একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি বাংলাদেশ জিতেছে পুরোদস্তুর দাপট দেখিয়ে। যদিও আফগানিস্তান দল নিয়ে নানা লোকের নানা মত। তবে সেসবকে পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশ যে পূর্ণ আধিপত্যই বিস্তার করে খেলেছে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ঠিক সেই দাপটই সম্ভবত বাংলাদেশ দেখাতে চাইবে ওয়ানডে সিরিজেও। ওয়ানডে সুপার লিগের শীর্ষ চারে থেকেই তো বাংলাদেশ নিশ্চিত করেছে ২০২৩ বিশ্বকাপের টিকিট। এর আগে আফগানদের বিপক্ষে নিজেদের সামর্থ প্রমাণের মিশনেই তো নামবে বাংলাদেশ।
কিন্তু এবারে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে আফগানদের স্পিন বোলিং অ্যাটাক। বিশ্রাম কাটিয়ে রশিদ খান ফিরেছেন দলে। অন্যদিকে ওয়ানডে দলে থাকা মুজিব-উর রহমান ও অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবী তো থাকছেনই। এই তিনজনে মিলে একটানা অনুশীলন চালিয়ে গেছেন সাগরিকায়।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ওয়ানডে সিরিজকে সামনে রেখে প্রথম দিনের অনুশীলনে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে হাসমতউল্লাহ শাহীদির দল। প্রথম ঘন্টায় বল হাতে লম্বা সময় ধরে অনুশীলন করে গেছেন নবী, রশিদ ও মুজিবরা। নেট অনুশীলনেও বেশ তটস্থ থাকতে দেখা গেছে আফগান স্পিন আক্রমণের এই তিন কাণ্ডারিকে। নিজেদের পছন্দসই জায়গাতে বল ফেলতে না পেরে যেমন আফসোস করেছেন। ঠিক তেমনি ভাল বলে মৃদু উল্লাসও করেছেন রশিদ খানরা।
বাংলাদেশের বিপক্ষে এই তিন স্পিনারের রেকর্ডও বেশ ভাল। বিশেষ করে রশিদ খানের। তিনি এখন অবধি বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছেন ৯টি। এর মধ্যে ২২.৮৬ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ১৫ টি। অন্যদিকে ১১ ম্যাচ খেলা নবীর উইকেট সংখ্যা ১৪টি। এদিক থেকে খানিকটা পিছিয়ে রয়েছেন মুজিব। ৬ ম্যাচে তার উইকেট ৭টি।
তবে রান খরচের দিক থেকে মুজিব বেশ কিপটেই বলা চলে। ৩.৮১ ইকোনমি রেটে তিনি রান করতে দিয়েছেন টাইগার ব্যাটারদের। বাকিরাও রয়েছেন মুজিবের আশেপাশে। সুতরাং বাংলাদেশের ব্যাটারদের কুপকাত করতে এই তিন স্পিনারের উপরই ভরসা করতে চাইবে আফগান কোচ জনাথন ট্রট।
এছাড়াও বিগ ব্যাশে আলো ছড়ানো তরুণ লেগ স্পিনার ইজহারুল হককে প্রথমবারের মত ডাকা হয়েছে জাতীয় দলে। তাকেও নিশ্চয়ই বাজিয়ে দেখতে চাইবে আফগানদের টিম ম্যানেজমেন্ট।
তবে আফগানিস্তান কেবল স্পিন বোলারদের উপরই ছেড়ে দিচ্ছে না সব দায়িত্ব। পেসারদের তৈরি করা হচ্ছে ৫ জুলাইয়ের প্রথম ওয়ানডের জন্যে। তাইতো ভিন্নধর্মী এক অনুশীলনের ছবি ফুটে উঠেছে আফগানদের শিবিরে।
স্ট্যাম্পের ঠিক উপরিভাগে রাখা হয়েছে একটা মার্কার। সেটায় আঘাত করাই ছিল আফগান পেসারদের চ্যালেঞ্জ। সেই মার্কার কখনো মিডল স্ট্যাম্পের উপরে জায়গা করে নিয়েছে তো কখনো আবার অফ স্ট্যাম্পের। বেশ ক’বার ফজল হক ফারুকিরা সেটায় আঘাত করে বুনো উল্লাস করেছেন।
এই অনুশীলনে বোলারদের লাইন এবং লেন্থ আরও খানিকটা আঁটসাঁট করা সম্ভব। তাছাড়া লাগাতার ঠিক স্ট্যাম্পের উপরিভাগকে তাক করে ছোড়া বলগুলো নিশ্চিতরুপেই ব্যাটারদের অস্বস্তিতে ফেলে দেবে। তাছাড়া মাঝেমধ্যে ব্যাটের খোঁচায় সেই বল গিয়ে জমা পড়তে পারে উইকেট রক্ষক রহমানুল্লাহ গুরবাজের দস্তানায়। সেই পরিকল্পনা থেকেই সম্ভবত এমন অনুশীলন।
বাংলাদেশের ব্যাটারদের নাভিশ্বাস তুলে দেওয়ার সবরকম প্রস্তুতিই নিয়ে রাখছে আফগানিস্তানের বোলিং ইউনিট। অন্তত রানের লাগামটা টেনে ধরতেই সকল পরিকল্পনা সাজাচ্ছে আফগানরা। নিজেদের হাতে থাকা সকল অস্ত্রই তৈরি রাখছে শাহীদিরা।