টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় কর্তারা। এই সংস্করণকে নতুন প্রাণ দেওয়ার চেষ্টা করছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলশ ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। আইসিসির প্রকাশিত নতুন সফর সূচীর (এফটিপি) বাইরে গিয়ে টেস্ট ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা ছক সাজাচ্ছে বোর্ডটি।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়েকে নিজ দেশে আমন্ত্রণ জানাবে ইসিবি। টেস্টে অধারাবাহিক হলেও সমর্থকদের আগ্রহের কারণেই লর্ডসে টেস্ট খেলার সুযোগ পেতে পারে বাংলাদেশ।
ক্রিকেট দুনিয়ার যে প্রান্তেই বাংলাদেশ ম্যাচ খেলুক, সেখানে থাকবে গ্যালারি ভর্তি দর্শক। লাল-সবুজ জার্সিতে মাঠের বাইরে তৈরী হয় নতুন উন্মাদনা। এসব কিছু নজর এড়ায়নি ইংরেজ বোর্ডের। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ, এই দুই আসরে বাংলাদেশি সমর্থকদের দারুণ উপস্থিতি ছিল ।
চলতি বছর ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। দর্শকদের বাংলাদেশ-বাংলাদেশ চিৎকারে অনুপ্রেরণা পেয়েছিল মাঠের যোদ্ধারা। আইরিশদের চেয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থনটাই ছিল বেশি। বিদেশ সফরে বাংলাদেশ দলের চাইতে খুব বেশি দর্শক সম্ভবত অন্যকোন দল পায় না।
ইংল্যান্ডে বাংলাদেশ সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ খেলেছিল ২০১০ সালে। এরপর চলে গেছে এক যুগের বেশি সময়। মাঝের সময়ে টেস্ট খেলার সৌভাগ্য হয়নি তামিম-সাকিবদের। সবশেষ সিরিজ শেষে তামিমতো জানিয়েই দিয়েছেন, ইংল্যান্ডে সম্ভবত নিজের শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি।
আইসিসির নতুন সফরসূচীতে ২০২৭ সালের আগে ইংল্যান্ডে সফর নেই বাংলাদেশের। তবে ইসিবির এমন পরিকল্পনার পর নতুন আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করতে পারে তামিম-সাকিবরা। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ২০২৪ অথবা ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি।
বাংলাদেশকে নিয়ে ইসিবির ভাবনার বড় কারণ দর্শক উপস্থিতি। এই ভাবনা নতুন করে এসেছে লর্ডসে ইংল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে। এই ম্যাচে প্রচুর দর্শক ছিল মাঠে। যা নতুন চিন্তার সুযোগ দিয়েছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ডকে। ক্রিকেটের বড় বড় দলগুলো ছাড়াও যে দর্শক পাওয়া যাবে সেটি নিশ্চিত কর্তারা। আর প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ হলে তো কথায় নাই।
আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানাতে পারে ইসিবি। খুব করেই ম্যাচটি আয়োজনের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন এমসিসির প্রধান নির্বাহী গাই ল্যাভেন্ডার। লর্ডসে বাংলাদেশ টেস্ট খেললে দর্শক নিয়ে অন্তত চিন্তা করতে হবে না বোর্ডকে। এমনও হতে পারে অ্যাশেজের কোন একটা ম্যাচের চেয়েও বেশি দর্শক হতে পারে বাংলাদেশ ম্যাচে।
ইংল্যান্ড টেস্টে চালু করেছে বাজবল নীতি। টেস্ট নিয়ে দলটির আগ্রহ এখন আকাশচুম্বী। তবে আগ্রহ শুধু নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চায়না। ছড়িয়ে দিতে চায় বাকিদের মাঝেও। বিশেষ করে এই সংস্করণে যেসব দল তুলনামূলক পিছিয়ে রয়েছে তাদের জন্য বড় কিছুই।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আগ্রহ বাড়ছে ক্রিকেটারদের। সেখানে রয়েছে ভাবনার বাইরে অর্থ। এদিকে এক টেস্টের পরিধি পাঁচ দিনের। বাংলাদেশের মত দল বছরে পায় না খুব বেশি ম্যাচ। যার কারণে টেস্ট ছেড়ে বাকি দুই ফরম্যাটে বাড়তি মনোযোগ থাকে ক্রিকেটারদের। টেস্ট খেলতে শুধু আগ্রহী করতে নয়, ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিকও যেন বাড়ে সেদিকে সচেতন ইসিবি।