আত্মবিশ্বাসের খাতা খোলা রান বন্যা

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ টুর্নামেন্টটি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট এটি৷ মিডিয়া কাভারেজের পাশাপাশি দর্শকদেরও বিশেষ আগ্রহ থাকে এই টূর্নামেন্টের প্রতি। সীমিত ওভারের এই টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স একজন ক্রিকেটারের আন্তজার্তিক ভবিষ্যৎ নির্ধারন করে দিতে পারে।

তাই তরুণ ক্রিকেটারসহ জাতীয় দলের আশেপাশে থাকা খেলোয়াড়দের জন্য ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মঞ্চ। গত এক দশকের মত এ বছরও অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের আসর। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে প্রথম পর্বের খেলা। পয়েন্ট টেবিলের উপরের ছয়টি দল এবার খেলবে দ্বিতীয় পর্ব বা সুপার লিগে।

প্রথম পর্বে ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন বেশ কয়েকজন। এদের মধ্যে জাকির হাসানের মত তরুণেরা যেমন আছেন, আছেন এনামুল বিজয়ের মত বাদ পড়া ক্রিকেটারও। তাদের মধ্যে সেরা কয়েকজন রান সংগ্রাহকদের নিয়ে আজকের আয়োজন।

  • নাঈম ইসলাম

বয়সের বিবেচনায় প্রায় বুড়ো হয়ে যাওয়া নাঈম ইসলাম অনেকদিন ধরেই আলোচনার বাইরে। কিন্তু এবারের ডিপিএলে ব্যাট হাতে পারফরম্যান্স করে একেবারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছেন তিনি।

১০ ম্যাচে ৭৪৯ রান করে নাঈম ইসলাম আছেন সর্ব্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সবার উপরে। ২টি শতকের পাশাপাশি করেছেন পাঁচটি অর্ধশতক। ব্যাটিং গড়টাও ঈর্ষনীয়; ৮৩.২২!

  • এনামুল হক বিজয়

লম্বা সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে থাকা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের নতুন করে উত্থান ঘটেছে এবারের ডিপিএলে। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে খেলা এনামুল হক বিজয় পুরো আসরে খেলেছেন ১০ ম্যাচে।

৭২.৮০ গড়ে রান করেছেন ৭২৮। তার স্ট্রাইক রেটও চোখে পড়ার মতই, প্রায় ৯৮! নাঈম ইসলামের মত এনামুলের ঝুলিতেও রয়েছে পাঁচটি অর্ধশতক এবং দুইটি শতক।

  • জাকির হাসান

অনূর্ধ্ব ১৯ পর্যায় থেকে সম্ভাবনময়ী ব্যাটসম্যান হিসেবে বেড়ে উঠেছেন জাকির হাসান। তবে একটিমাত্র টি-টোয়েন্টি খেলা জাকির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনও বলার মত সুযোগ পাননি।

চলতি ডিপিএলেও তার ব্যাটে রয়েছে রানের ফোয়ারা। ডিপিএলের নতুন দল রুপগঞ্জ টাইগার্স ক্লাবের হয়ে খেলেছেন জাকির। প্রায় ৪৯ গড়ে ১০ ম্যাচে করেছেন ৪৮৭ রান৷ দুইটি করে সেঞ্চুরি এবং হাফসেঞ্চুরি করা এই তরুনের স্ট্রাইক রেট ১০০ ছুঁই ছুঁই।

  • মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত

বর্তমান বাংলাদেশ ক্রিকেটে দলের বাইরে থাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে অন্যতম নাম মোসাদ্দেক সৈকত। এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার এবারের ডিপিএলে ছিলেন ঢাকা আবাহনী’র অধিনায়ক। সেরা ব্যাটসম্যানের তালিকায়ও চার নম্বরে রয়েছেন তিনি।

আবাহনীর মিডল অর্ডার সামলানোর দায়িত্বে থাকা সৈকত করেছেন ৪৭৭ রান। স্ট্রাইক রেট ৯২.৬২ আর গড়টা ৫৩। কোন শতক না থাকলেও পাঁচম্যাচেই হাঁকিয়েছেন অর্ধশতক। ক্যাপ্টেন লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট – এর আদর্শ বাস্তবায়ন বটে।

  • অমিত হাসান

উপরের চারটি নামের তুলনায় কিছুটা অপরিচিত বটে অমিত হাসান। খেলাঘর সমাজকল্যাণ দলের হয়ে খেলা অমিত হাসান অবশ্য বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্য ছিলেন।

এবারের ডিপিএলে ৫৮ এর একটু বেশি গড়ে ৪৬৫ রান করেছেন অমিত। তিনটি হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি করেছেন একটি সেঞ্চুরি। তবে সতীর্থদের সমর্থনের অভাবে দলকে নিয়ে যেতে পারেননি সুপার লিগে।

  • চিরাগ জানি

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে ডিপিএলে খেলতে এসেছেন ভারতীয় অলরাউন্ডার চিরাগ জানি। নিয়মিত ব্যাট হাতে অবদান রাখা চিরাগ জানি ইতোমধ্যে ৪৮.৩৩ গড়ে রান করেছেন ৪৩৫। তিনটি ফিফটি এবং একটি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।

এদের ছাড়াও মেহেদী মারুফ, সাইফ হাসান, আশিক-উল-আলম, ইমরুল কায়েস রয়েছেন সেরা ব্যাটসম্যানের তালিকার উপরের দিকে। বিদেশিদের মধ্যে চিরাগ জানি ছাড়াও রয়েছেন জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link