ইনিংসের ১৪ তম ওভারে তাইজুল ইসলামকে মারলেন তিন ছয়। তাইজুলের আগের ওভারেও মেরেছিলেন দুইটা ছয়। সব মিলিয়ে শোয়েব মালিক আজ যে পাঁচটা ছয় মেরেছেন তাঁর সবগুলোই এসেছে তাইজুলের ওভারে। স্টেপ আউট করে বিশাল বিশাল ছয় মেরেছেন এই স্পিনারকে। রংপুরের আরেকটি বিপর্যয়ের দিনে আবারো হাল ধরলেন পাকিস্তানের এই অলরাউন্ডার।
রংপুরের ব্যাটিং লাইন আপের সবচেয়ে বড় শক্তি শোয়েব মালিকই। টপ অর্ডার ব্যর্থতা সামাল দিচ্ছেন এই অলরাউন্ডার। শুরুতে সময় নিয়ে দলকে টেনে তুলেন। তারপর শুরু হয় শোয়েব মালিকের ঝড়। আজও তাঁর ব্যতিক্রম হয়নি। তবে আজ ঝড়টা সবচেয়ে বেশি গিয়েছে তাইজুলের উপর দিয়েই। শোয়েব মালিক যে তাঁর পাঁচটা ছয়ই হাঁকিয়েছেন এই বোলারকে।
ওদিকে রংপুর রাইডার্সের চিত্রটা রোজকার মতই। টপ অর্ডারে শেখ মেহেদী, মোহাম্মদ নাঈম কিংবা পারভেজ হোসেন ইমন কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেনি। পাওয়ার প্লেতেও রানে চাক এগিয়েছে থমকে থমকে। ইনিংসের নবম ওভারে মাত্র ৪৭ রানে তিন উইকেট হারিয়ে রংপুর তখন খাদের কিনারায়। সেখান থেকে শোয়েব মালিকই তো বের করে আনতে পারেন রংপুরকে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রায় ৫০০ টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। ব্যাট হাতে করেছেন ১২ হাজারেরও বেশি রান। এখন পর্যন্ত কোন সেঞ্চুরির দেখা পাননি তবে হাফ সেঞ্চুরি আছে ৭৪ টি। প্রায় ৩৬ ব্যাটিং গড়ের শোয়েব মালিকের অভিজ্ঞতাই তখন রংপুর রাইডার্সের ভরসা।
শুরুর ধাক্কাটা সামাল দিলেন শোয়েব মালিক। একটু একটু করে এগোতে থাকা রংপুরের রানের চাকা। তবে ম্যাচ জিততে হলে বড় স্কোর করা চাই। এবার সেই পথেই হাঁটলেন শোয়েব মালিক। সঙ্গে পেলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে। দুজনে মিলে গড়লেন এবারের বিপিএলের দ্রুততম শতরানের জুটি।
ওমরজাই থেমে গিয়েছেন ৪৪ রান করে। তবে দলকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছেন শোয়েব মালিক। ধীরে ধীরে হাত খুলেছেন নিজেরও। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বোলারদের তুলোধুনো করেছেন।
তাঁর ব্যাটিং ঝড়ে শেষ দশ ওভারে রংপুর করেছে একশোর বেশি রান। নিজের অর্ধশতক পূরণ করেছিলেন মাত্র ২৯ বলেই। তবে এরপর যোগ করেছেন আরো ২৫ রান। শেষ পর্যন্ত ৪৫ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন। তাঁর এই ইনিংসে রংপুর করতে পেরেছে ১৭৯ রান।
শোয়েব মালিক তাঁর এই ইনিংস সাজিয়েছেন ৫ চার ও ৫ ছয় দিয়ে। ব্যাটিং করেছেন ১৬৬.৬৬ স্ট্রাইকরেটে। ওদিকে এই আসরে এটি ছিল মালিকের দ্বিতীয় অর্ধশতক। এর আগে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষেও ৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন মালিক। এছাড়া কুমিল্লার সাথে ৩৩, খুলনার সাথে ৪৪ রানের ইনিংসগুলোও আছে এই ব্যাটের ঝুলিতে। তবে আজ ছাড়িয়ে গিয়েছেন সেসব ইনিংসকে।
খেলেছেন একেবারে পরিপূর্ণ ৭৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। তাঁর এমন ইনিংসেই মিরপুরের উইকেটে ১৮০ রানের টার্গেট দিতে পেরেছে রংপুর। ব্যাট হাতে মালিকের এমন ছুটে চলা বারবার এগিয়ে দিচ্ছে রংপুরকে। আজও যেমন একেবারে খাদের কিনারায় পড়ে যায় রংপুর ফিরে এলো দারুণভাবে।