মার্কিন বিস্ময়

বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট। বিভিন্ন দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ না পাওয়া ক্রিকেটারদের নিয়ে দল ভারী করছে দেশটি। অলিম্পিক সহ বিশ্বকাপে খেলতে মরিয়া দলটি। আর তাই বিভিন্ন পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই ক্রিকেটের উন্নয়নে সেরা চেষ্টা করছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। এর মাঝেই টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডকে ২৬ রানে হারিয়ে প্রথমবার কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে জয় তুলে নিলো আমেরিকা।

সিরিজ শুরুর আগেই করোনার হানায় ছিটকে যায় বেশ কিছু তারকা ক্রিকেটার। এই খেলোয়াড়রা হলেন দলের সহ-অধিনায়ক অ্যারন জোন্স, দলের প্রধান স্কোরার স্টিভেন টেলর, জাসকরণ মালহোত্রা এবং করিমা গোর। পেস বিভাগের রাস্টি থেরন নেই ইনজুরিতে! সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগেই ব্যাকফুটে ছিলো আমেরিকা।

ফ্লোরিডায় দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামে আমেরিকা। ব্যারি ম্যাকার্থির দাপটে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে আমেরিকা। মাত্র ১৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিধ্বস্থ আমেরিকার ব্যাটিং শিবির! টপ অর্ডারের চার ব্যাটারই ততক্ষণে প্যাভিলিয়নে। পঞ্চম উইকেটে সুশান্ত মদানি ও গজানন্দ সিং দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলেন।

দু’জনে মিলে পঞ্চম উইকেটে ৬৯ বলে গড়েন ১১০ রানের অনবদ্য এক জুটি! ব্যাকফুটে থাকা আমেরিকা এই দুজনের ব্যাটে চড়েই আবারও ম্যাচে ফিরেন। দুই ব্যাটারই তুলে নেন ফিফটি। এরপর দলীয় ১২৬ রানে ৪২ বলে ৩ চার ও ৫ ছক্কায় ৬৫ রানে ফিরেন গজানন্দ। এরপর মার্টি কাইনের ১৫ বলে ৩ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৯ রানের ক্যামিওতে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৮ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করে আমেরিকা। সুশান্ত মদানি ৩৯ বলে করেন ৫০ রান। আইরিশদের পক্ষে ব্যারি ম্যাকার্থি ৩০ রানে শিকার করেন ৪ উইকেট।

১৮৯ রানের বড় লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ফিরেন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবির্নি। একপ্রান্তে পল স্টার্লিং ব্যাট হাতে ঝড় তুললেও দলীয় ৪৩ রানে ১৫ বলে ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংস শেষে আউট হন স্টার্লিং। একপ্রান্তে লরকান টাকার ও কার্টিস ক্যাম্পফার ভীত গড়লেও বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে পারছিলেন না দুই ব্যাটার। এরপর কার্টিস ক্যাম্পফার ফিরেন ব্যক্তিগত ১৭ রানে। ১৩ বলে ২ ছক্কায় ১৯ রানের ক্যামিওতে শেন গ্যাটকেটে ফিরলে ৯৭ রানে ৪ উইকেট হারায় আইরিশরা।

শেষ ৪৯ বলে দরকার ছিলো ৯২ রান, হাতে তখনো ৬ উইকেট। লরকান টাকার অনেকটাই ধীরে খেলছিলেন। আরেকপ্রান্তে নিল রক, উইলিয়াম ম্যাক্লিন্টনরা ছিলেন আসা যাওয়ার মিছিলে। ম্যাক্লিনটনের ১৪ বলে ৯ যেনো আইরিশদের জয়ের আশা নিভিয়ে দেয়। একপ্রান্তে টাকার ফিফটি তুলে নিলেও শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬২ রান করে আয়ারল্যান্ড। টাকার ৪৯ বলে ৫৭ রানে অপরাজিত থাকেন। আমেরিকার পক্ষে আলি খান, নিসর্গ প্যাটেল ও সৌরভ নেত্রাভালকার নেন ২ টি করে উইকেট।

২৬ রানের জয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম কোনো টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে জয় পেলো আমেরিকা। আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‍্যাংকিংয়ে আমেরিকার অবস্থান ৩০! প্রথম কোনো দল র‍্যাঙ্কিংয়ে এতো পেছনে থেকেও টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে জয়ের রেকর্ড গড়লো। চলতি বছর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে র‍্যাঙ্কিংয়ের ৩২ নম্বর দল মালয়েশিয়া এক ম্যাচে টাই করে। তবে র‍্যাংকিংয়ে এতো পেছনে থেকে জয়ের রেকর্ডটা এবারই প্রথম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link