পেসারদের স্বর্গে স্পিন দিয়েও ম্যাচ জেতা যায়

টেস্ট ক্রিকেট খেলা হয়, প্রতিটি সেশনে। ১৫টি সেশনের সংযুক্তিতেই আসে ফলাফল। পাকিস্তান স্রেফ একটি সেশনের পরিকল্পনা করেছে। আর বাংলাদেশ পুরো পাঁচ দিনের।

অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস বরাবরই ভরাডুবি ডেকে আনে। তেমনটিই ঘটেছে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের স্কোয়াড বেশ আগে ভাগেই নির্ধারণ করে ফেলেছিল দলটি। আশ্চর্যজনকভাবে সেই একাদশে ছিল না কোন স্পিনার। সেটাই বরং কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের জন্য।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ নিজেদের সামর্থ্যের উপর ভরসা করেছে। দলে অন্ততপক্ষে দুইজন ফ্রন্টলাইন স্পিনার রেখেছিল। টেস্টের পঞ্চম দিনে সেই স্পিনারদের হাত ধরেই জয়ের সুবাতাসে গা ভাসিয়েছে টাইগাররা। মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিবের কল্যাণেই পাকিস্তানকে একেবারে ছন্নছাড়া করা গেছে পিন্ডি টেস্টের শেষ দিনে।

এমনকি চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের স্পিন বোলিং পরামর্শক মুশতাক আহমেদও ভরসা রাখতে বলেছিলেন স্পিনারদের উপর। কন্ডিশন যা কিছু হোক না কেন, যেকোন টেস্টের পঞ্চম দিনে, স্পিনাররা বনে যেতে পারেন তুরুপের তাস। সেটা বাংলাদেশের স্পিনাররা আরও একবার প্রমাণ করেছে।

পাকিস্তানের বড় রান সংগ্রহের স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করেছেন সাকিব ও মিরাজ জুটি। তাদের কল্যাণে পাকিস্তানের মিডল অর্ডারে নেমেছে ধস। আর সেখানেই হয়ত পাকিস্তান নিজেদের কপাল চাপড়ে আফসোস করতে শুরু করেছে। তাদের দূরদর্শিতার অভাবটাই সুস্পষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশের স্পিনাররা।

মূলত টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম ঘন্টা সুযোগ নিতেই পাকিস্তান নিজেদের একাদশে চারজন পেসারকে সংযুক্ত করেছিল। তবে টস হেরে সে পরিকল্পনাও ভেস্তে যায়। বরং বাংলাদেশি পেসাররা ঘাসযুক্ত উইকেট ও খানিক ভেজা মাটির ফায়দা তুলে নেয়। সময় গড়ানোর সাথে সাথে উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হয়ে পড়ে।

কিন্তু চারদিনের তপ্ত রোদে পুড়ে উইকেটে ফাটল ধরেছে। দুই প্রান্ত থেকে পেসারদের পায়ের ছাপে ক্ষত হয়েছে। আর পঞ্চম দিনে এসে সেই ক্ষত আর ফাটল ধরা উইকেটের ফায়দা নিয়েছে টাইগার স্পিনাররা। বুদ্ধিমত্তার সাথে উইকেটের যথাযথ ব্যবহারটাই করেছেন মিরাজ ও সাকিব।

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে এই জায়গায় বাংলাদেশ এগিয়ে থেকেছে অনেকটাই। পাকিস্তানের একটি ভুল সিদ্ধান্ত ঢাকতে হয়েছে পার্টটাইম স্পিনারদের দিয়ে। তবে তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শক্তিমত্তার আর সামর্থ্যের তফাৎ প্রয়োজন। টেস্ট ক্রিকেট খেলা হয়, প্রতিটি সেশনে। ১৫টি সেশনের সংযুক্তিতেই আসে ফলাফল।

পাকিস্তান স্রেফ একটি সেশনের পরিকল্পনা করেছে। আর বাংলাদেশ পুরো পাঁচ দিনের। তাতে করে বাংলাদেশ বিদেশের মাটিতে আরেকটি বড় জয়ের স্বপ্ন দেখার সাহস করেছে।

Share via
Copy link