ঈদের চাঁদ নেমে এসেছে আফগানিস্তানের আকাশে, ইতিহাস রচিত হয়েছে বটে – প্রথমবারের মত দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর স্বাদ পেলো তাঁরা। ফজল হক ফারুকী এবং আল্লাহ গজনফরের দুর্ধর্ষ বোলিংয়ের পর ব্যাটারদের দৃঢ়তায় ক্রিকেট বিশ্বকে চমক উপহার দিলো দলটি। অন্যদিকে তাঁদের বিপক্ষে প্রথমবার যেকোনও সংস্করণে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে নেমে রীতিমতো দু:স্বপ্ন দেখলো প্রোটিয়ারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনিং জুটির বয়স তখন ১৭ রান, তখনি নড়ে উঠে পুরো শারজাহ। না, কোন ভূমিকম্প বা টর্নেডো নয় বরং আফগান বোলাররা ঝড় তুলেছিলেন বাইশ গজে। স্রেফ ঝড় বললে অবশ্য কম বলা হবে, বলতে হবে আরো বিধ্বংসী কোন বিশেষণ – কারণটা স্পষ্ট হবে স্কোরবোর্ডে তাকালেই, ১৭/০ থেকে মুহূর্তের মাঝে ৩৬/৭ এ রূপ নেয় প্রোটিয়া।
ফারুকী কিংবা গজানফার নিজেও বোধহয় বুঝতে পারেননি ঠিক কি করেছেন তাঁরা। শুরুটা করেছিলেন ফারুকী; প্রথমেই রিজা হেন্ড্রিকসকে বোল্ড করেন তিনি, এরপর অধিনায়ক এইডেন মার্করামকেও একই পরিণতি বরণ করতে বাধ্য করেন। টনি ডি জর্জি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু এই ব্যাটারও থামেন তাঁর ডেলিভারিতে।
এই বাঁ-হাতি পেসার খানিকটা বিশ্রাম নিতেই তান্ডব শুরু করেন গাজানফার। ট্রিস্টান স্টাবস, জেসন স্মিথ আর কাইল ভেরেইনকে চোখের পলকে প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি। পাওয়ার প্লের শেষ বলে ফেহলুকওয়ে রান আউটে ফাঁদে পড়লে লজ্জা আরো ঘনীভূত হয়।
লজ্জার তীব্রতা আরো বাড়তে পারতো, তবে উইয়ান মুল্ডার একপ্রান্ত আগলে রাখেন। বর্ন ফর্টউইনের সঙ্গে গড়েন ৩৯ রানের জুটি, তাতেই অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক রেকর্ডের হাত থেকে রক্ষা পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষপর্যন্ত তাঁর ৫২ রানের কল্যাণে ১০৬ রানের মামুলি সংগ্রহ জমা হয় স্কোরবোর্ডে।
জয়ের জন্য সেটা তাই যথেষ্ট হয়নি, আফগানরা অবশ্য টপ অর্ডারের উইকেট হারিয়ে বসেছিল দ্রুতই, তবে আজমতউল্লাহ আর গুলবাদিন নাইবের দৃঢ়তায় সব শঙ্কা কাটিয়ে তাঁরা বিজয় কেতন উড়িয়েছে নীল আকাশে।
ওয়ানডে বিশ্বকাপ কিংবা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুগ্ধ করার মত পারফরম্যান্স দেখিয়েছে আফগানিস্তান। সেটারই ধারাবাহিকতা দেখা গেলো এবারের দ্বিপাক্ষিক সিরিজে – যেকেউ চাইলেই এখন আফগানদের ক্রিকেটের নতুন পরাশক্তি ভাবতে পারেন।