টেস্টের বিশ্বকাপ শেষ, তবু রেশ রয়ে যায়। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসর সফলভাবে শেষ হয়ে গেলেও এর আমেজ রয়ে গেছে এখনো। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের টেকনিক্যাল দিক নিইয়ে নানা সমালোচনা থাকলেও শেষটা মন জয় করে নিয়েছে সব ক্রিকেট ভক্তেরই। হয়তো সামনের আসর গুলোতে আরো জমে উঠবে লাল বলের ক্রিকেট।
ফাইনাল ম্যাচে নিউজিল্যান্ড জয় পেলেও দুই দলের ক্রিকেটাররাই তাঁদের সেরাটা দিয়েছেন। ফলে বেশ উপভোগ্য একটি ম্যাচই পেয়েছে ক্রিকেটবিশ্ব। ফাইনালে এই দুই দলের সেরা ক্রিকেটারদের নিয়ে তাই একটি একাদশ করার চেষ্টা।
- রোহিত শর্মা (ভারত)
দেশের বাইরে টেস্ট ক্রিকেটে রোহিত শর্মার পারফর্মেন্স নানা সময়েই প্রশ্ন উঠেছে। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে একেবারে হতাশ করেননি ভারতের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান। তবে এবারো বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি। যদিও প্রথম ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের জন্য ভয়ংকর এক কন্ডিশনে কিউই বোলারদের সামলেছিলেন এই ওপেনার। কঠিন সময়ে দলের জন্য খেলেছিলেন ৩৪ রানের মূল্যবান এক ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসেও করেছিলেন ৩০ রান। তবে দুইবারই নিজের ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হয়েছেন রোহিত শর্মা। তবুও লো স্কোরিং ম্যাচে এই ইনিংস গুলো খেলেই একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
- ডেভন কনওয়ে (নিউজিল্যান্ড)
স্বপ্নের মত করে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু করেছেন কনওয়ে। লর্ডসে নিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচেই করেছেন ডাবল সেঞ্চুরি। এরপর টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপে লো স্কোরিং ফাইনাল ম্যাচে খেলেছেন ৫৪ রানের মহামূল্যবান এক ইনিংস। ক্যারিয়ারে মাত্র তৃতীয় টেস্টেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বনে গেলেন এই ক্রিকেটার।
- কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড)
ফাইনাল ম্যাচের সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন নিউজিল্যান্ডের এই অধিনায়ক। প্রথম ইনিংসে তিনি আউট হয়েছিলেন ৪৯ রানে। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে রস টেলরকে সাথে নিয়ে পুরো ম্যাচ নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে এসেছিলেন এই ব্যাটসম্যান। বড় ম্যাচের চাপ সামলে একেবারে সত্যিকার ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিয়ে দলকে চ্যাম্পিয়ন করে তবেই মাঠ ছেড়েছেন।
- বিরাট কোহলি (ভারত)
ভারতের এই অধিনায়ক নিজের স্বভাবসূলভ ব্যাটিং করতে না পারলেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলের হাল ধরেছিলেন। প্রথম ইনিংসে দ্রুত তিন উইকেট পড়ে গেলেও নিউজিল্যান্ডের বোলারদের সামলে গেছেন কোহলি। ভালো বলকে সম্মান জানিয়ে খারাপ বল গুলোর জন্য অপেক্ষা করেছেন। প্রথম ইনিংসে ৪৪ রান করে দলকে একটা সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন ভারতের এই অধিনায়ক।
- রস টেলর (নিউজিল্যান্ড)
নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানও ছিলেন এই ম্যাচের বড় পারফর্মার। নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে পরপর দুটি উইকেট পড়ে যাবার পর উইলিয়ামসনের সাথে দলের হাল ধরেছিলেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। ৪৭ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলে দলকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন এই ব্যাটসম্যান।
আজিঙ্কা রাহানে (ভারত)
টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের অন্যতম অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রাহানে। ফলে ফাইনাল ম্যাচে তাঁকে নিয়ে আশাও ছিল অনেক। দুই ইনিংসেই ভালো ব্যাটিং করছিলেন তিনি। তবে দুইবারই নিজের উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন এই ব্যাটসম্যান। তবুও প্রথম ইনিংসে তাঁর ৪৯ রানের ইনিংস তাঁকে এই একাদশে জায়গা করে দিয়েছে।
- রবিচন্দ্রন অশ্বিন (ভারত)
পেস বোলিং কন্ডিশনেও ভারতের বোলিং অ্যাটাকের মূল ভরসা ছিলেন অশ্বিন। ফাইনাল ম্যাচে দুইবারই নিউজিল্যান্ডের ওপেনিং জুটি ভেঙেছেন তিনি। এই ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে মোট ৪ টি উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের দুই উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে খানিকক্ষন জয়ের আশা দেখিয়েছিলেন এই স্পিনার। এছাড়া পুরো টেস্ট চ্যাপিয়নশিপেরই সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি অশ্বিন।
- কাইল জেমিসন (নিউজিল্যান্ড)
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের ম্যান অব দ্য ম্যাচ কাইল জেমিসন তো এই একাদশে থাকবেনই। দুই ইনিংসেই ভারতের অধিনায়িক বিরাট কোহলিকে ফিরিয়েছেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট সহ পুরো ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে মোট ৭ উইকেট।
টিম সাউদি (নিউজিল্যান্ড)
পুরো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অসাধারণ বোলিং করেছেন নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞ এই পেসার। ফাইনাল ম্যাচেও ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। দুই ইনিংসে তাঁর ঝুলিতে আছে ৫ টি উইকেট। এছাড়া এমন লো স্কোরিং ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ৩০ টি মূল্যবান রান।
- মোহম্মদ শামি (ভারত)
ফাইনাল ম্যাচে ভারতের সবচেয়ে সফল ও ভয়ানক ক্রিকেটার ছিলেন মোহম্মদ শামি। প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের মিডল অর্ডার একাই ধবসিয়ে দিয়েছিলেন শামি। প্রথম ইনিংসে এই পেসার
- ট্রেন্ট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড)
জেমিসন ও সাউদিদের ভীড়ে ফাইনাল ম্যাচের আলোচনায় একটু চাপা পড়ে গিয়েছেন বোল্ট। যদিও ফাইনাল ম্যাচে তিনিও নিয়েছেন ৫ টি উইকেট। তাঁর ঝুলিতে আছে চেতেশ্বর পূজারা, আজিঙ্কা রাহানে ও ঋষাভ পান্তদের উইকেট।