খোয়ানো টুপি, পাওনা সম্মান

নর্দাম্পটনশায়ারের কাউন্টি মাঠের সাজঘর থেকে দেখা দৃশ্যটা সুপরিচিত দৃশ্যের একটি। এর এক কোণে গির্জা এবং সারি সারি লাল ইটের দালান যেগুলোর প্রতিটি পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে গাছপালা। মাঠের ভেতরের অংশেরও খুব কমই পরিবর্তন ঘটেছে। প্যাভিলিয়ন ভবনে সেই ২০-২১ বছর আগের জয়ের একটি বড়সড় প্রশস্ত স্থিরচিত্র রয়েছে। তখনকার সময় এবং বর্তমান সময়ের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য হলো দর্শক। সেই দিন পুরো নর্দাম্পটন ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ এবং তার তুলনায় এখন লেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ঘরের দলের ম্যাচের দর্শকসংখ্যা অতি নগণ্য।

সেদিন কিভাবে নিজের ক্যাপ হারিয়েছিলেন – গল্পটা বলতে গিয়ে প্রাণ খুলে হাসছেন মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে নর্দাম্পটনে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের সেই মধুর স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে এই সাবেক বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান ও বর্তমান প্রধান নির্বাচককে। কিন্তু তিনি কোনভাবেই বিশ্বাস করতে পারেন না যে, কেউ তাঁর মাথা থেকে ক্যাপটি চুরি করে পালিয়েছিল। যদিও এ ঘটনাটিকে নিছক মজা হিসেবেই দেখেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমরা শেষ উইকেটের জন্য তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলাম যেটা ছিল রান আউট। সকল দর্শক ততক্ষণে মাঠে প্রবেশ করে ফেলে যেটা ছিল তখনকার সময়ে খুবই সাধারণ ঘটনা। তখনই হঠাৎ আমি দেখতে পেলাম কেউ একজন আমার ক্যাপটি নিয়ে দৌঁড়ে পালালো। আমি বামে তাকালাম কিন্তু ওই ব্যক্তি যিনি নিজেও ক্যাপ পরিহিত অবস্থায় ছিলেন ততক্ষণে পগারপার।’

‘সেই জয় এবং ওই মাঠের  অবস্থান আমাদের হৃদয়ে সবসময়। আমরা জয় উদাযপনের জন্য অতিরিক্ত একদিন সেখানে থেকে গিয়েছিলাম। নর্দাম্পটনের মানুষগুলো আমাদের প্রতি খুবই আন্তরিক ছিল। সেদিন সন্ধ্যায় নৈশভোজের জন্য আমরা একটি ভারতীয় রেস্তোরাঁয় যাই। সেদিন আমরা পাকিস্তানকে পরাজিত করি বিধায় তারা আমাদের চমৎকার অভ্যর্থনা দেয়।’, যোগ করেন তিনি।

যেদিন মিনহাজুল তার ক্যাপটি হারিয়েছিলেন সেদিন থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বহিরাগত হিসেবে অংশ নেয়া চিরতরে বন্ধ হয় বাংলাদেশের। ১৯৯৯ সালের ৩১ মে বিশ্বের দশম টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার বীজ বুনে ফেলে বাংলাদেশ।

__________

নর্দাম্পটনশায়ারের কাউন্টি মাঠের সাজঘর থেকে দেখা দৃশ্যটা সুপরিচিত দৃশ্যের একটি। এর এক কোণে গির্জা এবং সারি সারি লাল ইটের দালান যেগুলোর প্রতিটি পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে গাছপালা। মাঠের ভেতরের অংশেরও খুব কমই পরিবর্তন ঘটেছে। প্যাভিলিয়ন ভবনে সেই ২০-২১ বছর আগের জয়ের একটি বড়সড় প্রশস্ত স্থিরচিত্র রয়েছে। তখনকার সময় এবং বর্তমান সময়ের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য হলো দর্শক। সেই দিন পুরো নর্দাম্পটন ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ এবং তার তুলনায় এখন লেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ঘরের দলের ম্যাচের দর্শকসংখ্যা অতি নগণ্য।

 

