আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ স্ক্যান্ডাল

আর্জন্টিনার শিরোপা খরা মিটেছিল গত বছরেই। কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে প্রায় ২৭ বছর পর আবারো কোনো শিরোপার মুখ দেখেছিল আলবিসেলেস্তারা। কিন্তু বিশ্বকাপ খরার সময়টা হু হু করে বাড়ছিল।

আর্জন্টিনার শিরোপা খরা মিটেছিল গত বছরেই। কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে প্রায় ২৭ বছর পর আবারো কোনো শিরোপার মুখ দেখেছিল আলবিসেলেস্তারা। কিন্তু বিশ্বকাপ খরার সময়টা হু হু করে বাড়ছিল।

এক যুগ, দুই যুগ পেরিয়ে, তিন যুগ অতিক্রান্ত হয়েছিল। অবশেষে সেই প্রতিক্ষারও অবসান ঘটলো। কাতার বিশ্বকাপ নিজেদের করে নিল আর্জেন্টিনা। ১৯৭৮, ১৯৮৬ এর পর তাই দেশটিতে দীর্ঘ ৩৬ বছর পর চলছে বিশ্বকাপ জয়ের জয়োল্লাস।

তবে বিশ্বকাপ জয় উদযাপনের এ সময়কালে তির্যক মন্তব্য করে হঠাতই আলোচনায় আসলেন মেক্সিকান ক্রীড়া বিশেষজ্ঞ আলভারো মোরালেস। তাঁর দৃষ্টিতে আর্জেন্টিনার কোনো বিশ্বকাপ জয়ই বিতর্কমুক্ত নয়। এমনকি আর্জেন্টিনাকে প্রতারক আর ডোপিংয়ের আশ্রয়দাতা বলেও আখ্যায়িত করেন তিনি। ইএসপিএনের এক ফুটবল শো-তে তিনি বলেন, ‘আর্জেন্টিনার তিনটি বিশ্বকাপই স্ক্যান্ডালে ভরা। এটা ফুটবলের জন্য লজ্জাদায়ক।’

তিনি আর্জেন্টিনার আগের দুই বিশ্বকাপ জয়ের ইতিহাসে টেনে ধরে বলেন, ‘১৯৭৮ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা কী করেছিল তা কারোর অজানা নয়। পেরুকে লোভ দেখিয়ে তারা ম্যাচটি জিতেছিল। এভাবে ফুটবলের মধ্যে সরকারের হস্তক্ষেপ আমি আর ইতিহাসে দেখি নি। এটা রীতিমত প্রতারণার আশ্রয় ছিল।’ হ্যাঁ, ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয় নিয়ে সত্যিই বিতর্ক আছে। বলা হয়, সেবার বিশ্বকাপের আয়োজন খোদ আর্জেন্টিনায় হওয়ায় সামরিক সরকার বিশ্বকাপ পাওয়ার জন্য মাঠের বাইরে চূড়ান্ত নিচেই নেমেছিল।

১৯৮৬ বিশ্বকাপও বিতর্কিত ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সেবার তাদের ফুটবল ঈশ্বর যা করেছিল তা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ম্যারাডোনা হাত দিয়ে গোল দিয়েছিল, আর সেই ম্যাচটা তারা জিতেছিল ঐ ভাবেই। এরপর আর কী বলার থাকতে পারে।’ ১৯৮৬ সালের কোয়ার্টার ফাইনালে খোদ ম্যারাডোনা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গোল করেছিলেন হাত দিয়ে, যেটা পরে ‘হ্যান্ড অব গড’ নামে স্বীকৃতি পায়।

৩৬ বছর বিশ্বকাপ পেয়েছে আর্জেন্টিনা। আর সেটি আসলো লিওনেল মেসির হাত ধরে। এরপর থেকেই মেসিকে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দেওয়া শুরু হয়েছে। স্বয়ং ফিফাই তাঁকে সেরার স্বীকৃতি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে। কিন্তু আলভারো মোরালেসের আপত্তি রয়েছে, মেসিকে সেরার স্বীকৃতি দিতে। তিনি বলেন, ‘মেসি একটা বিশ্বকাপ জিতেছে। ওদিকে পেলে তিন তিনটা বিশ্বকাপ নিয়ে বসে আছে। মেসির মাত্র একটি বিশ্ব টাইটেল তো ব্যর্থতা এক ধরনের।’

১৯৭৮, ১৯৮৬  বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনার এ বিশ্বকাপ জয় নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক আছে বলে মনে করেন আলভারো মোরালেস। তিনি এক প্রকার বিতর্ককে উষ্কে দিয়েই বলেন, ‘আমি রেফারিকে অভিনন্দন জানাই, তিনি আর্জেন্টিনাকে পেনাল্টি দিয়ে তাদের বিশ্বকাপ জেতানো চেষ্টা করেছেন। ফাইনালের মতো ম্যাচে এমন সিদ্ধান্ত খুবই বাজে। আর মার্কাস আকুনাকে কেন লাল কার্ড দেওয়া হয়নি। পেনাল্টি শ্যুটআউটের সময় এমি মার্টিনেজ যা করেছে তার জন্য তো তাঁকে লাল কার্ড দেওয়া উচিৎ ছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘আর মেসির ঐ গোলটা কেন বাতিল করা হলো না? মেসিরা তো তখন মাঠের বাইরে চলে গিয়েছিল। মূল কথা হলো, তারা আর্জেন্টিনাকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখতে চেয়েছিল।’

আর্জেন্টিনাকে নিয়ে অবশ্য বরাবরই নেতিবাচক মন্তব্য করে এসেছেন আলভারো মোরালেস। এর আগে মেসিকে নিয়েও এক সময় তিনি মক করেছিলেন। তাই মোরালেসের চক্ষুশূল হওয়াটা আলবিসেলেস্তাদের জন্য নতুন কিছু নয়। কারন তিনি সব সময়ই আর্জেন্টাইনদের শূলে চড়ান। কথিত আছে, মোরালেস নাকি কোনো আর্জন্টাইনদের সাথে বন্ধুত্বও করেন না!

 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...