গত এক বছরে তিন ফরম্যাট মিলিয়েই বাংলাদেশের একটা পেস বোলিং লাইন আপ গড়ে উঠেছে। সেখানে মুস্তাফিজের মত অভিজ্ঞরা যেমন আছেন, আবার ফিরে আসার গল্প লিখা তাসকিনদের সাথে যোগ হয়েছে শরিফুল, এবাদতদের মত নাম। সবমিলিয়ে বাংলাদেশ একটা পেস ব্যাটারি গুছিয়ে ফেলতে পেরেছে। এখন সময় শত মাইল বেগে ছুটে চলা এবং দায়িত্বটা কাঁধে তুলে নিচ্ছেন অ্যালান ডোনাল্ড।
এই এক ঝাঁক পেসার তৈরি হওয়ার পিছনে বড় অবদান ছিল বাংলাদেশের সর্বশেষ পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের। তবে নানা জটিলতায় তাঁর সাথে আর বাংলাদেশের চুক্তির মেয়াদ বাড়েনি। আর সেই খালি জায়গাটা পূরণ করতেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই দলের সাথে যোগ দিচ্ছেন কিংবদন্তি পেসার অ্যালান ডোনাল্ড।
পেস বোলিং ইতিহাসের বড় নাম তিনি। ফলে তরুণ এক ঝাঁক পেসারকে নিয়ে তিনি আকাশ ছোঁবেন এমনটাই প্রত্যাশা। এর আগেও কোর্টনি ওয়ালশের মত কিংবদন্তি পেসার বাংলাদেশের পেসারদের নিয়ে কাজ করেছেন। তবে আশানরূপ ফল আসেনি সেই সময়। তাই অ্যালান ডোনাল্ড বাংলাদেশকে সাফল্যটা এনে দিতে পারবেন কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
অ্যালান ডোনাল্ড নিজেও মনে করেন মাঠে তাঁরা কত বড় ক্রিকেটার ছিলেন সেটা এখন আর বিষয় না। এই তরুণ পেসারদের কতটা দিতে পারছেন সেটাই বলে দিবে তিনি কত বড় কোচ। ক্রিকেট খেলা আর কোচিং করানোটায় যে বড় একটা পার্থক্য আছে। এখানে এই তরুণ পেসারদের থেকে সেরাটা বের করে আনার ব্যাপার আছে।
আর এই বিষয়েই ক্রিকবাজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যালান ডোনাল্ড বলেন, ‘হ্যাঁ অনেক প্রত্যাশা থাকে যখন আপনি সাবেক ক্রিকেটারদের আনবেন যারা কিনা সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলেছে এবং দারুণ সাফল্য পেয়েছে। তবে একজন কোচ হিসেবে বাইশ গজে কুড়ানো সেই নামটার আসলে কোন কাজে আসবে না এখানে। এখন ক্রিকেটারদের যা দরকার সেটা কতটা দিতে পারছি সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ওদের দেখার জন্য এবং একসাথে বসার জন্য মুখিয়ে আছি।’
বাংলাদেশ দল দুই টেস্ট ও তিন ওয়ানডে ম্যাচ খেলার জন্য ইতোমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। এছাড়া টেস্ট দল প্রায় দুই সপ্তাহ ক্যাম্প করবে কেপ টাউনে গ্যারি কার্স্টেনের একাডেমিতে। আর সেখান থেকেই নিজের কাজ শুরু করবেন অ্যালান ডোনাল্ড। আর তাঁর আগে নিজের প্রস্তুতিটাও সেরে ফেলছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পেসারদের নিয়ে খানিকটা হোমওয়ার্ক করেছি। তাসকিন, এবাদতদের মত পেসারদের দেখতে দারুণ লাগে। এছাড়া আমার মনে হয় শরিফুল দারুণ সম্ভাবনাময়। লম্বা বাঁহাতি এই পেসারের ভালো পেস আছে। তাঁকে দূর থেকে দেখেছি, মাঠে অসাধারণ শরীরি ভাষা।অথচ ছেলেটার বোধহয় মাত্র ২২ বছর বয়স।’
ওদিকে টেস্ট ক্রিকেটে মুস্তাফিজকে পাচ্ছেন না এই কোচ। সাদা পোশাকের ক্রিকেটটা খেলেননা বাঁহাতি এই পেসার। আর টেস্টে ফিজকে না পাওয়া নিয়েও আক্ষেপ ঝড়েছে এই কোচে কণ্ঠে। অ্যালান ডোনাল্ড বলেন, ‘মুস্তাফিজ এখন আর টেস্ট ক্রিকেট খেলছেনা এটা বেশ দুঃখজনকই বটে। আমার মনে হয় দক্ষিণ আফ্রিকার মত কন্ডিশনে সে অনেক কিছু দিতে পারতো। তবে সবমিলিয়ে এই পেস লাইন আপটা দারুণ। আমি ওদের সাথে দ্রুতই বসে এক অপরের সাথে পরিচিত হতে চাই এবং ওদের সেরাটা বের করে আনতে চাই।’