টানা তিন ম্যাচে পরাজয়। সমালোচনার স্রোতে ভেসে যেতে যেকোনো দলের জন্য এমন হতশ্রী ফলাফলই যথেষ্ট। পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও হয়েছে তাই। পাকিস্তানের পরাজয়, আবারো কাঠগড়ায় বাবর আজম। আর সমালোচনাটা এতই যে তাতে হয়তো অধিনায়কত্বও হারাতে পারেন বাবর।
অবশ্য বাবরের নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা, নতুন কোনো ঘটনা নয়। দলীয় ব্যর্থতার দায়টা প্রায় সময়ই তাঁর উপরে এসে পড়ে। তবে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দলের এমন ব্যর্থতার নেপথ্যে বাবরকে নিয়ে সমালোচনার জায়গাটা সত্যিকার অর্থেই রয়েছে।
বাবরের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তাই এবারও৷ অধিনায়ক হিসেবে তাঁর কৌশল যে আক্রমণাত্মক নয়, এমন অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের সাবেক গ্রেটরা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ হারের ‘এ স্পোর্টস’ নামের এক পাকিস্তানি চ্যানেলের অনুষ্ঠান ‘দ্য প্যাভিলিয়ন’-এ উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম, সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক, মঈন খান এবং শোয়েব মালিক। আর সেখানেই এ ৪ বিশেষজ্ঞ বাবরের নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা করেন।
সময়ের সঙ্গে বাবর নেতৃত্বে যে নতুন কিছু যোগ করতে পারছেন, সে মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, ‘গত চার বছরে চারটা বড় টুর্নামেন্টে অধিনায়কত্ব করেছে সে। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাবর নতুন কিছু শিখছে। ওর ফিল্ডিং প্লেসমেন্ট ভাল না। কখন কাকে বোলিং দিতে হবে, সেটাও সে বুঝে উঠতে পারে না৷ কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে তো এটুকু কৌশল আপনার থাকতে হবে।’
এমনিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে কখনোই প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি পাকিস্তান। ৮ উইকেট হাতে শেষ ৩০ বলে ৩০ রান আফগানদের জন্য সহজসাধ্যই ছিল। কিন্তু সে সময় শাহীন আফ্রিদি আর হারিস রউফের ৪ ওভার বাকি ছিল। দলের এমন অবস্থাতেও আফ্রিদির হাতে বল তুলে না দিয়ে বাবর বল করিয়েছিলেন স্পিনার উসামা মিরকে দিয়ে। আর সে ওভারেই এ লেগ স্পিনার খরচ করেন ১১ রান। কার্যত সেখানেই পাকিস্তানের জন্য ম্যাচ শেষ হয়ে যায়।
বাবরের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই পছন্দ হয়নি ওয়াসিম আকরামের। বাবরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যখন ৫ ওভার বাকি, তখন ২ ওভার শাহিনের, ২ ওভার হারিসের ও ১ ওভার হাসানের ছিল। আমরা উসামা মিরকে বোলিং দিলাম, সে দিল ১১ রান। এটা কোন ধরনের সিদ্ধান্ত?’
এরপর ওয়াসিম আকরামের সাথে যোগ করে মিসবাহ উল হক বলেন, ‘যখনই পাওয়ার প্লেতে হারিস রউফ বোলিংয়ে আসে, প্রথম ওভারে ১৮-২০ রান দিয়ে ফেলে। আগের ম্যাচে এ নিয়ে কথা বলছিলাম। এমন পরিস্থিতিতে নিউজিল্যান্ড দারুণ কাজ করে। ওরা অষ্টম বা নবম ওভার মিশেল স্যান্টনারকে দিয়ে করায়। এটা একটা আক্রমণাত্মক কৌশল। এই ঝুঁকি থেকে আপনি উইকেটও পেতে পারেন। এমনটা করলে হারিসের জন্য ভালো হতো। চারজন ফিল্ডার ৩০ গজের বাইরে রেখে বোলিং করতে পারত।’
স্পিনারদের ছন্দহীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন শোয়েব মালিক বলেন, ‘স্পিনাররা মোটেই ছন্দে নেই। আর আপনি ভিন্ন কিছুও ভাবছেন না? সৌদ শাকিলকে কেন বোলিং করানো হচ্ছে না?’
এরপর বাবরকে নিয়ে এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই যে, বাবর একজন ভাল ব্যাটার। তবে সে সেই মানের অধিনায়ক নন।’ সাবেকরা ক্ষেপে গেছেন, ভাবতে বসেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও (পিসিবি)। তাহলে কি বাবর অধ্যায় কি এখানেই শেষ?