যদিও ২৪ বছর আগের ম্যাচটি ছিল একদম ‘ডেড রাবার’। ওই আসরে বাংলাদেশ বাছাইপর্ব উৎরে আসা স্কটল্যান্ডকে পরাজিত করলেও বড় প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে ছিল একেবারে নিষ্প্রভ। সত্যি করে বলতে গেলে টুর্নামেন্টে সেরা ছন্দে থাকা পাকিস্তানকে যে তারা হারিয়ে দিবে সেটাও ভাবনায় ছিল না। কিন্তু তারা একটি ভাল সমাপ্তির আশা করেছিল এবং তারা যা পায় তা হলো একটি গ্যালারিভর্তি স্টেডিয়াম, সমর্থকগণ দুই দেশের পতাকা আকাশে উড়াচ্ছে, তাদের মধ্যে কিছুসংখ্যক লোক বিস্ময়কর কীর্তি উপভোগ করছে।

১৯৯৯ সালের ৩১ মে যা ঘটেছিলো সেটা ছিল ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ‘শক’। আকর্ষণ জাগিয়ে  প্রেসবক্সে এ ম্যাচটির কথা উল্লেখ করে আমি এমন একজন স্থানীয়কেও পেলাম না যিনি ওইদিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন। তবে প্যাভিলিয়ন ভবনের চারপাশে আমাকে উপদেশ দেয়া হয় যে সমর্থক ক্লাব আমার জন্য সেরা উৎস হতে পারে। সেখানেই আমি তিনজন মহিলাকে পাই যারা একটি বইয়ের দোকানের সামনে বুননকার্যে ব্যস্ত।

মাইকেল ওয়েলস, যিনি তাঁর ৫০ তম জন্মবার্ষিকীতে উপহার হিসেবে ক্লাবের সদস্যপদ পেয়েছিলেন, স্মরণ করেন সেই উজ্জ্বল বিকেলের কথা যেদিন বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীদের নিয়ে মাঠে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানো এবং জয় পাওয়া দেখেছিলেন।

ওয়েলস বলেন, ‘ কি চমৎকার আবহ ছিল! ওটা ছিল মুঠোফোন ব্যবহারের শুরুর সময়। আমার মনে পড়ে মানুষজন মুঠোফোনের মাধ্যমে বন্ধুদের ধারাবিবরণী দিয়েছিল। সেখানে বাংলাদেশের চেয়ে পাকিস্তানের সমর্থক বেশি ছিল। নবাগত দল হিসেবে বাংলাদেশ ভালো খেলেছিল বিশেষকরে বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে। আমার ধারণা এর পরের বছরই বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা লাভ করে।’

‘আমরা জিলেট কাপ এবং ন্যাটওয়েস্ট কাপের নক আউট ম্যাচগুলোতে চমৎকার আবহ পেতে অভ্যস্ত ছিলাম। মাঠ দর্শকে প্রায় পুরোপুরি ভরে যেত সেসময়। সেইসাথে এখানে কিছু বড় বড় টি-টোয়েন্টি ম্যাচও অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু ১৯৮১ সালের ন্যাটওয়েস্ট সেমিফাইনাল বাদে সম্ভবত বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচটি ছিল এ মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়া অন্যতম সেরা ম্যাচ।’, যোগ করেন তিনি।

__________

বাংলাদেশের সাজঘরে সবকিছু ঠিকঠাক ছিল না। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে নামার আগের দিনগুলোতে বিসিবি প্রস্তুত হচ্ছিলো দলীয় কোচ গর্ডন গ্রিনিজকে অপসারণ করার জন্য, যিনি দু’বছর আগে মালয়েশিয়ায় আইসিসি ট্রফি জেতা বাংলাদেশ দলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন কিন্তু পরবর্তীতে বোর্ড সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরির সাথে তাঁর মতবিরোধ ঘটে।

গ্রিনিজ ইতোমধ্যে বরখাস্ত হয়ে গেছেন এমন একটি গুজবে ওই দিনটি শুরু হয়েছিল। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে তিন উইকেট তুলে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা খালেদ মাহমুদ সুজন সেদিনের নাটকটি স্মরণ করলেন।

