নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে মাউন্ট মঙ্গানুইতে ঐতিহাসিক এক জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। এবাদত হোসেনের বিধ্বংসী স্পেলে মুখ থুবড়ে পড়ে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং শিবির। এরপর স্বল্প রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে ৮ উইকেটের সহজ জয় পায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ঐতিহাসিক জয়ে বেশ কিছু রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ দল।
১ – নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে মেইডেন প্রথম দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে ১৫ বারের দেখায় ১২ বারই হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ দল। এছাড়া বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এটি বাংলাদেশের প্রথম জয়। এর আগের সাইকেলে ৯ ম্যাচের আটটিতেই হারে বাংলাদেশ দল।
১ – মাউন্ট মঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটের জয় যেকোনো ফরম্যাটে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম জয়! এর আগের ৩২ বারের দেখায় নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কোনো ম্যাচেই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। কোনো দলের ঘরের মাটিতে যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এটিই সবচেয়ে বড় জয়ের ধারা।
১৭ – বাংলাদেশের বিপক্ষে হারের আগে ঘরের মাটিতে টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত ছিলো নিউজিল্যান্ড। সবশেষ ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট হারে নিউজিল্যান্ড। ঘরের মাঠে টেস্টে এটি তাদের সবচেয়ে লম্বা সময় অপরাজিত থাকার রেকর্ড। টানা আট সিরিজ জয়ের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ধারা থমকে গেলো ব্ল্যাকক্যাপসদের।
৫ – নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের আগে দেশের বাইরে মোটে ৫ টি টেস্ট ম্যাচ জিতেছিলো বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ২ টেস্ট, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৩ ও ২০২১ সালে ২ ম্যাচ এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৭ সালে ১ টেস্টে জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ।
৬-৪৬ – নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ রানে ৬ উইকেট শিকার করেন পেসার এবাদত হোসেন। এটি টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার। ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৭ রানে ৬ উইকেট শিকার করেছিলেন শাহাদাত হোসেন। ২০১৩ সালের পর বাংলাদেশের হয়ে প্রথম পেসার হিসেবে টেস্টের এক ইনিংস পাঁচ কিংবা তাঁর বেশি উইকেট শিকার করেন এবাদত।
৩৩ – দ্বিতীয় ইনিংসে শেষ ৮ উইকেটে মাত্র ৩৩ রান তুলতে পেরেছে বাংলাদেশ। টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ ৮ উইকেটে যেকোনো দলের এটি সর্বনিম্ন রান। এর আগে ২০১৬ সালে ঢাকায় ১২৪ রানে ২ উইকেট থেকে মাত্র ১৬৪ রান গুড়িয়ে যায় ইংলিশরা।
৬০ – নিউজিল্যান্ডের শেষ ৬ ব্যাটার পুরো টেস্টে মোটে ৬০ রান করে! নিউজিল্যান্ডের শেষ ৫০ বছরে (অলআউট হওয়া ম্যাচে) টেইলের ৬ জনের এটি তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর! গত মাসে মুম্বাইয়ে ভারতের বিপক্ষে টেস্টে ৪৮ রান করেছিলো শেষ ৬ ব্যাটার। এছাড়া ১৯৯৩ সালে হ্যামিল্টনে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের শেষ ৬ ব্যাটার মিলে করেছিলো ৫৯ রান।
১৩ – বে ওভালে বাংলাদেশি পেসাররা মোট ১৩ উইকেট শিকার করে। কোনো টেস্টে বাংলাদেশী পেসারদের এটি সর্বোচ্চ উইকেটশিকার। এর আগে ২০১৩ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১১ উইকেট শিকার করে বাংলাদেশি পেসাররা। ১৩ উইকেটের ৯টিই এসেছে দ্বিতীয় ইনিংসে; কোনো ইনিংসে বাংলাদেশী পেসারদের এটি যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেটশিকার।
১৬৯ – বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৬৯ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। এটি বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগে ২০০৮ সালে চট্রগ্রামে ১৭১ রানে অলআউট হয়েছিলো ব্ল্যাকক্যাপসরা। এশিয়ার বাইরে এটি বাংলাদেশের বিপক্ষে যেকোনো প্রতিপক্ষের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৮ সালে ১২৯ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।