এক ঝাঁক উপেক্ষানামা

ভারতে ক্রিকেট প্রতিভার যেমন অভাব নেই, আক্ষেপেরও কমতি নেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে অজস্র রান আর ভুড়ি ভুড়ি উইকেট, ছিলেন সম্ভাবনাময় তারকাও। তবুও জাতীয় দলে খেলার সুযোগ হয়নি এমন অনেক খেলোয়াড়ই আছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের প্রতিভার সবটা জানান দিলেও চিরকাল ছিলেন কারো না কারো ছত্রছায়ায়! কিংবা ছিলেন নির্বাচকদের চোখে উপেক্ষিত।

ভারতে ক্রিকেট প্রতিভার যেমন অভাব নেই, আক্ষেপেরও কমতি নেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে অজস্র রান আর ভুড়ি ভুড়ি উইকেট, ছিলেন সম্ভাবনাময় তারকাও। তবুও জাতীয় দলে খেলার সুযোগ হয়নি এমন অনেক খেলোয়াড়ই আছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের প্রতিভার সবটা জানান দিলেও চিরকাল ছিলেন কারো না কারো ছত্রছায়ায়! কিংবা ছিলেন নির্বাচকদের চোখে উপেক্ষিত।

ভারতীয় ক্রিকেটে এমনই পাঁচ নাম আছে যারা কিনা ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকু ঢেলে দিয়েও কখনো জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়াতে পারেননি। তাঁদেরকে নিয়েই আমাদের এবারের আয়োজন।

  • অমল মজুমদার

ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম দূর্ভাগা খেলোয়াড় যদি বলি তালিকার উপরের দিকেই অমল মজুমদারের নাম আসবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করার পরেও কখনোই ভারতের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি তিনি। হ্যারিস শিল্ড ট্রফিতে শচীন টেন্ডুলকার এবং বিনোদ কাম্বলির সেই ৬৬১ রানের জুটির কথা নিশ্চয়ই সবার জানা।

এর পরের উইকেটেই ব্যাট করার কথা ছিল অমল মজুমদারের। দীর্ঘদিন আশায় থাকলেও জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ মেলেনি তাঁর। ১৭১ ম্যাচে ৩০ সেঞ্চুরিতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১১,৬৭১ রান করেছেন অমল মজুমদার।

  • মিঠুন মানহাস

রঞ্জি ট্রফিতে দিল্লির সেরা পারফর্মারদের একজন মিঠুন মানহাস। ২০০৮ সালে দিল্লির পক্ষে রঞ্জি ট্রফি জেতেন তিনি। দিল্লির সাবেক এই অধিনায়ক রঞ্জি ট্রফিতে ৮ হাজারেরও বেশি রান সংগ্রহ করেছেন। শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলি এবং রাহুল দ্রাবিড়দের সময়ে জন্ম নেওয়ায় প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও জাতীয় দলে জায়গা করতে পারেননি তিনি।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) পুনে ওয়ারিয়র্স ইন্ডিয়া ও চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলেছেন তিনি। তাঁর যে প্রতিভা ছিল নি:সন্দেহে ভারতের হয়ে খেলার দাবিদার তিনি। তবে ভুল সময়ে জন্ম নেওয়ায় সেই আক্ষেপটা রয়ে গেল মিথুনের। ২০১৯ সালে আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

  • রাজিন্দর গোয়েল

রঞ্জি ট্রফির ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী ব্যক্তি হলেন রাজিন্দর গোয়েল। রঞ্জি ট্রফিতে মোট ৬৩৭ টি উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এছাড়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৭৫০ উইকেট শিকার করা রাজিন্দার ক্যারিয়ারে কখনোই সুযোগ পাননি জাতীয় দলের হয়ে খেলার।

তাঁকে ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে সেরা খেলোয়াড়েরদের একজন মানা হয়। এমনকি বলা হয়ে থাকে ভুল যুগে জন্ম নেওয়ায় রাজিন্দার ঘরোয়া ক্রিকেটের কিংবদন্তি হিসেবেই রয়ে যান।

  • পদ্মকর শিভালকার

রঞ্জি ট্রফিতে প্রতিপক্ষের বোলারদের জন্য আতংকের কারণ ছিলেন পদ্মকর শিভালকার। মুম্বাইয়ের হয়ে ২৫ এরও বেশি মৌসুম ধরে খেলেছেন তিনি! ১২৪ ম্যাচে ১৯.৬৯ গড়ে ৫৮৯ উইকেট শিকার করেছেন এই বোলার। এমন চোখ ধাঁধানো পরিসংখ্যানের পরেও কখনোই ভারতের হয়ে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাননি তিনি।

ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে দূর্ভাগা স্পিনারদের একজন হিসেবেই থাকবেন পদ্মাকর শিভালকার। এতো দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরেও নজর কাড়তে পারেননি নির্বাচকদের। এই আক্ষেপটা হয়তো সারাজীবন বয়ে বেড়াবেন শিভালকার।

  • শ্রীধরন শরৎ

তামিলনাড়ুর হয়ে খেলা অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান শ্রীধরন শরৎ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩৯ ম্যাচে ৫১.১৬ গড়ে ৮৭০০ রান সংগ্রহ করেছেন শরৎ। তিনিই একমাত্র রঞ্জি খেলোয়াড় যিনি ১০০ এর বেশি ম্যাচ খেলেও গড় ৫০ এর বেশি ধরে রেখেছেন!

১৯৯৩ সালে এক মোটরসাইকেল দূর্ঘটনার পর আশা থাকলেও ভারতের হয়ে আর খেলার সুযোগ হয়নি তাঁর। রঞ্জি ট্রফির ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচনা করা হয় শ্রীধরন শরৎকে। তাঁর দুর্ভাগ্য যে তিনি জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...