বাংলাদেশ দলের এই বর্তমান ম্যানেজার এবং বোর্ড পরিচালক বলেন, ‘এটা বহুকাল আগের ঘটনা কিন্তু ওই পুরো দিনটি আমার স্মৃতিতে বেশ তাজা রয়েছে। সেদিন একটা ছোট্ট নাটক মঞ্চায়িত হয়। আমরা শুনতে পাই যে আমাদের কোচ গর্ডন গ্রিনিজ দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। তার স্থায়ীত্বের চার বছর আমরা খুব ঘনিষ্ঠ ছিলাম। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের দিন টিম হাডলে তিনি জানান যে এটি তার শেষ ম্যাচ হতে যাচ্ছে।’

মোহাম্মদ রফিক, মিনহাজুল, এনামুল হক এবং ফারুক আহমেদও সেদিন সকালে তাদের অবসরের ঘোষণা দিয়ে দেন। মিনহাজুল এবং ফারুক এরপর আর কখনও বাংলাদেশের হয়ে মাঠে নামেননি যদিও পরের কয়েক বছরের মধ্যে তাদের টেস্ট অভিষেকের পক্ষে নানা ইতিবাচক যুক্তি তর্কের আবির্ভাব ঘটে। এনামুল এবং রফিক টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চাওয়ার জন্য পরবর্তীতে তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। রফিক ছিলেন টেস্টে ১০০ উইকেট তুলে নেয়া প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার।

সময় তখন মাঠে নামার। নিয়মিত সিমার হাসিবুল হোসেন এবং মঞ্জুরুল ইসলাম বিশ্রামে থাকায় নতুন বলটি হাতে তুলে নেন খালেদ মাহমুদ।

খালেদ মাহমুদ বলতে থাকেন, ‘আমি শুরুতেই আউটসুইংগারে শহীদ আফ্রিদির উইকেট তুলে নিই। আফ্রিদি টপ এজ হয় এবং [মেহরাব হোসেন] অপি ক্যাচটি ধরেন। তারপর এলবিডব্লিউয়ের ফাদে ফেলে ইনজামাম উল হক এবং সেলিম মালিকের উইকেট তুলে নিই। আমি মনে করি ইংলিশ আবহাওয়া আমার জন্য উপযুক্ত ছিল। আমার বলে তেমন গতি ছিল না। কিন্তু আমি দুদিক থেকেই সুইং করাতে পারতাম। [শাহরিয়ার হোসেন] বিদ্যুৎ, আকরাম [খান] ভাই এবং [মিনহাজুল আবেদিন] নান্নু ভাই কার্যকরী ইনিংস খেলেছিলেন। [নাইমুর রহমান] দুর্জয় দারুণ একটি রান আউটে কাটা পড়েছিল। আমরা বিশ্বের সেরা দলের মুখোমুখি হচ্ছিলাম কিন্তু আমাদের উপলব্ধি ছিল যে হয়ত ২২৩ রান ডিফেন্ড করার একটা সুযোগ আমাদের আছে। সম্ভবত এটা ছিল টুর্নামেন্টে আমাদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। আমরা এ পুঁজি নিয়েই লড়াই করার চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু ইনিংস বিরতিতে আমার মনে হয় না আমাদের মধ্যে কোন একজনও কল্পনা পর্যন্ত করেছিল যে আমরা তাদের হারাতে যাচ্ছি।’

‘সাঈদ আনোয়ার রান আউট হন এবং আমরা ইনজামাম ও মালিককে সাজঘরে ফেরত পাঠাই। যখন তাদের চতুর্থ উইকেট পড়ে যায় তখন আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করি যে আমরা ম্যাচটা জিততে পারি। প্রত্যেকের শরীরী ভাষা ছিল অসাধারণ। আমি মনে করি যখন ওয়াসিম আকরাম ডিপ স্কয়ার লেগে নান্নু ভাইয়ের হাতে ধরা পড়েন তখন আমাদের জয় কেবল সময়ের অপেক্ষা ছিল মাত্র।’, যোগ করেন তিনি।

