গতকাল শেষ হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের এবারের আসর। যেখানে টানা তৃতীয় বারের মত চ্যাম্পিয়ান হয়েছে আবাহনী। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের হওয়া এবারের আসরে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সাথে সমান তালে পারফরম্যান্স করেছেন তরুণ ক্রিকেটাররা। পিছিয়ে ছিলেন না ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফর্মাররাও।
এই সেরাদের ভিতর থেকেই আমরা নির্বাচন করেছি আমাদের সেরা একাদশ। আমাদের একাদশের নেতৃত্বে রয়েছেন শেখ জামালের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। দেখে নেওয়া যাক একাদশের বাকি সদস্যদের।
- মিজানুর রহমান
এবারের আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মিজানুর। ব্রাদার্স ইউনিয়নের এই ওপেনার ১১ ম্যাচে ৫২.২৫ গড়ে ১৩৩.৯৭ স্টাইকরেটে করেছেন ৪১৮ রান। টুর্নামেন্টের প্রথম সেঞ্চুরিও এসেছিল তার ব্যাট থেকেই। একটি সেঞ্চুরির সাথে রয়েছে তিনটি হাফ সেঞ্চুরি। আমাদের একাদশের ওপেনারের দায়িত্বও সামলাবেন তিনিই।
- শেখ মেহেদী হাসান
মেহেদী মূলত একজন অফ স্পিনার এবং যে কিনা শেষের দিকে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে পারেন। কিন্তু গাজী গ্রুপ তাকে সুযোগ দিয়েছে ইনিংস উদ্বোধন করার। আর সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করেছেন এই অলরাউন্ডার। ১৭ ম্যাচে ১৪৩.৭২ স্টাইকরেটে ৩৫৫ রান সংগ্রহ করেছেন মেহেদী। যেখানে ৫৮ বলে ৯২ রান তার সর্বোচ্চ। এছাড়া বল হাতেও ৬.২৪ ইকোনোমিতে শিকার করেছেন ১৮ উইকেট। আমাদের একাদশের দ্বিতীয় ওপেনার তিনিই।
- মাহমুদুল হাসান জয়
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী এই ব্যাটসম্যান সব সময়ই ধারাবাহিক। ব্যাতিক্রম ছিলেন না ডিপিএলেও। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন ওল্ড ডিওএইচএসের এই ব্যাটসম্যান। ১৩ ম্যাচে ৪৩.৫৫ গড়ে ১২১.৩৬ স্টাইকরেটে ৩৯২ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি। আমাদের একাদশের তিন নম্বরে দেখা যাবে তাকেই।
- মুমিনুল হক
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এখনো নিজকে মেলে ধরতে না পারা বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক এবারের আসরে দেখিয়েছেন নিজের অন্য রূপ। গাজী গ্রুপের হয়ে ১৭ ম্যাচে ৩৫ গড়ে সংগ্রহ করেছেন তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩৮৫ রান। সেরা ইনিংস ৫৩ বলে ৭৮ রানের। প্রায় প্রতি ম্যাচেই তার ইনিংস গাজী গ্রুপকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছে। আমাদের একাদশের হয়ে চার নম্বরে ব্যাট করতে নামবেন তিনিই।
- মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
আমাদের একাদশের পাঁচ নম্বর পজিশনের জন্য মাহমুদউল্লাহর সাথে বিবেচনায় ছিলেন সাইফ হাসান, নাঈম শেখ ও মোহাম্মদ মিঠুন। সবারই রান ৩৫০ এর উপরে ছিল। এই পজিশনে গাজী গ্রুপের হয়ে ১৭ ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ সংগ্রহ করেছেন ২০৮ রান ও বল হাতে ৬.৩৪ ইকোনোমিতে শিকার করেছেন ১৭ উইকেট। একজন অতিরিক্ত বোলার খেলাতে আমরা বিবেচনায় নিয়েছি মাহমুদউল্লাহকেই।
- নুরুল হাসান সোহান
১৬ ম্যাচে ৩৫.৩৬ গড়ে ১৪৯.৬১ স্টাইকরেটে ৩৮৯ রান সংগ্রহ করে এবারের আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শেখ জামালের অধিনায়ক। প্রায় প্রতি ম্যাচেই শেষের দিকে ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন তিনি। আমাদের একাদশকেও নেতৃত্ব দিবেন সোহান। আর উইকেটের পিছনে দায়িত্বটা থাকবে তার হাতেই।
- শামিম পাটোয়ারি
এবারের আসরে শেষের দিকে নিয়মিত কার্যকরি ইনিংস খেলেছেন যে কয়েক জন ব্যাটসম্যান তাদেরই একজন শামিম পাটোয়ারি। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী এই ক্রিকেটার এবারের আসরে প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে ১৭ ম্যাচে ১৪৬.৩৮ স্টাইকরেটে সংগ্রহ করেছেন ২৪৩ রান। আমাদের একাদশের সাত নম্বর পজিশনে দেখা যাবে তাকেই।
- মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন
এবারের আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী তিনি। আবাহনীর হয়ে ১৬ ম্যাচে ৬.৭৯ ইকোনোমিতে শিকার করেছেন ২৬ উইকেট। এছাড়া শেষের দিকে ব্যাট হাতে ঝড়ো কিছু ইনিংসও রয়েছে তার। প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে অঘোষিত ফাইনালে হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
- কামরুল ইসলাম রাব্বি
টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী এই পেসার। প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে ১৭ ম্যাচে শিকার করেছেন ২৫ উইকেট। এছাড়া শেষের দিকে একটি ঝড়ো ইনিংসও রয়েছে তার। আমাদের একাদশের পেস বোলিং বিভাগের নেতৃত্ব দিবেন তিনিই।
- শরিফুল ইসলাম
সাইফউদ্দিন ও রাব্বির সাথে আমাদের একাদশে তৃতীয় পেসার হিসাবে জায়গা পেয়েছেন শরিফুল। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে ১৬ ম্যাচে ৭.১৩ ইকোনোমিতে এই তরুণ পেসার শিকার করেছেন তৃতীয় সর্বোচ্চ ২২ উইকেট।
- তানভির ইসলাম
আমাদের একাদশে একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসাবে জায়গা পেয়েছেন তানভির ইসলাম। এবারের আসরে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে ১১ ম্যাচে মাত্র ৪.৭৯ স্টাইকরেটে ২০ উইকেট শিকার করেছেন এই স্পিনার।
- জিয়াউর রহমান (দ্বাদশ ব্যক্তি)
আমাদের একাদশের দ্বাদশ ব্যক্তি হিসাবে থাকবেন অলরাউন্ডার জিয়াউর রহমান। শেখ জামালের হয়ে ১৬ ম্যাচে ১৫৭.১৪ স্টাইকরেটে ২০৯ রান সংগ্রহ করেছেন জিয়াউর এবং বল হাতে ১৬ ম্যাচে শিকার করেছেন ১৮ উইকেট।
একাদশ:
মিজানুর রহমান
শেখ মেহেদী হাসান
মাহমুদুল হাসান জয়
মুমিনুল হক
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
নুরুল হাসান সোহান (অধিনায়ক)
শামিম পাটোয়ারি
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন
কামরুল ইসলাম
তানভির ইসলাম
শরিফুল ইসলাম
জিয়াউর রহমান (দ্বাদশ ব্যক্তি)