী হাসান মিরাজ নিজেদের নামটি নতুন এক রেকর্ডের পাশে লেখালেন ইতিহাসের পাতায়।

বিশ্বক্রিকেটের ইতিহাসে আফিফ-মিরাজের আজকের জুটি সপ্তম উইকেটে দ্বিতীয় সেরা। তবে পরিস্থিতি বিচারে কোন রকমের দ্বিধাদ্বন্দ ছাড়াই ১৭৪ রানের অপরাজিত জুঁটি সেরাদের সেরা। ৪৭ রানে নেই দলের ছয় উইকেট। ঘরের মাঠে বছরের প্রথম ওয়ানডে। এমন বিপর্যস্ত এক পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে বাংলাদেশ এটা বোধ করি কল্পনাতেও ভাবেনি।

ওয়ানডে বিশ্বকাপের সুপার লিগের দ্বিতীয় স্থানে বসে থাকা দল নিশ্চয়ই এমন লজ্জাজনক এক পরিস্থিতির চিন্তা ঘুনাক্ষরেও করবে না সেটাই স্বাভাবিক। যা কল্পনায় আসেনা তা বাস্তবে হয়। দলের তারকা সব ক্রিকেটার প্যাভিলনে। জয় না হোক দায়িত্বটা ছিলো সম্মানজনক এক পর্যায় নিয়ে যাওয়া। দূর্বার তারুণ্য কি আর তাতে ক্ষান্ত হয়! একেবারে জয়ের বন্দরে নিয়ে গিয়ে তবেই হলেন শান্ত।

না আফিফ এবং মিরাজ বাইশ গজে খুব যে অশান্ত ছিলেন, মারকাটারি ব্যাটিং করছিলেন তা নয়। দেখে-শুনে, ধীরেসুস্থে ব্যাটিং করেছেন। তবে নিজেদের মধ্যে পাল্লা দিয়ে ব্যাটিং করেছেন। তবে তা ছিলো স্বাস্থ্যকর। এই স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা বয়ে নিয়ে এসেছে সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের সেরা পার্টনারশীপ। এর আগের পার্টনারশীপের মালিক ছিলেন ইমরুল কায়েস এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। সেই জুঁটি করেছিলো ১২৭ রান। তা অবশ্য বছর চারেক আগে। তবে সে ম্যাচেও এতটা বাজে পরিস্থিতি ছিলো না বাংলাদেশের।

আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সপ্তম উইকেটের সেরা পার্টনারশীপটা নিজেদের দখলে রেখেছে ইংল্যান্ডের দুই ক্রিকেটার জশ বাটলার ও আদিল রশিদ। তাঁদেরকেও এমন কঠিন পরিস্থিতিতে ব্যাটিং করতে হয়নি। বরং তাঁদের ১৭৭ রানের জুঁটি ইংল্যান্ডকে ৪০০ রান ছাড়াতে সহয়তা করেছিলো।

আফিফ-মিরাজ জুঁটি ছিলো স্বীকৃত শেষ ব্যাটিং জুঁটি। ৪৫ রানে ছয় উইকেট নেই। লক্ষ্য তখন ১৭১ রান দূরে। নিশ্চিতরুপে সবাই হয়ত ধরে নিয়েছিলো শেষ। বছরের প্রথম ওয়ানডে শুরু হবে হার দিয়ে। কিন্তু না আফিফ আর মিরাজ ছিলেন বদ্ধপরিকর। দলকে আজ কিছু একটা করে দেখাবেনই তাঁরা। তাইতো দুইজনে মিলে খেলে ফেললেন ২২৫ বল। এই ২২৫ বল খেলে আফিফ-মিরাজের করা এই জুটি শুধু যে সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের সেরা এবং বিশ্বক্রিকেটে দ্বিতীয় সেরা তা কিন্তু নয়।

আফিফ-মিরাজের এই ১৭৪* রানের জুঁটি বাংলাদেশের যে কোন উইকেটে অষ্টম সেরা। এসব কিছুই হয়ত পরিসংখ্যান। এসব কিছুর হিসেব-নিকেশে হয়ত আফিফ আর মিরাজের পার্টনারশীপ কোন কোন মানদন্ডে সেরা কোনটায় দ্বিতীয় সেরা। তবে খেলা দেখা সকলে হয়ত এটাই বিশ্বাস করবেন যে এটা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা একটি পার্টনারশীপ।

আফিফ, মিরাজ শুধু বিপর্যয় সামলে ক্ষান্ত হননি। তাঁরা দলকে লজ্জা থেকে বাঁচিয়েছেন, তাঁরা দলকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দিয়েছেন। ভক্ত-সমর্থকরা হয়ত বহুকাল মনে রাখবেন এই পার্টনারশীপ আর রেকর্ড বইয়ে চিরকাল রয়ে যাবে তাঁদের এই কীর্তি।

এমন দূর্দান্ত এক পার্টনারশীপ উচ্চস্বরে গাইছে নতুন দিনের জয়গান। এই পার্টনারশীপ প্রমাণ করছে মিরাজ শুধুই একজন ব্যাটার নন। এই পার্টনারশীপ প্রমাণ করছে আফিফ ফিনিশান নন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...