‘স্বাগতিক’ হওয়াটাই বাংলাদেশের স্বস্তি

একটা নতুন চক্র। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের নতুন সার্কেল শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের। শুরুটা হচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তরও। দেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে ১৩ তম অধিনায়ক হিসেবে আগামীকাল তিনি বনেদি পোশাকে নামবেন সিলেটের বাইশ গজে।

স্বপ্নটা বড়ই দেখছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি জয়ের প্রত্যাশার বাণি শুনিয়ে গেছেন সংবাদ। তিনি বিশ্বাস করে দেশের মাটিতে জয় পাওয়ার মত শক্তিমত্তা রয়েছে বাংলাদেশ দলের। সেই শক্তিমত্তার পূর্ণ ফায়দাটা তুলতে চান শান্ত।

এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের চক্রে মোট ১৪টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। সেই শুরুটা হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দিয়েই। দলের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা অনুপস্থিত। অন্যদিকে পূর্ণ শক্তির নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষেই খেলতে নামতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

তবুও ইতিবাচক থাকতে চেয়েছেন নব্য টেস্ট অধিনায়ক। প্রায় বছর পাঁচেক পরে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে টেস্ট ম্যাচ। দলের অধিকাংশ খেলোয়াড়দের এই মাঠের অভিজ্ঞতা বলতে ঘরোয়া ক্রিকেট। সেই অভিজ্ঞতাই কাজে লাগিয়ে জয়ের জন্যে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল।

এ নিয়ে শান্ত বলেন, ‘এখানে টেস্ট খুব কম হয়েছে। প্রথম শ্রেণির ম্যাচ যা হয়েছে ধারণা বলতে এতটুকুই। উইকেট নিয়ে খুব লম্বা আলোচনা হয়েছে তা না। উইকেট কীরকম বোঝার চেষ্টা করেছি।’ সিলেটে ম্যাচের আগের দিন সকাল সকাল পিচে হাজির হয়েছিলেন শান্ত। এরপর তার সাথে যুক্ত হয়েছিলেন হেড কোচ চান্ডিকা হাতুরুসিংহে।

দু’জনে মিলে উইকেট পরখ করে দেখেছেন। যতটুকু চোখের আন্দাজে বুঝে নেওয়া সম্ভব সেই চেষ্টা করেছেন। তবে এরপর দীর্ঘক্ষণ হেড কোচের সাথে আলোচনায় বসেছিলেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও হাবিবুল বাশার সুমন।

যেন আগামীকালের দলটা কেমন হবে সেই আলাপই সেরে নিয়েছেন তারা। দল সাঁজাতে খানিকটা বেগ পোহাতেই হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। দীর্ঘদিন ধরে দলে থাকা বেশ কিছু খেলোয়াড় নেই এই টেস্ট সিরিজে। সেদিক থেকে সেরা একাদশ সাজানোটা একটু কষ্টসাধ্য বিষয়ই বটে।

তাছাড়া উইকেট বিবেচনায় দলের ঠিক কতজন পেসার থাকবেন, তার বিপরীতে কতজন স্পিনারকে নিয়ে খেলতে নামবে বাংলাদেশ সেটাও দুশ্চিন্তার কারণ। সম্ভাবনা বেশ প্রবল দুই পেসার একাদশে সুযোগ পাওয়া। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের বোলিং অ্যাটাকও খানিকটা ভয় জাগানিয়াই বটে। বৈচিত্র্যের দারুণ সংমিশ্রণ অপেক্ষাকৃত কম অভিজ্ঞ বাংলাদেশ একাদশের ত্রাস হতে পারে।

তবুও জয় ভিন্ন কিছু ভাবতে চাইছে না বাংলাদেশ দল। কেননা ঘরের মাঠের টেস্ট ম্যাচগুলো যে নিজেদের করে নিতে চায় বাংলাদেশ দল। শান্ত বলেন, ‘যে ম্যাচগুলো দেশের মাটিতে হবে এগুলো জেতা খুব জরুরী। দল হিসেবে এটাই প্রথম লক্ষ্য। সাথে বাইরে কীভাবে ভালো খেলতে পারি। আমাদের যে বোলিং অ্যাটাক আছে, বোলিং আছে, আমরা দেশে জেতার মতো দল। আস্তে আস্তে সেই অভ্যাসও তৈরি করা দরকার। হোমে ম্যাচ জেতা আমাদের কাছে সবচেয়ে প্রাধান্য পাচ্ছে।’

বাংলাদেশের প্রাধান্য দেশের মাটিতে খেলা ম্যাচগুলো নিজেদের করে নিতে। তাতে যদি ঘরের মাঠের সুবিধা নিতে কোন অসুবিধা দেখছেন না শান্ত। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক দলই যখন হোমে খেলে অটোমেটিক কিছু এডভান্টেজ থাকে। আমরা সেটা নেওয়ার চেষ্টা করব।’

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের খুব বেশি সুখস্মৃতি নেই। তবুও ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সিলেটের নীলাভ আকাশের নিচে নতুন কোন জয়ের কাব্যই লেখতে চান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link