ক্রিকেট মাঠে ভারতের সাথে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা কিংবা অর্জনে যোজন যোজন তফাৎ। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের চিত্রটা আরেকটু বেশিই করুণ। দু’টি দল ১১ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে নিজেদের মধ্যে। সেখানে বাংলাদেশ দল জিতেছে মাত্র একটা ম্যাচে।
২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচটা অবশ্য হয়েছিল খোদ ভারতের দিল্লীতে। ফলে, ভারতের মাটিতে ভারতকে হারানোর সুখস্মৃতিই বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় ভরসা। তবে, এই ভরসার চেয়েও বড় ব্যাপার হল – ভারত এখানে স্পষ্টত ফেবারিট। বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচের আগে সেই একটা কথাই বার বার যেন বলতে চেষ্টা করলেন সাকিব আল হাসান, বাংলাদেশের অধিনায়ক।
আবার ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মাঠের দ্বৈরথ আলাদা একটু উত্তেজনারও জন্ম দেয়। সেই আমেজ তো আছেই, আর বিশ্বজয়ের স্বপ্ন নিয়ে আসা ভারতের টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশের বিপক্ষে জিততেই হবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ দলের তেমন কিছু হারানোর ভয় নেই। তাই, চাপটা বেশি থাকবে ভারতের ওপরই।
এবার প্রশ্ন হল ভারতকে চাপে ফেলার ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশটা কেমন হবে?
ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। অন্তত প্রথম পাঁচটা নাম নিশ্চিত। ওপেন করবেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকার। তিন ও চারে নামবেন লিটন কুমার দাস ও সাকিব আল হাসান। পাঁচ নম্বরে আফিফ হোসেন ধ্রুব। ছয় ও সাত ও আট পজিশন নিয়ে একটু আলাপ চলতে পারে।
এখানে যাদের দিয়ে বাংলাদেশ চেষ্টা করেছে তাঁরা বিশ্বকাপ জুড়ে ব্যর্থ হয়েছেন। এর মধ্যে এক মোসাদ্দেক কেবল একটু ব্যাটে কিংবা কখনও বলে পারফর্ম করেছেন। ফলে, মোসাদ্দেক টিকে যাচ্ছেন। এরপর থাকলেন নুরুল হাসান সোহান ও ইয়াসির আলী রাব্বি। এই দু’জন কার্যত ব্যর্থই হয়েছেন। সব ঠিক থাক থাকলে এই দু’জনের কেউ একজন বাদ পড়বেন ভারতের বিপক্ষে। সোহান বাদ পড়লে তাঁর জায়গায় উইকেটের পেছনে দাঁড়াবেন লিটন।
টিম ম্যানেজমেন্ট ভারতের বিপক্ষে সাত ব্যাটার নিয়েই খেলতে পারে। কারণ, আগের সবগুলো ম্যাচেই বোলিং আক্রমণ নিয়ে বেগ পেতে হয়েছে সাকিবকে। ভারতের বিপক্ষে সেই একই ভুল করলে বিপদ বাড়তে পারে। এখন সেই বাড়তি বোলার কে হতে পারেন? বিকল্প আছে তিনটি – নাসুম আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ ও এবাদত হোসেন। এর মধ্যে মিরাজ প্রথমেই আলোচনার বাইরে। কারণ, ভারতীয় ব্যাটিংয়ের বিপক্ষে ডান হাতি স্পিনার দিয়ে খুব লাভ হবে না।
এখানে বরং বাড়তি পয়েন্ট পাবেন নাসুম আহমেদ। কারণ, সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারতের যে একাদশটা খেলতে নেমেছে তাঁর প্রথম সাতজনই ছিলেন ডান হাতি ব্যাটার। আর পরিসংখ্যান বলছে, বাঁ-হাতি স্পিনারদের বিপক্ষে এই ব্যাটার পারফরম্যান্সও আশাব্যঞ্জক নয়। ফলে, একাদশে ফেরার লড়াইয়ে এগিয়েই আছেন নাসুম। এখানে অবশ্য তাঁর লড়তে হবে পেসার এবাদত হোসেনের সাথে। কারণ, এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পেসাররা দারুণ বোলিং করছেন। সেই সুযোগটা বাংলাদেশ চাইলে ভারতের বিপক্ষে কাজে লাগাতে পারে।
একাদশের বাকিরা মানে বাকি তিন পেসার নিশ্চিত – তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও হাসান মাহমুদ খেলবেন।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, সাকিব আল হাসান, আফিফ হোসেন ধ্রুব, ইয়াসির আলী রাব্বি/নুুরুল হাসান সোহান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, এবাদত হোসেন/নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ।