১১ বছর পর আইসিসি ট্রফি আর ১৩ বছর পর বিশ্বকাপ জিতলো ভারত। এমন অর্জনের দিনে ভক্ত-সমর্থকদের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে জাসপ্রিত বুমরাহ, হার্দিক পান্ডিয়াদের নাম; ফাইনালে ৭৬ রানের ইনিংস খেলা বিরাট কোহলিও আছেন আলোচনায়। তবে তাঁদের সমান অবদান রেখেও খানিকটা ছায়ায় আছেন আর্শদীপ সিং, তাঁকে নিয়ে উন্মাদনা নেই খুব একটা।
যদিও ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সই উপহার দিয়েছেন তিনি; সবচেয়ে চাপের মুহূর্তে সেরাটাই দিয়েছেন। বুমরাহর মতই অধিনায়ক যখন যা চেয়েছে তাঁর কাছে সেটাই করে দিয়েছেন বটে। বিশেষ করে, উনিশতম ওভারে এই পেসারের দুর্ধর্ষ বোলিংয়ের কারণেই ম্যাচে একক আধিপত্য ফিরে পেয়েছিল টিম ইন্ডিয়া।
নতুন বল হাতে নিয়েই ঝলক দেখাতে শুরু করেছিলেন তিনি। নিজের প্রথম ওভারে ব্যাটারদের কঠিন পরীক্ষা নেয়ার পর দ্বিতীয় ওভারে এইডেন মার্করামের উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। তাঁর অ্যাঙ্গেল করে আসা ডেলিভারিতে যেভাবে বোকা বনে গিয়েছিলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক সেটা দেখার মতই ছিল।
একপ্রান্ত আগলে রাখা কুইন্টন ডি কক যখন জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন দলকে, তখন আরো একবার হন্তারক রূপে আবির্ভূত হন এই বাঁ-হাতি। সেট ব্যাটারকে কুলদীপ যাদবের ক্যাচ বানিয়ে উদযাপনের সুযোগ করে দেন তিনি। এরপর আর্শদীপ ডেথে যা করেছেন সেটা অনেকদিন মনে রাখার মতই, স্রেফ চার রান দিয়েছিলেন এক ওভারে।
সবমিলিয়ে এদিন চার ওভার বল করেছেন তিনি; খরচ করেছেন মাত্র বিশ রান, বিনিময়ে ঝুলিতে পুরেছেন দুইটি মহাগুরুত্বপূর্ণ উইকেট। মোহাম্মদ সিরাজকে একাদশের বাইরে রেখে তাঁকে খেলানোর যে-ই সিদ্ধান্ত টিম ম্যানেজম্যান্ট নিয়েছিল, সেটা দারুণভাবে ফলপ্রসূ প্রমাণ হলো।
পুরো বিশ্বকাপে সতেরো উইকেট তুলে নিয়ে উইকেটশিকারীর তালিকায় যৌথভাবে শীর্ষে আছেন এই তারকা। মোহাম্মদ শামি ফিট থাকলে হয়তো বিশ্বকাপ স্কোয়াডেই থাকতেন না তিনি, অথচ ভাগ্যের ছোঁয়ায় এখন তিনি ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক বনে গিয়েছেন। দেশটির ক্রিকেট ইতিহাসে অমরত্ব বোধহয় পেয়েই গেলেন তিনি।