বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে অ্যাডাম জাম্পা ছিলেন ছায়া হয়ে; অস্ট্রেলিয়াও দুইটি ম্যাচেই হেরেছে প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। কিন্তু এরপরই যেন ঐশ্বরিক শক্তি ভর করেছে জাম্পার ওপর, একের পর এক ম্যাচ নিজের জাদুতে বাজিমাত করছেন তিনি। তাঁর কবজির মোচড়েই ম্যাচের গতিপথ বদলে যাচ্ছে অজিদের দিকে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচেও উজ্জ্বল পারফরম্যান্স এসেছে এই লেগস্পিনারের কাছ থেকে। ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে উইকেট তুলেছেন; বিনিময়ে খরচ করেছেন ৩২ রান। ছয়ের ওপর রান রেটে ব্যাটিং করা টাইগাররা তাঁর প্রতি ওভার মাত্র তিন রানের একটু বেশি করতে পেরেছে। পুরো ইনিংস জুড়ে কতটা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন তিনি, সেটা তাই স্পষ্টই।
প্রথম স্পেলে দারুণ ছন্দে থাকা লিটন দাসকে আউট করেছিলেন; সাত ওভার বোলিং করে রান দিয়েছিলেন কেবল ২১! ডেথ ওভারে বোলিং করতে এসে মুশফিকুর রহিমের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট পুরেছেন আর তিন ওভারে দিয়েছেন ১১ রান। জাম্পার এমন বোলিংয়েই মূলত শেষদিকে টাইগারদের রানের গতি কমে গিয়েছিল।
আর এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে দিলশান মাধুশাঙ্কাকে টপকে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের তালিকায় এক নম্বরে উঠে এসেছেন এই অজি স্পিনার। তাঁর ঝুলিতে এখন রয়েছে ২২টি উইকেট, অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে আর কোন স্পিনারই পারেননি এক বিশ্বকাপ আসরে এতবার ব্যাটারদের প্যাভিলিয়নে পাঠাতে। এর আগে ২০০৭ আসরে ২১ উইকেট পেয়েছিলেন ব্র্যাড হগ।
শুধু তাই নয়, স্পিনার হিসেবে এক বিশ্বকাপ আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের কীর্তি কড়া নাড়ছে এই ডানহাতির দুয়ারে। কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরন ২০০৭ সালেই ২৩টি উইকেট নিয়েছিলেন; মাত্র দুইটি উইকেট পেলেই তাই লঙ্কান তারকাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবেন তিনি। কি জানি, সেমিফাইনালের মত মঞ্চেই হয়তো সর্বকালের সেরাদের কাতারে নিয়ে নিজেকে নিয়ে যাবেন জাম্পা।
গত বিশ্বকাপেই মিচেল স্টার্ক অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে তান্ডব চালিয়েছেন। এবার তিনি চিরচেনা রূপে নেই, তবে অস্ট্রেলিয়া সেই অভাব খুব একটা অনুভব করছে না কেননা দলে একজন অ্যাডাম জাম্পা আছেন। মাঝের ওভারগুলোতে উইকেট তুলে দলকে এগিয়ে দিতে পারেন তিনি আবার ডেথ ওভারেও প্রতিপক্ষের রানের চাকায় লাগাম দিতে জানেন – সবমিলিয়ে অজি বোলিং লাইনআপের বড় ভরসা এখন এই তারকা।