কথাটা বার বার বলে ক্লিশে হয়ে গেছে – টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ইনটেন্টটাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জেতার জন্য খেলার মানসিকতা প্রয়োজন। নিজের উপর বিশ্বাস রাখা প্রয়োজন। ক্রিকেটের এই ফরম্যাটে শুধু রান আর উইকেট দিয়ে একজন ক্রিকেটারকে মাপা যায় না। অনেক সময় ছোট্ট একটা ক্যামিও, একটা ওভার ম্যাচের গতিপথ বদলে দেয়।
ম্যাচের যেকোনো মুহূর্তে এই আঘাতটা যারা করতে পারেন তাঁরাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বড় তারকা। বড় ইনিংস খেলার থেকে ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে দলের যেটা প্রয়োজন সেটা করতে পারালেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সাফল্য। এখানে ১০ বলের একটি ইনিংস খেলেও আপনি ম্যান অব দ্য ম্যাচ হতে পারেন। কত রান করলেন তারচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কতটা ইমপ্যাক্ট রাখতে পারলেন।
যেমন আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবচেয়ে কম বল খেলেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ হবার রেকর্ড গড়েছেন আসিফ আলী। তাঁর মাত্র ৭ বলের এক ইনিংসে মন জয় করে নিয়েছেন গোটা ক্রিকেট দুনিয়ার। আফগানিস্তানের দেয়া ১৪৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ভালোই জবাব দিচ্ছিলেন অধিনায়ক বাবর আজম।
বাবর আজম ৫১ রানের একটি ইনিংসও খেলেছেন। তবুও শেষ দিকে ম্যাচ জেতার জন্য একটা ক্যামিওর দরকার ছিল পাকিস্তানের। দুই ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ২৪ রান। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নামা আসিফ আলীই বাকি কাজটা করলেন। তিনি শেষ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষাই করলেন না। ১৯ তম ওভারেই রীতিমত তাণ্ডব চালিয়েছেন আফগান বোলার করিম জান্নাতের ওপর। ওই এক ওভারেই মেরেছেন ৪ টি ছয়। সবমিলিয়ে মাত্র ৭ বল খেলে আসিফ আলী করেছেন ২৫ রান।৭ বলের এই ইনিংসটিতে তাঁর স্ট্রাইকরেট ছিল ৩৫৭.১৪ এবং ৪ টিই ছিল ছয়ের মার।
এক ওভারেই চারটি ছয় মেরে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন আসিফ আলী। এর আগে বাবর আজম হাফ সেঞ্চুরি করলেও ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন আসিফ আলীই। কেননা তাঁর ইমপ্যাক্টটাই সবচেয়ে বেশি। মাত্র ৭ বল খেলেই দলের জয় নিশ্চিত করেছেন এই ব্যাটসম্যান।
এর আগে মাত্র ৮ বল খেলে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন দীনেশ কার্তিক। নিদহাস ট্রফির ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্র ৮ বল খেলেই দলের জয় নিশ্চিত করেছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে সেই ম্যাচে বাংলাদেশ ভারতকে দিয়েছিল ১৬৭ রানের টার্গেট। সাব্বির রহমান রুম্মানের ৭৭ রানের ইনিংসে ভালো সংগ্রহই দাঁড় করিয়েছিল বাংলাদেশ।
বোলাররাও নিয়মিত ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের উইকেট তুলে নিয়েছেন। একসময় শেষ দুই ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৩৪ রান। ম্যাচটা প্রায় ভারতের নাগালের বাইরের চলে গিয়েছিল। তবে সেই সময় ব্যাট করতে নামেন দীনেশ কার্তিক। মাত্র ৮ বলে খেলেন ২৯ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। সেই ইনিংসটিতে ছিল ৩ টি ছয় ও ২ টি চার। সেদিন কার্তিক ব্যাটিং করেছিলেন ৩৬২.৫০ স্ট্রাইক রেটে।
এর আগে অবশ্য রোহিত শর্মা ৪২ বলে ৫৬ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন। তবে সেদিনও ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন দীনেশ কার্তিক। মাত্র ৮ বলের সেই ইনিংসই তো জয়ের বন্দরে নিয়ে গিয়েছিল ভারতকে। আরেকটি শিরোপা জয়ের দুয়ার থেকে ফিরেছিল বাংলাদেশ দল।