তিন নম্বরেই সেরা আফিফ

চট্টগ্রামের ধ্রুবতারা হয়ে এমন সময়ে উইকেটে এলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। তাসকিনের ভয় ধরানো স্পেলে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেন। কোনো তাড়াহুড়ো নেই। ক্রিকেটের বেসিক শটে শুধু এগিয়ে যাওয়া- আফিফের এমন পন্থা চট্টগ্রাম শিবিরেও একটু একটু করে স্বস্তি ফেরাতে শুরু করল। 

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের জন্য লক্ষ্যটা খুব বেশি ছিল না। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এ বিশ্বায়নে ১৫৯ রানের পাড়ি দেওয়া যায় অনায়াসেই। কিন্তু ইনিংসের শুরুতে তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে আল আমিন যেভাবে বিধ্বস্ত হলেন, তাতে চট্টগ্রামের আকাশের আশঙ্কার এক মেঘই জমতে শুরু করেছিল। একের পর এক তাসকিনের গোলায় সেটা বরং আরো ঘনীভূত হয়েছিল।

এমন পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে প্রয়োজন শুধু উইকেটে সময় পার করা। চট্টগ্রামের ধ্রুবতারা হয়ে এমন সময়ে উইকেটে এলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। তাসকিনের ভয় ধরানো স্পেলে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেন। কোনো তাড়াহুড়ো নেই। ক্রিকেটের বেসিক শটে শুধু এগিয়ে যাওয়া- আফিফের এমন পন্থা চট্টগ্রাম শিবিরেও একটু একটু করে স্বস্তি ফেরাতে শুরু করল।

কভার ড্রাইভে আগে থেকেই কেতাদুরস্ত আফিফ। কিন্তু ঢাকার বিপক্ষে আফিফ তাঁর দৃষ্টিনন্দন শটের পসরা সাজালেন পুল শট দিয়ে। এই এক শটেই তিনি বের করেছেন ৩ টা চার আর ১ টা ছক্কা। পুল শট ছাড়াও আফিফ খেলেছেন তাঁর প্রিয় শট কভার ড্রাইভও। সব মিলিয়ে ৭ চার আর ১ ছক্কায় সাজিয়েছেন ৬৯ রানের একটি ইনিংস। আর আফিফের এই ইনিংসই চট্টগ্রামকে পৌঁছে দেয় জয়ের বন্দরে।

পুরো ইনিংস জুড়ে বিশেষ কিছু করেননি। কিন্তু উইকেটে যখন এলেন তখন দলের যা চাওয়া ছিল সেটিই তিনি পূরণ করেছেন। অহেতুক শট খেলেননি। প্রায় বলই ঠিকঠাক রিড করতে পেরেছেন। নিয়ন্ত্রিত সব শট খেলেছেন। একদম সলিড ইনিংসের সংজ্ঞা যেমন হওয়া উচিৎ ঠিক তেমনটাই আজকের ম্যাচে খেলেছেন আফিফ।

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলে আফিফকে নিয়মিত মুখ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বিশ্বকাপ থেকে ঠিক ফর্মের সুতোটা যেন ঠিকঠাকভাবে ধরতে পারছিলেন না। অফ ফর্মের বৃত্তে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। সেখান থেকে বের হওয়াটা বেশ জরুরি ছিল তাঁর জন্য। যদিও লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগে দুর্দান্ত এক ফিফটি দিয়ে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আর সেই ফর্মটা টেনে লম্বা করার কাজটা করলেন এ ইনিংস দিয়ে।

৫২ বলে অপরাজিত ৬৯ রানের ইনিংস খেললেন। দলের যে সময়ে তাঁকে খুব দরকার ছিল সেই মোক্ষম সময়েই তিনি আবর্তিত হলেন। দলের জয়ে রাখলেন অবদান। অবশ্য পাশে পেয়েছিলেন আফগানিস্তানের রাসুলিকে। তাদের নিরবচ্ছিন্ন ১০৩ রানের জুটিতেই ১৪ বল হাতে রেখেই ম্যাচটি জিতে নেয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

আফিফ জয়ের দ্বার খুলে দিয়েছিলেন। আর রাসুলি তার শেষটা করেছিলেন। ৩ চার আর ৪ ছক্কায় তিনিও পেয়েছেন ফিফটি। ৩৩ বলে ৫৬ রান করা রাসুলির ব্যাট থেকেই চট্টগ্রাম তাদের জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়।

চলতি আসরে দ্বিতীয়বারের মত তিনে ব্যাট করার সুযোগ পেলেন আফিফ। আর তাতেই সফল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। সফল আফিফ নিজেও। আর এই দু’টো ম্যাচই কেবল জিতেছে চট্টগ্রাম। ফলে, সাফল্যের এই সহজ ফর্মুলাটা নিশ্চয়ই টিম ম্যানেজমেন্ট মাথায় রাখবে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...