টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থা বেশ হতাশাজনক। বাকি দুই ফরম্যাটে প্রতিরোধ গড়তে পারলেও সাদা পোশাকে বরাবরই বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ। বোলারদের জন্য বাংলাদেশ দল আজো যেন সহজ এক প্রতিপক্ষ।
সদ্য শেষ হওয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টেই ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়েছেন স্পিনার সাজিদ খান। টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেরা বোলিং ফিগারও এখন তাঁর।
সাদা পোশাকে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেরা বোলিং ফিগার নিয়েই আজকের আলোচনা। চলুন দেখে নেই সাদা পোশাকে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছেন কারা –
- সাজিদ খান: ৮/৪১ (মিরপুর, ২০২১)
চট্রগ্রাম টেস্টে জয়ের পর দ্বিতীয় টেস্ট বৃষ্টি বাধায় এগোতে থাকে ড্র’য়ের দিকেই। কিন্তু সাজিদ খানের ম্যাজিকেল স্পেলে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৮৭ রানেই গুড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। ইনিংসে একাই ৮ উইকেট শিকার করেন সাজিদ। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে যেকোনো বোলারের এটি সেরা বোলিং ফিগার। সাজিদের ঘূর্নিতেই মরা ম্যাচে যেনো প্রাণ ফিরে পায়। ক্যারিয়ারে মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলা সাজিদের এটিই এখন পর্যন্ত সেরা বোলিং ফিগার। মাত্র ৪১ রানে তিনি ৮ উইকেট শিকার করেন।
- স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল: ৮/১০৮ (ফতুল্লা, ২০০৬)
২০০৬ সালে খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১০৮ রানে ৮ উইকেট শিকার করেন অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল। ওই টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩ উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে যেকোনো বোলারের এটিই ছিলো সেরা বোলিং ফিগার। ওসেই রেকর্ড ভেঙ্গে পাকিস্তানের সাজিদ খান এখন বাংলাদেশের বিপক্ষে সেরা বোলিং ফিগারের অধিকারী।
- ক্রিস কেয়ার্নস: ৭/৫৩ (হ্যামিল্টন, ২০০১)
২০০১ সালে সেডন পার্কে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১ উইকেট শিকারের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট শিকার করেন নিউজিল্যান্ডের পেসার ক্রিস কেয়ার্নস। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ৭ উইকেট শিকার করেন তিনি। সেই ম্যাচে কেয়ার্নসের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে বাংলাদেশকে ইনিংস ও ৫২ রানে হারিয়ে ম্যাচে জয় পায় নিউজিল্যান্ড। অবশ্য প্রথম ইনিংসে ১৪৩ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলা মার্ক রিচার্ডসন নির্বাচিত হন ম্যাচ সেরা।
- দানিশ কানেরিয়া: ৭/৭৭ (বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, ২০০২)
সাল ২০০২। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে পাকিস্তানি স্পিনার দানিশ কানেরিয়ার স্পিন বিষে নীল হয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং শিবির। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ৪৯০ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ওয়াকার ইউনুসের ৬ ও কানেরিয়ার ২ উইকেটে ১৬০ রানেই শেষ বাংলাদেশ। এরপর ফলো অনে পড়ে ব্যাট করতে নেমে কানেরিয়ার ৭ উইকেট শিকারে মাত্র ১৫২ রানেই গুড়িয়ে যায় স্বাগতিকরা। ৭৭ রানে ৭ উইকেট নেন কানেরিয়া।
- জহির খান: ৭/৮৭ (মিরপুর, ২০১০)
২০১০ সালে মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে গতি আর স্যুইংয়ের ঝড় তুলেন ভারতীয় পেসার জহির খান। প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে জহির একাই শিকার করেন ৭ উইকেট। জহিরের তোপে প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ গুড়িয়ে যায় মাত্র ৩১২ রানে। ১০ উইকেটের জয়ে ম্যাচ সেরা হন জহির খান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন জহির।