যখন তৃতীয় আম্পায়ার শেষ উইকেটের রিপ্লে দেখছিলেন তখন মাহমুদ প্যাভিলিয়ন ভবনের দিকে যাত্রা শুরু করেন। গ্যালারি থেকে নেমে আসা দর্শকরা তাকে প্রায় ঘিরে ফেলেছিল। কোনভাবে তিনি দর্শকদের নাগাল থেকে বেরিয়ে আসেন এবং উৎসাহ নিয়ে কোচ গ্রিনিজের সাথে সাক্ষাৎ করতে যান। কিন্তু নাটকের মোড়ের মত ততক্ষণে কোচের হাতে বরখাস্তের চিঠি পৌঁছে যায়।

মাহমুদ বলেন, ‘আমি জানতাম ওটা আউট ছিল। যখন দেখি মানুষজন সবাই উইকেটের দিকে দৌঁড়ে আসছে আমি পালিয়ে যাই। আমি যখন ঠিক সাজঘরের সিড়ির কাছাকাছি তখন তারা আমাকে ধরে ফেলে। আমি সত্যিই খুব করে চাচ্ছিলাম গর্ডনের সাথে সাজঘরে দেখা করতে। কিন্তু তিনি আর সেখানে ছিলেন না। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই জয়টি ছিল গর্ডনের সাথে আমাদের সাড়ে চার বছর ধরে চরম পরিশ্রম করার ফল।’

তারা যা চেয়েছিলেন শুধু তা-ই পাননি। পাকিস্তানের মত শীর্ষ পর্যায়ের দলকে পরাজিত করায় বোনাসও পেয়েছিলেন। শুধু তিক্ততা ছিল একটাই- গর্ডন গ্রিনিজের বিদায়। কিন্তু সেদিনের পরেও বিসিবির সাথে গ্রিনিজের সাক্ষাৎ হয় এবং বিগত ১২ মাসে বাংলাদেশে দু’বার ভ্রমণ পর্যন্ত করে গেছেন তিনি।

__________

বিশ্বে সুপরিচিত ডেভেলপমেন্ট কোচদের একজন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেন এবং পূর্ণ সদস্যপদ লাভের লড়াইয়ে দলের সফলতা বয়ে আনেন।

বুলবুল বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার জন্য আবেদন করে ফেলি এবং প্রতিটি সংবাদ সম্মেলনে আমি আমাদের সফলতার ঘটনাগুলো তুলে ধরতাম। এই জয় আমাদের টেস্ট মর্যাদা পেতে প্রচুর সাহায্য করেছিল। এটা দলের জড়তা ভাঙ্গতে ব্যাপক অবদান রাখে। আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করি যে আমরা যেকোন পূর্ণ সদস্যের দলকে হারাতে পারি। পাকিস্তান ছিল তখন শীর্ষ দলগুলোর একটি।’

আমিনুল, যিনি বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট শতক হাকানো ব্যাটসম্যান, সবসময় বিশ্বাস করেন এটা কেবল মাত্র সময়ের অপেক্ষা যখন তার দলের জাগরণ ঘটবে এবং কুলীনদের সাথে যোগ দেবে। বললেন,  ‘বিশ বছরের মধ্যে আমরা শ্রীলঙ্কাকে বিশ্বকাপ জিততে দেখেছিলাম। আমরা ওডিয়াইয়ের পেছনে প্রচুর বিনিয়োগ করছি এবং ভালো ফলের পুনরাবৃত্তি দেখছি। আমরা সবচেয়ে অভিজ্ঞ দলগুলার একটা এবং বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার আমরা তৈরি করেছি। আমাদের খেলোয়াড়রা এখন বাকিদের কাছ থেকে সম্মানটা আদায় করে নিচ্ছে।’

‘আমাদের অগ্রগতি স্বাভাবিক এবং আমাদের খেলোয়াড়রা এই টুর্নামেন্টে বেশ পরিচিত। আমরা যদি এখন বিশ্বকাপ জিততে পারতাম আমি হয়ত বলতাম আমরা অস্বাভাবিক কিছু অর্জন করেছি।’, যোগ করেন তিনি।

মিনহাজুল, মাহমুদ এবং আমিনুল ওই উল্লেখিত ম্যাচটাকে আলোকিত করেছে। বাংলাদেশ সেদিন ইতিহাস পাতায় নাম লিখিয়েছিল। এবং সেইসাথে ছোট্ট শহর নর্দাম্পটনও।

– ইএসপিএন ক্রিকইনফো অবলম্বনে

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...