দলের অনুভূতির ওজন বাড়ান

মাহমুদউল্লাহর কণ্ঠে ক্ষোভের আগুন দেখে ভালো লেগেছে। সত্যি ভালো লেগেছে। ক্ষোভ থেকে ভালো কিছু হলে ক্ষোভই ভালো।

আরও ভালো, যদি অভিমান না হয়ে এটা সত্যিকারের ক্ষোভ হয়। অভিমান হলে বিপদ। কারণ, আসল লড়াই এখনও শুরুই হয়নি। তার আগেই অনেক চড়াই-উৎরাই হয়ে গেছে।

আশা করি এটা সত্যিকারের ক্ষোভ এবং এই তাড়না টিকে থাকবে। এই ধরনের টুর্নামেন্টে ভালো করতে অনেক সময় ভেতরে বারুদ লাগে। এই বারুদ আশা করি এখনই মিইয়ে যাবে না।

তিনি বলেছেন, সমালোচনায় তাদের আপত্তি নেই এবং খারাপ খেললে সমালোচনা আশাও করেন। কিন্তু দলকে ছোট করায় তাদের খারাপ লেগেছে। তাদের পরিবার আছে, বাচ্চা আছে। এজন্যই তাদের সবার খারাপ লেগেছে।

এটাও আসলে পুরনো ইস্যু। সমালোচনা তো এখানে কখনোই খুব একটা ক্রিকেটীয় বা সাধারণ সমালোচনায় সীমাবদ্ধ থাকে না। ব্যক্তি আক্রমণ চলে, পরিবারকে জড়িয়ে হিউমিলিয়েট করা হয়, ট্রল স্রেফ ট্রলের পর্যায়ে থাকে না। তাদের সামাজিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খারাপ লাগা স্বাভাবিক।

যদিও ক্ষোভ দেখালেও এসব কমবে না। বরং বাড়ছে এবং বাড়বে। মিডিয়ার কাজ মিডিয়া করবে। একেক মিডিয়ার ধরন একেকরকম। তারা তাদের মতো থাকবে। সোশাল মিডিয়ায় ভালো-খারাপ-বাজে-পরিশীলিত-অশ্লীল সবকিছু চলতেই থাকবে। ভক্ত-সমর্থক-ক্রিকেট অনুসারীদেরও কন্ট্রোল করা যাবে না, বোর্ড প্রধানের কাজ বোর্ড প্রধান করবেন (মূলত তিনি কোচ, নির্বাচক, বিশ্লেষকের কাজ করেন) এসব বদলাবে না।

কাজেই, ক্ষোভটাও যেন না বদলায়। ভেতরের আগুন যেন জ্বলতে থাকে। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল নানা কারণে সমালোচনার শিকার হয়েছিল। এমনকি, নিজেদের বোর্ডের সঙ্গেও ঝামেলা হয়েছিল। এসবে ক্রিকেটাররা তেতে উঠেছিল, ক্ষুব্ধ হয়ে কিছু করে দেখাতে এককাট্টা ও মরিয়া হয়ে উঠেছিল এবং ট্রফি জিতেই সেই মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে তারা জিতেছে।

আমরাও এরকম কোনো জয় দেখতে চাই। বাংলাদেশের এই দলটা বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজ্ঞ টি-টোয়েন্টি দল। ট্রফি না হোক, অন্তত সেমি-ফাইনাল খেলে দেখিয়ে দিক।

প্রথম রাউন্ডের শেষ ম্যাচে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স হয়েছে। সহযোগী দেশের সঙ্গে যে দাপট থাকা উচিত, তা দেখা গেছে। সেই দাপট তো তিন ম্যাচেই থাকার কথা। কিন্তু গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে বাংলাদেশ পরের ধাপে উঠেছে। এটাও তো সত্যি!

তো ক্ষোভের আগুন জ্বলতে থাকুক। বড় বড় প্রতিপক্ষ পুড়তে থাকুক। তাহলে অধিনায়কের কথা, দলের অনুভূতির ওজন বাড়বে। তারা কূর্নিশ পাবেন। নইলে কিছুই বদলাবে না। কিছুই না।

– ফেসবুক থেকে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link