নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এই নিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০তম আর্ন্তজাতিক ম্যাচ খেললো বাংলাদেশ। বলাই বাহুল্য, সবগুলো ম্যাচেই হারলো বাংলাদেশ।
ভেন্যু পরিবর্তন হচ্ছে, ফরম্যাট পরিবর্তন হচ্ছে, কিন্তু ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে না বাংলদেশের। নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে যেন পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বেরই হতে পারছে না লিটন সৌম্যরা। ওয়ানডে সিরিজে হোয়াটওয়াশ হওয়ার পর সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও ৬৬ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।
বড় রান তাড়া করতে নেমে যে রকম শুরুর প্রয়োজন ছিলো সেটা পায়নি বাংলাদেশ। এক প্রান্তে নাইম শেখ ভালো শুরু করলেও আরেক বার ব্যর্থ হয়ে শুরুতেই ফিরে যান লিটন দাস। টিম সাউদির লেংথ বল পুল করতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ৪ রান করে ফিরে যান এই ওপেনার।
প্রথম বল থেকেই দারুণ খেলতে থাকা নাঈম শেখ পঞ্চম ওভারে ফার্গুসনের প্রথম বল মিড অন দিয়ে চার মারলেও পরের বলেই আউট হয়ে যান। এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়া নাঈম শেখের ইনিংস শেষ হয় ২৮ রানে। এরপর বাংলদেশের ইনিংসে তান্ডব চালান ইশ সোধি।
প্রথমে ৫ রান করা সৌম্য সরকারকে আউট করার পর একে একে ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ মিথুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ও শেখ মেহেদী হাসানকে। মিথুন করেন ৪ রান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে আসে ১১ রান ও মেহেদী হাসান ফিরে যান রানের খাতা খোলার আগেই।
৫৯ রানে ৬ উইকেট হারানো বিপর্যস্ত বাংলাদেশ সপ্তম উইকেটে আফিফ হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ব্যাটে ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেস্টা করলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ঠ ছিলো না। এই দুজনের ৬৩ রানের জুটিতে পরাজয়ের ব্যবধানই শুধু কমিয়েছে বাংলাদেশ।
আফিফ হোসেন ৩৩ বলে ৪৫ রান করে আউট হয়ে গেলেও ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন সাইফউদ্দিন। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৪৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের পক্ষে সোধি ৪ টি এবং ফার্গুসন ২ টি উইকেট শিকার করেন।
এর আগে সেডন পার্ক, হ্যামিল্টনে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয় নিউজিল্যান্ডের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচের প্রথম বলেই আরেক অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের স্কিড করে ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড হয়ে যান ফিন অ্যালেন।
শুরুর ধাক্কা দ্রুত সামলে নিয়ে দ্বিতীয় উইকটে ৫২ রান যোগ করেন মার্টিন পাপটিল ও ডেভিন কনওয়ে। তবে বিপদজনক হয়ে ওঠা গাটিলকে বেশী দূর যেতে দেননি নাসুম আহমেদ। নাসুমের মন্থর গতিতে ঝুলিয়ে দেওয়া বলে ঠিক ভাবে টাইমিং করতে না পেরে সীমানায় সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়েন ২৭ বলে ৩৫ রান করা গাপটিল।
উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া মার্টিন গাপটিলকে হারালেও নিউজিল্যান্ডের রানের গতিতে ভাটা পড়তেে দেননি কনওয়ে ও ইয়ঙ। এই দুজন তৃতীয় উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৬০ বলে ১০৫ রান; হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন দুজনই। তবে হাফসেঞ্চুরি করার পর বেশীক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি ইয়ঙ। স্লগ করে ছয় মারতে গিয়ে মিড উইকেটে আফিফ হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ইয়ঙ। ইয়ঙের ব্যাট থেকে আসে ৩০ বলে ৫৩ রান।
কিন্তু সঙ্গী হারানোর পরেও থেমে থাকেনি ডেভন কনওয়ের ঝড়। ডেভন কনওয়ে ও গ্লেন ফিলিপসের শেষের ঝড়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২১০ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। কনওয়ে ৫২ বলে ৯২ ও ফিলিপস ১০ বলে ২৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের পক্ষে নাসুম আহমেদ ২ টি ও মেহেদী হাসান ১ টি উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
নিউজিল্যান্ড: ২১০/৩ (ওভার: ২০; গাপটিল- ৩৫, অ্যালেন- ০, কনওয়ে- ৯২*, ইয়াঙ- ৫৩, ফিলিপস- ২৪*) (নাসুম- ৪-০-৩০-২, মেহেদী- ৪-০-৩৭-১)
বাংলাদেশ: ১৪৪/৮ (ওভার:২০; নাঈম- ২৭, লিটন- ৪, সৌম্য- ৫, মিঠুন- ৪, মাহমুদউল্লাহ- ১১, আফিফ- ৪৫, মেহেদী- ০, সাইফউদ্দিন- ৩৪*, শরিফুল- ৫, নাসুম- ০*) (সাউদি ৪-০-৩৪-১, বেনেট ৪-০-২০-১, ফার্গুসন ৪-০-২৫-২,সোধি ৪-০-২৮-৪)
ফলাফল: নিউজিল্যান্ড ৬৬ রানে জয়ী।