এশিয়া কাপ নিশ্চিতরুপেই ভুলে যেতে চাইবে বাংলাদেশ। সবকিছু ভুলে বিশ্বকাপের জন্যই নিজেদের প্রস্তুত করতে চাইবে টিম টাইগার্স। তবে এর আগেই গোটা দলকে আবারও মাঠে নামতে হবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেখানে আবার গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের বিশ্রামের ইঙ্গিত দিয়েছেন অধিনায়ক। সাকিব আল হাসান বিশেষ করে দলের পেস আক্রমণকে বিশ্রাম দেওয়ার পক্ষে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ রীতিমত উড়ছে। তাদের ঝুলিতেই যাচ্ছে অধিকাংশ উইকেট। বাংলাদেশের চিরায়ত স্পিন নির্ভরশীলতার পরিবর্তন ঘটাতে শুরু করেছেন তাসকিন আহমেদ ও তার সতীর্থরা। তবে পেসারদের নিয়ে প্রতিনিয়ত দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। কেননা ইনজুরি যে তাদের শরীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকে। একটু এদিক-ওদিক হলেই জাপ্টে ধরে।
সেই ইনজুরির থাবায় এবাদত হোসেন ইতোমধ্যেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছেন। অস্ত্রপচারও করাতে হয়েছে এই পেসারকে। আপ্রাণ চেষ্টা করেও ফিরতে পারেননি এশিয়া কাপে। তার অনুপস্থিতি বাংলাদেশ দলে অস্বস্তির জন্ম দিয়েছে। তেমন কোন অস্বস্তিতে বাংলাদেশ অন্তত আরও একবার পড়তে চায় না। তাইতো জাতীয় দলের নিয়মিত পেসারদের বিশ্রামেই রাখা হবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।
তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমান কোন ধরণের সন্দেহ ছাড়াই থাকছেন বিশ্বকাপের স্কোয়াডে। কেননা অন্তত এই চারজন পেসারকে নিয়ে বিশ্বকাপ মিশনে যেতে চাইবে দল। গেল বেশ কয়েকটি সিরিজ ধরেই এবাদতসহ এই চারজন নিজেদের প্রমাণ করে এসেছেন। তাই তাদেরকে নতুন করে বাজিয়ে দেখার কিছু নেই।
যদি এই চার পেসারকে বিশ্রাম দেওয়াই হয়, তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের পেস আক্রমণে থাকবে কে? এমন প্রশ্ন আসা বেশ স্বাভাবিক। অনেকের মনে এসেছেও হয়ত। হ্যাঁ, এই চারজন বা পাঁচজনকে সরাসরি বদল করবার মত পেসাররা এই মুহূর্তে প্রস্তুত নয়। তবে আরও একসেট পেসার তো প্রস্তুত রাখা চাই। এবারের নিউজিল্যান্ড সিরিজটি অন্তত হতে পারে তালিকা সংক্ষিপ্ত করবার সুযোগ।
সে মোতাবেক, বাংলাদেশের পেস আক্রমণে হয়ত দেখা যেতে পারে তানজিম হাসান সাকিবকে। কেননা তিনি এশিয়া কাপে বাংলাদশের সাথেই ছিলেন। সুতরাং তিনি হয়ত দলের প্রথম পছন্দ হিসেবে ইতোমধ্যেই জায়গা করে নিয়েছেন। সাকিব ছাড়াও আরও একজন রয়েছেন দৃশ্যপটে। তিনি খালেদ আহমেদ। বাংলাদেশ আটজন অতিরিক্ত খেলোয়াড়কে পেছনে রেখে গেছে ব্যাকআপ হিসেবে।
সেই আটজনের একজন খালেদ। তিনি ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে পেসার রেজাউর রহমান রাজাকেও দেখা গেছে তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের সাথে অনুশীলন করতে। রাজাকে জুলাইয়ে খেলা আফগানিস্তান সিরিজের টেস্ট দলে রাখা হয়েছিল। অন্যদিকে, খালেদ আহমেদ জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। সুতরাং এই তিনজন পেসারকে একাদশে দেখতে পারার সম্ভাবনা বেশ প্রবল।
তবে শুধু এই তিনজনেই সীমাবদ্ধ থাকবেন না নির্বাচকরা। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা থেকে আরও কয়েকজন পেসারকে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে জাতীয় দলের সাথে। সেদিক থেকে আবার সবার আগেই আসবে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর নাম। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে তার অভিষেক হয়েছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। ইংল্যান্ডে হওয়া সেই ম্যাচে আশার প্রতিফলন ঘটাতে পারেননি মৃত্যুঞ্জয়।
তবুও তাকে নিশ্চয়ই ছুঁড়ে ফেলা হবে না। আরও কিছু সুযোগ তার প্রাপ্য। বয়স একেবারেই কম। এখনও শেখার সময় রয়েছে। শেখার অনেক কিছু রয়েছে। তাছাড়া রিপন মণ্ডলও হতে পারে আরেক পছন্দ। জাতীয় দলের পাইপলাইন সচল রাখতে বেশকিছু প্রোগ্রাম সমান্তরালভাবে পরিচালনা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সেসব প্রোগ্রামের নিয়মিত মুখ রিপন।
রিপন ছাড়াও সম্ভাবনার প্রদীপ হাতে দাঁড়িয়ে আছেন আরেক পেসার মুশফিক হাসান। তিনিও হাই পারফরমেন্স ও বাংলাদেশ টাইগার্স প্রোগ্রামে ধারাবাহিকভাবে সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন। মোটামুটি এই কয়েকজন পেসারদের থেকেই হয়ত পাঁচজনকে বেছে নেওয়া হবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। তাতে করে দারুণ করতে থাকা বর্তমান পেস অ্যাটাকের উত্তরসূরি অন্তত খুঁজে নেওয়া যাবে।