শুক্রবার মুম্বাইয়ে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের হয়ে এই সিরিজে খেলছেন ভারতীয় বংশদ্ভূত আজাজ প্যাটেল। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড যখন মুম্বাইয়ের মাটিতে টেস্ট খেলে আজাজ প্যাটেল তখন মাত্র ১ মাসের শিশু! আট বছর বয়সে মুম্বাই ছেড়ে পরিবারের সাথে পাড়ি জমান নিউজিল্যান্ডে। নিজ জন্মভূমিতেই খেলতে এসেছেন ২৫ বছর পর! বলতে গেলে ঘরের মাটিতেই শুক্রবার নিজ জন্মভূমির বিপক্ষে খেলতে যাচ্ছেন তিনি।
মুম্বাইয়ে এসে পুরোনো স্মৃতি যেনো দাপড়ে বেড়াচ্ছে প্যাটেলের মনে। এজাজ ও রাচিন রবীন্দ্রর ব্যাটিং দৃঢ়তায় কানপুরে সিরিজের প্রথম টেস্টে সেশনে ড্র ছিনিয়ে নেয় ব্ল্যাকক্যাপসরা। সেখান থেকেই প্যাটেলের বর্তমান লক্ষ্য মুম্বাই টেস্ট জয়। মুম্বাইয়ে টেস্ট খেলা নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে প্যাটেল বলেন, ‘এটা এমন একটা ব্যাপার যে আমি নিশ্চিত ভবিষ্যতে এটা সবসময়ই আমি মনে রাখতে চাইবো।’
মুম্বাইয়ে খেলার ব্যাপারে বেশ উদগ্রীব এজাজ। জানালেন আইপিএলের জন্য পূর্বেও এখানে খেলেছেন তিনি। প্যাটেল বলেন, ‘যখন থেকে আমরা মুম্বাইয়ে নেমেছি, আমি মুম্বাই টেস্ট নিয়েই ভাবছি। এখানে আসাটা সত্যি দারুন। এর আগেও পরিবার সহ ছুটি কাটাতে এসেছি। এখনের ব্যাপারটা ভিন্ন, কারণ এখন ক্রিকেট খেলতে এসেছি। আইপিএলের জন্য আমি ওয়াংখেড়েতে এসেছি বেশ কয়েকবার। মিচ ম্যাকলেনাগানকে ধন্যবাদ জানাতে চাই এর জন্য। আমি এখানে বেশ কয়েকবার বোলিংও করেছি। এখানে থাকাটা নস্টালজিক একটা ব্যাপার। আমি যখনি সুযোগ পাবো আবার আসবো পরিবার সহ।’
প্যাটেলের মতে তার বাবা-মার জন্য এটি বিশেষ কিছুই। ওয়াংখেড়ের স্ট্যান্ড থেকে ছেলেকে দেখতে দেখাকে বিশেষ মূহুর্ত হিসেবে বলেন প্যাটেল। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য ভিন্ন ভিন্ন দিনে খেলা দেখতে আসবে। এটা খুব ভালো যে টেস্ট ম্যাচে যে যেদিন ফ্রি থাকে সেদিন আসতে পারে।’
পরিবারের সামনে খেলাটা চাপের কিনা এমন প্রশ্নে প্যাটেল বলেন, ‘আমি এটা নিয়ে ভাবছি না। এটা একটা উত্তেজনা। আমার অনেক স্মৃতি আছে এখানে। প্রথমবার মুম্বাই ছাড়ার পর আবার মুম্বাইয়ে আসা। আমার জন্য এটা খুব বিশেষ একটা মূহুর্ত হবে।’
কানপুরে প্রথম টেস্টের শেষ সেশনে ৮.৪ ওভার টিকে থাকতে হলো নিউজিল্যান্ডকে ড্রয়ের জন্য। অপরদিকে ভারতের দরকার ছিলো মাত্র ১ উইকেট। সেখানে ৫২ বলের মাঝে ২৩ বল ডিফেন্স করেন প্যাটেল। বাকি কাজটা করেন রাচিন রবীন্দ্র। সেই মূহুর্ত নিয়ে প্যাটেল বলেন, ‘রবীন্দ্র বেশ শান্তই ছিলো তখন। সে নিজের কাঁধেই গুরুদায়িত্বটা নিয়েছিলো। আমরা কথা বলছিলাম বল যতটা সোজা ব্যাটে খেলা যায়। স্টাম্পের বাইরের বল না খেলা, প্যাডে আসা বলে যাতে আউট না হই এসবই ছিলো গুরুত্বপূর্ণ।’
সত্যিই রাচিন রবীন্দ্রকে সাথে নিয়ে অতিমানবীয় এক লড়াই লড়েছেন প্যাটেল। তিনি বলেন, ‘আমি এটা নিয়ে খুব ভাবিনি সত্যি। আমি নিশ্চিত ছিলাম না এখান থেকে কোনো ফলাফল আসবে। রবীন্দ্র কাজটা সহজ করে দিয়েছে। বিশ্বের অন্যতম সেরা একটা দলের বিপক্ষে খেলা, ড্র এর জন্য ফাইট করা এবং আমি মনে এটা সত্যি একটা অসাধারণ গল্প। সেখানে টিকে থাকাটা আমাদের জন্য খুব বিশেষ একটা মুহূর্ত।’