২০১২ সালের পর আর এশিয়া কাপ শিরোপা জেতা হয়নি পাকিস্তানের। অপেক্ষাটা তাই বেড়েই চলেছে, এক দশক পেরিয়ে ১১ বছরের।
১৫ বছর বাদে আবারো এশিয়া কাপ ফিরছে পাকিস্তানের মাটিতে। মূল আয়োজক হয়েও যদিও মোটে ৪ টি ম্যাচ আয়োজন করবে পাকিস্তান। তবে স্বাগতিক হয়ে এবারের এশিয়া কাপ নিজেদের করে নেওয়ার দিকেই চোখ বাবর আজমদের। সে যাত্রায় কেমন একাদশ সাজাতে পারে পাকিস্তান সেটি নিয়ে কাটাছেঁড়া করা যেতেই পারে।
এই মুহূর্তে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের শীর্ষ ৫ ব্যাটারের মধ্যে ৩ জনই পাকিস্তানের। বাবর আজম রয়েছেন সবার উপরে। আর তিন ও চার নম্বরে রয়েছেন যথাক্রমে ফখর জামান ও ইমাম উল হক।
পাকিস্তানের জন্য সবচাইতে স্বস্তি ও শক্তির ব্যাপার হচ্ছে, এশিয়া কাপে পাকিস্তানের একাদশে টপ-অর্ডার সামলাবেন এই তিনজনই। বলা যেতে পারে, এশিয়ার তো বটেই, তর্কযোগ্যভাবে এই মুহূর্তে পুরো বিশ্বের সেরা টপ অর্ডার লাইন আপ পাকিস্তানের।
অতি নাটকীয় কিছু না হলে, এবারের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের হয়ে ইনিংস শুরু করবেন ফখর জামান আর ইমাম উল হক। ২০১৮ এশিয়া কাপ যদিও ফখর জামানের জন্য তিক্ততার এক স্মৃতি হয়ে আছে। ৫ ম্যাচে সেবার মাত্র ৫৬ রান করেছিলেন তিনি।
তবে, সময় যত গড়িয়েছে ফখর ততই পরিণত হয়েছেন। ঘরের মাটিতে প্রায় ৯০ গড়ে ১৭ ম্যাচে ৮১৭ রান করেছেন এ ব্যাটার। এর অর্থ, পাকিস্তানের মাটিতে যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্যই ভয়ঙ্কর হতে পারেন ফখর।
শুধু তাই নয়, চলতি বছরে রীতিমত রানবন্যা বইয়ে দিয়েছেন তিনি। এখন পর্যন্ত খেলা ৮ ম্যাচে তিনি ৫২০ রান করেছেন। যেখানে তিনি ৭৪.২৯ গড়ে ব্যাটিং করেছেন। দুর্দান্ত এ ব্যাটিং করার পথে ৩ টি সেঞ্চুরি ও ১ টি হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন এ বাঁহাতি ব্যাটার।
ফখর জামানের মতো ব্যাট হাতে ছন্দে আছেন ইমাম উল হকও। ২০২২ এর পর থেকে ৫৮ গড়ে ব্যাটিং করেছেন। যেখানে ২ সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৬ টি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস ছিল।
পাকিস্তানের একাদশে নাম্বার তিনে কোনো রকম সন্দেহ ছাড়াই খেলবেন অধিনায়ক বাবর আজম। ২০২২ সালে যিনি ৮৪.৮৮ গড়ে ব্যাট করেছিলেন। আর সেই ফর্ম টেনে এনেছেন ২০২৩ সালেও। চলতি বছরে ৫৩.১৩ গড়ে করেছেন ৪২৫ রান।
বাবর আজমের পর চার নম্বরে খেলবেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। চলতি বছরে ৬৮.৬০ গড়ে ৩৪৩ রান করেছেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার। মিডল অর্ডারে তাই রিজওয়ানের উপর আস্থা রাখবে পাকিস্তান। রিজওয়ানকে সঙ্গ দিতে ৫ নম্বরে খেলতে পারেন আগা সালমান অথবা ইফতিখার আহমেদ।
ইমার্জিং এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মোহাম্মদ হারিস। এবারের এশিয়া কাপে ছয়ে দেখা যেতে পারে এ ব্যাটারকে। লিস্ট এ ক্রিকেটে ১০০ এর উপরে স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা হারিস এবার হতে পারেন মিডল অর্ডারে তুরুপের তাস।
মিডল অর্ডারে রানের গতি বাড়ানোসহ পাকিস্তানকে রান পাহাড়ে উঠাতে তাই হারিসের উপরেই চোখ থাকবে টিম ম্যানেজমেন্টের। লোয়ার মিডল অর্ডারে থাকছেন দুজন।
সাত এবং আটে খেলতে পারেন যথাক্রমে মোহাম্মদ নওয়াজ ও শাদাব খান। এ দুই ব্যাটার পিঞ্চ হিটিংয়ের পাশাপাশি বলও করতে পারেন। যেটা পাকিস্তানের একাদশে ব্যাটিং, বোলিং- দুইয়ের চাহিদায় পূরণ করতে পারে।
পেস বোলিং ইউনিটে অটোমেটিক চয়েস হিসেবেই থাকছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। সাম্প্রতিক সময়ে এ বোলার ব্যাট হাতেও পিঞ্চ হিটিংয়ে নজর কাড়ছেন। তাই শাহীনের ব্যাটিং স্লগ ওভারে দারুণ এক অস্ত্র হতে পারে পাকিস্তানের জন্য। বাকি দুই পেসারের জায়গাটাও অনেকটা নিশ্চিত। নাসিম শাহর সাথে খেলবেন হারিস রউফ।
যেহেতু সুপার ফোরে সব ম্যাচই হবে শ্রীলঙ্কায়, তাই কন্ডিশন বিবেচনায় এই তিন পেসারকেই খেলাতে পারে পাকিস্তান। তবে চার পেসার নিয়ে খেললে একাদশে ঢুকে যেতে পারেন ফাহিম আশরাফ। সে ক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন মোহাম্মদ নওয়াজ। তবে লঙ্কান কন্ডিশন স্পিন সহায়ক হওয়ায় মোহাম্মদ নওয়াজেরই একাদশে থাকার সম্ভাবনা বেশি।