প্রচণ্ড রকমের ভালবাসাহীনতায় ভুগছেন জোসেফ মারিয়া বার্তেমেউ, বার্সেলোনা ক্লাবের সভাপতি। সমর্থকরা তাঁর প্রতি নাখোশ গেল মৌসুমের পুরোটা সময় ধরেই ছিল। আর লিওনেল মেসির বিদায়ের ঘোষণা আসার পর সেই নাখোশ হওয়াটা ক্রোধের আগুনে রূপান্তরিত হয়।
আর সেই আগুনে ঘিঁ ঢালেন মেসি। ৭০০ মিলিয়ন ইউরোর আকাশচুম্বি রিলিজ ক্লজ এড়িয়ে তিনি আরেকটি মৌসুম ক্লাবেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গোল.কমকে বলা মেসির প্রতিটা কথায় এটা পরিস্কার যে ক্লাবের ম্যানেজমেন্ট ও ক্লাব সভাপতির প্রতি তিনি যারপরনাই ক্ষেপে আছেন।
নানা রকম বির্তক, অন্যায় আর দুর্নীতি তো আছেই। সাথে, বায়ার্নের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৮-২ গোলের ক্ষত এখনও শুকায়নি। সব মিলিয়ে কুকীর্তির পাহাড় জমিয়ে বিরাট বিপাকে পড়েছেন বার্তেমেউ ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা।
- মেসি-বার্তেমেউ মুখোমুখি
কেবল আইনী লড়াইয়ে বার্সেলোনাকে টানতে চাননা বলেই মেসি আরেকটা মৌসুম ক্লাবটিতে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর ফলে সমর্থকরা তাঁকে এখনো মণিকোঠায় রাখলেও বার্সেলোনা ম্যানেজমেন্ট সেই জায়গা হারিযেছে। পাল্লাটা এখন মেসি সমর্থকদেরই ভারি। তারা এখন বার্তেমেউয়ের পদত্যাগ ছাড়া অন্য কোনো কিছুই ভাবছে না।
মেসির সাথে ক্লাবটির সম্পর্ক ১৯ বছরের, সেখানে বার্সেলোনা সভাপতি কিংবা বার্সেলোনার ম্যানেজমেন্ট – কোনো কিছুই সমর্থকদের কাছে বড় কিছু নয়। আর যেখানে মেসি ক্লাবের ম্যানেজমেন্টের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, সেখানে সমর্থকরাও চুপ নেই। তাঁদের চোখে বার্তেমেউই ভিলেন।
- বার্সাগেট কেলেঙ্কারি
বার্সেলোনাতে এই যাত্রায় থেকে যাচ্ছেন মেসি। তবে, তাতে বার্তেমেউয়ের গদি টিকবে – এমন ভাবার কারণ নেই। ফুটবল এস্পানা জানিয়েছে, দুর্নীতির দায়ে কাতালান পুলিশ গ্রেফতারও করতে পারে বার্তেমেউকে।
তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, তিনি ক্লাবের নাম ব্যবহার করে নীতিবহির্ভূত কায়দায় আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন। ক্লাবের অনেকগুলো ডিলে তিনি নিজের লাভটাই আগে দেখেছেন। বলা হচ্ছে বার্সাগেট কেলেঙ্কারির মূল হোতা বার্তেমেউ।
- মেসিদের ইমেজে চুনকালি
খুব বেশি আগের কথা নয়, যখন মেসিদের ইমেজ নষ্ট করার জন্য আঙুল উঠেছিল বার্তেমেউয়ের দিকে। সভাপতি একটা থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিয়েছিল, যারা বিভিন্ন রকমের গুজব ছড়িয়ে মেসি-পিকেদের ইমেজ নষ্ট করতো। স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা সেই ব্যাপারে বিস্তারিত প্রতিবেদন করেছিল।
তাঁদের এই অনৈতিক প্রক্রিয়াতে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল জাভি, কার্লোস পুয়োল ও পেপ গার্দিওলাদের মত ক্লাব কিংদন্তিরা। ছিলেন সভাপতি পদপ্রার্থী আগুস্তি ব্যানেদিতো ও ভিক্টর ফন্ট। এই কাজটা করা হত ফেসবুক ও টুইটারের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে।
- ম্যানেজমেন্টের অভিযোগ অস্বীকার
বার্তেমেউ ও বার্সা ম্যানেজমেন্ট অবশ্য বরাবরই নানারকম অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। যদিও, তদন্তে উঠে এসেছে যে, বাজারদর থেকে ছয়গুণ দাম দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানটিকে ইমেজ নষ্টের স্বার্থে ব্যবহার করেছিল বার্তেমেউ গ্যাং। ফেব্রুয়ারিতে এই কথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন বার্তেমেউ। তবে, এখন মেসি কাণ্ডের পর সেই স্মৃতিচারণা হচ্ছে বারবার। ফলে, বার্তেমেউয়ের বিপদ আরো তীব্র হচ্ছে ক্রমেই।