অধিনায়ক রিয়াদের কাছে খোলা চিঠি

এমন একটা প্রশ্নের আপনি উত্তর দিলেন, ‘না, কোন চিন্তার কারণ নাই’ (এক্স্যাক্ট কোট)। আপনার প্রতি এবং আমাদের দলের প্রতি সম্পূর্ণ সম্মান দিয়েই বলি আপনাদের ছোট করা অন্ধ ব্যাশিংয়ের প্রতি আমরা সহানুভূতিশীল, ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু এমন পয়েন্ট আউট করা টানা ৪টা ম্যাচ সিচুয়েশনের সমস্যাকে যদি আপনি বলেন, ‘চিন্তার কারণ নাই।’ তাঁর মানে আপনি ‘সমালোচনা’ও নিতে পারছেন না! সেটা শুধু মুখেই বলছেন! অথবা কোনটা সমস্যা বুঝছেন না!

প্রিয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ,

এই লেখা আপনার কাছে পৌঁছানোর কথা না। তবু বলি! একজন সাধারণ দর্শক হিসেবে পাপুয়া নিউগিনি ম্যাচে জয়ের পরে আপনার সংবাদ সম্মেলনটা দেখেছি। এবং পুরো সংবাদ সম্মেলনেই আপনার প্রতি এবং পুরো বাংলাদেশ দলের প্রতি সহানুভূতি পোষণ করেছি। আপনি বলেছেন আপনাদের সাথে পুরো বাংলাদেশ খেলে। আমরাও তাই মনে করি। তাই আপনি যে কথাগুলো বলেছেন তাঁর সাথে আমি মোটামুটি একমত একটা ব্যাপার ছাড়া। সেটা পরে বলছি।

আপনি বলেছেন সবদিক দিয়ে অনেক চাপ এসেছে, আপনাদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে- সেগুলো আপনাদের ক্ষুব্ধ করেছে! করারই কথা। আপনারা আপনাদের সবটা দিয়ে চেষ্টা করছেন। তারপরেও আমরা আপনাদের চেষ্টা নিয়ে প্রশ্ন তুলছি! সেজন্য আপনার কাছে ক্ষমা চাই।

লিটন, মুশফিক, বা মুস্তাফিজের ফর্ম প্রসঙ্গে আপনি বলেছেন যে তাঁদের সামর্থ্য নিয়ে দলের মধ্যে কোন সন্দেহ নাই। তাই তাঁদের ব্যাক করেছেন। একজন অধিনায়ক হিসেবে আপনার সেটাই করার কথা। একজন আদর্শ অধিনায়ক হিসেবে খেলোয়াড়দের পাশে থাকবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

তবে আপনার বক্তব্যে বারেবার আপনি নিজেই বলেছেন যে, ‘সমালোচনা তো হবেই। কিন্তু সেটা যেন যৌক্তিক হয়। ছোট করা না হয়!’ এই জায়গাটাতেই আপনাকে একটা কথা বলার ছিল।

সংবাদ সম্মেলনের একদম দ্বিতীয় শেষ প্রশ্নটি শুনে খুবই যৌক্তিক এবং ম্যাচ বিশ্লেষণধর্মী মনে হয়েছিলো। আপনি দেখুন সেই প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে আমরা শুরুতে ভালো বোলিং করছি। তারপর শেষে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলছি। শ্রীলংকার সাথে প্রস্তুতি ম্যাচে ওদের ৭৪/৬ উইকেট ফেলে দিয়েও হারলাম, তারপর স্কটল্যান্ডের ছিল ৫৩/৬, সেখান থেকে ১৪০ করে ফেললো। আমরা ম্যাচ হারলাম। ওমানের সাথেও শেষ কয়েক ওভারে আমরা অল আউট করতে পারলাম না।

আজকে পাপুয়া নিউগিনির ২৯/৭ উইকেট পড়ার পরে তাঁরা ৯৭ করে ফেললো! অর্থাৎ গত ৪ টি ম্যাচের প্রত্যেকটাতেই বিপক্ষ দল শেষের ৩-৪ উইকেটে ৭০-৯০ রান করে ফেলছে! এইটা কোন অন্ধ সমালোচনা না, একদম যৌক্তিক ম্যাচ সিচুয়েশনে দেখা প্রব্লেমকে পয়েন্ট আউট করা। এই জিনিস এক ম্যাচ হলে বুঝতাম যে হয়ে গেছে। কিন্তু পরপর ৪ ম্যাচে একই ঘটনা ঘটার মানে হলো আমরা বিপক্ষের টেলকে ছেঁটে ফেলতে পারছি না।

আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘এটা কোন চিন্তার কারণ কিনা, বিশেষ করে বড় দলের বিপক্ষে?’

এমন একটা প্রশ্নের আপনি উত্তর দিলেন, ‘না, কোন চিন্তার কারণ নাই’ (এক্স্যাক্ট কোট)। আপনার প্রতি এবং আমাদের দলের প্রতি সম্পূর্ণ সম্মান দিয়েই বলি আপনাদের ছোট করা অন্ধ ব্যাশিংয়ের প্রতি আমরা সহানুভূতিশীল, ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু এমন পয়েন্ট আউট করা টানা ৪টা ম্যাচ সিচুয়েশনের সমস্যাকে যদি আপনি বলেন, ‘চিন্তার কারণ নাই।’ তাঁর মানে আপনি ‘সমালোচনা’ও নিতে পারছেন না! সেটা শুধু মুখেই বলছেন! অথবা কোনটা সমস্যা বুঝছেন না!

হয়তো আপনি সত্যিই ভাবেন যে, প্রতিপক্ষ দল শেষ ৩-৪ উইকেটে ৭০-৮০ রান করে ফেলবে  এইটা কোন চিন্তার ব্যাপার না। বড় দলের বিপক্ষে হয়তো শেষে গিয়ে আরও বেশী ইন্টেন্সিটি থাকবে। টিম ম্যানেজম্যান্ট হয়তো আমাদের সাধারণ সমর্থকদের চেয়ে বেটার চিন্তাই করে! তারপরেও আমাদের কাছে টেল এন্ডের এতো রান করাটাকে চিন্তার কারণ বলেই মনে হয়। ব্যাপারটার একটু ভেবে দেইখেন, প্লিজ! সব সমালোচনা অন্ধ হয় না, কিছু সমালোচনা আসলেই সমস্যাটাকে পয়েন্ট আউট করে।

টপ ১২ এর মূল পর্বের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা! সুপারম্যান সাকিব আল হাসানের মতোই বলতে চাই, প্রথম থেকেই সেমি ফাইনাল খেলার যে স্বপ্ন দেখে আমরা বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছি সেটা সত্যি হোক ইন-শা-আল্লাহ। আর সেমি ফাইনালে গেলে তো নক আউট পর্ব, যেকোন কিছুই হতে পারে ইন-শা-আল্লাহ!

আপনি যেমন করে বলেছেন, আমরা আপনাদের পাশেই থাকবো।

বিনীত,

সাধারণ দর্শক

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...