ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের দলটা কেমন হবে, এ নিয়ে কৌতুহল ছিলো। শেষ পর্যন্ত প্রাথমিক দল ঘোষনার পর দেখা গেলো, অভিজ্ঞদের পাশাপাশি তরুণরাও বেশ জায়গা পেয়েছেন এই দলে। ২০২৩ বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে তারুণ্য নির্ভর দল ঘোষণা করেছে নির্বাচকরা।
প্রথম বারের মতো জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী শরিফুল ইসলাম ও পারভেজ হোসেন ইমন। এছাড়াও শেখ মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ ও হাসান মাহমুদের মতো তরুণেরাও ডাক পেয়েছেন প্রাথমিক দলে। আছেন ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি। তরুণদের জায়গা ছেড়ে দিতে বাদ পড়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।
এই সিরিজ দিয়েই বিশ্বকাপের পরিকল্পনা শুরু করবে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন, ‘এই সিরিজটা শুরু করছি এখন। এই সিরিজটার কথাই বলি। মাশরাফি ছাড়া এই সিরিজটা শুরু করছি। ২০২৩ বিশ্বকাপে ফোকাসটা রেখেই আমাদেরকে টিম ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান দিয়েছে। ভিশন ২০২৩, ওই ভিশন মাথায় রেখে ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আমরা একসঙ্গে হয়ে আগাচ্ছি।’
২০২৩ বিশ্বকাপের চিন্তা মাথায় রেখে দলে ডাকলেও এখনই তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য বিবেচোনা করা হবে না। বরং তাদের গড়ে তোলার জন্য আরো সুযোগ দেওয়ার পক্ষে প্রধান নির্বাচক।
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ওদেরকে হাইলি রেট করি। স্পেশালি এইচপি তে যে খেলোয়াড়রা আছে ওদেরকে কিন্তু আমরা যে জায়গায় চিন্তা ভাবনা করছিলাম লাল বল, সাদা বলে আলাদা ভাবে ওদেরকের গড়ে তোলার জন্য। ঠিক ওভাবেই কিন্তু আমরা গড়ে তুলছি। কিছু খেলোয়াড় যথেষ্ট নজর কেড়েছে। একটু আমরা সময় দিতে চাচ্ছি। তাদের এখনই জাতীয় দলের জন্য বিবেচনা করছি না। আমার বিশ্বাস এই পাইপলাইন থেকে আমরা ভালো কিছু খেলোয়াড় পাব এবং সামনে আয়ারল্যান্ড আসছে । আয়ারল্যান্ড এ টিম ,হাইপারফরম্যান্স ইউনিট। আমরা আশা করি তখন কিছু খেলোয়াড়কে লাল বল সাদা বলে আলাদা ভাবে তৈরি করবো।’
তরুণদের গড়ে তুলতে সুযোগ দেওয়ার পক্ষে আরেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমনও। তিনি বলেন, ‘শুধু এই ম্যাচগুলো (বঙ্গবন্ধু কাপ) না, আমরা কিন্তু এদের অনেকদিন ধরে ফলো করছি। আমাদের হাই পারফম্যান্সের যে প্লেয়ারগুলো দেখছেন তারা কিন্তু দুই বছর ধরে আছে, নতুন অনুর্ধ্ব ১৯ থেকে নতুন একটা ইউনিট যুক্ত হয়েছে। ওরা এখানে সুযোগ পেয়েছে ওদেরকে সামনে দেখব। আর যারা এই দলে আছে আপনারা দেখেন তারা কিন্তু কম বেশি তিন চার বছর ধরে আমাদের পাইপলাইনে আছেন। তাদেরকে আমরা ধীরে ধীরে গড়ে তুলছি।’
দলের ব্যালেন্স ঠিক রাখতে এইচপি ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটারদের পর্যায়ক্রমে সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাবিবুল বাশার। তিনি বলেন, ‘এই জন্য আমরা ছোট ছোট করে একটা একটা করে টিমে অন্তভূক্ত করছি যাতে ব্যালেন্সটা ঠিক থাকে। আর যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে হয়ত আমরা সামনে অনেক খেলা পাবো ন্যাশনাল টিমের বাইরে এইচপি, এ দলের খেলা পাবো। সেক্ষেত্রে এই নতুন প্লেয়ারদের গড়ে তুলতে আমাদের অনেক সুবিধা হবে। কিন্তু এখন যে অর্ন্তভূক্তিটা হয়েছে তা গত ২/৩ বছরের উপর ভিত্তি করে; শুধু এই টুর্নামেন্টের উপর নির্ভর করে না।’
আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে সুযোগ পেয়েছেন শরিফুল ইসলাম ও পারভেজ হোসেন ইমন। এই দুই তরুণকে নিয়ে সুমন বলেন, ‘দেখুন এটা কিন্তু আমাদের প্রাথমিক স্কোয়াড। এখানে নতুন যারা আছে তারা কিন্ত এই রিসেন্ট টুর্নামেন্টটায় এবং তার আগের টুর্নামেন্টটায় ভালো করেছে। শরিফুল কিন্তু অনেক বছর ধরে ভালো খেলছে। এমনকি শরিফুল কিন্তু আমাদের এ দলেও খেলে এসেছে। এরা কিন্তু আমাদের পাইপলাইনে আছে অনেকদিন ধরে।’
ইমন সম্পর্কে সুমন বলছিলেন, ‘ইমন আমার দেখা এক্সসাইটিং ট্যালেন্ট। ওকে আমরা সুযোগ দিচ্ছি যাতে আরো দ্রুত রেডি করা যায়। ফিউচারে যেন ওকে আমরা কাজে লাগাতে পারি। আমরা যে দুটো প্রাকটিস ম্যাচ খেলব ১৪ আর ১৬ সেখানেও আমাদের একটা দল গঠন করতে হবে। এই ছেলেদের আমরা সুযোগ দিচ্ছি যাতে এদের সাথে খেলে ওরা নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে।’