ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ যুবারা

দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে ভারত-বাংলাদেশ লড়াই মানেই বাড়তি উন্মাদনা। বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে এই দুই দলের লড়াই মানেই বিনোদনে হবে ভরপুর।

টানটান উত্তেজনার সেমিফাইনাল। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে মুখোমুখি ভারত ও বাংলাদেশ। আকাশসম রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে সে ম্যাচ। টাইব্রেকারে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে নিজেদের স্থান নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের যুবারা।

দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে ভারত-বাংলাদেশ লড়াই মানেই বাড়তি উন্মাদনা। বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে এই দুই দলের লড়াই মানেই বিনোদনে হবে ভরপুর। নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালেও ঘটেনি যার ব্যতিক্রম।

ফাইনালে আগে থেকেই পৌঁছে গেছে স্বাগতিক নেপাল। ভুটানকেও তারা হারিয়েছে টাইব্রেকারে। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের দিকে তাকিয়ে ছিল সবাই। সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়নদের খুঁজে নেওয়ার ম্যাচটিতে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারত আধিপত্য বিস্তার করেছিল ম্যাচের প্রথমার্ধের একেবারে শুরুর দিকে।

কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে বাংলাদেশের যুবারা খুঁজে পান নিজেদের ছন্দ। বাম পাশ থেকে একের পর এক আক্রমণ নিয়ে ভারতের রক্ষণে হাজির হয়েছেন রাব্বি হোসেন রাহুল। তেমনই এক আক্রমণ থেকে বাংলাদেশ পেয়ে যায় গোল।

ম্যাচের ৩৬ মিনিটের মাথায় বল নিয়ে ডি বক্সের বাম পাশে হাজির হন রাহুল। সজোরে গোল অভিমুখে শট চালান তিনি। ভারত অনূর্ধ্ব- ২০ দলের গোলরক্ষক প্রিয়ানশ দুবে ঠেকিয়ে দেন সেটি। রিবাউন্ড হওয়া বলটিকে দারুণ দক্ষতার সাথে জালে জড়ান বাংলাদেশের আরেক ফরোয়ার্ড আসাদুল মোল্লা। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ দল।

বিরতি থেকে ফিরে খেলার মোমেন্টাম নষ্ট করবার প্রয়াশ চালায় বাংলাদেশ। অন্যদিকে, ভারত হন্যে হয়ে গোলের ঠিকানা খুঁজে গেছে। বাংলাদেশকে রীতিমত কোণঠাসা করে ফেলে ভারতের যুবারা। কিন্তু বাংলাদেশের রক্ষণ যেন ছিল অবিচল। তার থেকেও বেশি দৃঢ়তা দেখিয়েছিলেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ।

রক্ষণে ভুলচুক হলেও, শ্রাবণ যেন পণ করেছিলেন যে তিনি কোন ভুল করবেন না। তিনি যতক্ষণ অবধি মাঠে ছিলেন, ততক্ষণ অবধি আত্মবিশ্বাসের সাথে গোলবার সামলে গেছেন তিনি। তবে ম্যাচের ৬৬ মিনিটের সময় ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়েন শ্রাবণ। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

তার বদলি হিসেবে গোল বারের দায়িত্ব চলে যায় মোহাম্মদ আসিফের কাঁধে। হুট করে খেলতে নেমে একটু হয়ত দ্বিধান্বিত ছিলেন তিনি। তবুও শ্রাবণের ফেলে যাওয়া দায়িত্ব যথাযথভাবেই পালন করছিলেন আসিফ। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ম্যাচের ৭৫ মিনিটের মাথায় বাংলাদেশের রক্ষণে জটলার সৃষ্টি হয়। সেই জটলা থেকে গোল আদায় করেন ভারতের অধিনায়ক রিকি মিতেই।

সমতায় ফিরে ভারত জয় সূচক গোলের সন্ধান করে। বাংলাদেশ অবশ্য ঠিকমত আক্রমণ সাজাতেই হয়েছিল ব্যর্থ। উলটো ম্যাচের ইনজুরি টাইমে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন কামাচাই মারমা আকি। বাংলাদেশ পরিণত হয় দশ জনের দলে। শেষ অবধি আর কোন বিপদ হয়নি। ম্যাচ চলে যায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকারে বদলি গোলরক্ষক আসিফ ঠেকিয়ে দেন দুইটি শট। অন্যদিকে, পিয়াস আহমেদ নোভারা কোনরকম ভুল করেননি। তাতে করে টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে জয় নিয়ে ফাইনালে চলে যায় বাংলাদেশের যুবারা। ২৮ আগস্ট ফাইনালে নেপালের মুখোমুখি হবেন মিরাজুল ইসলামরা।

Share via
Copy link