পার্টটাইমারদের স্মরণীয় স্পেল

দলে যখন মূল বোলাররা উইকেট নিতে হিমশিম খায় তখন অধিনায়কের ভরসার পাত্র হয়ে ওঠেন পার্ট টাইমাররা। অবশ্য অনেক পার্ট টাইম বোলারই ক্যারিয়ারে বল হাতে বেশ সফলতা অর্জন করেছে। কেউ কেউ পরবর্তীতে অলরাউন্ডার তকমাও গায়ে জড়িয়েছেন।

দলে যখন মূল বোলাররা উইকেট নিতে হিমশিম খায় তখন অধিনায়কের ভরসার পাত্র হয়ে ওঠেন পার্ট টাইমাররা। অবশ্য অনেক পার্ট টাইম বোলারই ক্যারিয়ারে বল হাতে বেশ সফলতা অর্জন করেছে। কেউ কেউ পরবর্তীতে অলরাউন্ডার তকমাও গায়ে জড়িয়েছেন।

সাবেক ভারতীয় কিংবদন্তি শচিন টেন্ডুলকারকে সবাই তাঁর ব্যাটিং রেকর্ডের জন্য জানলেও বল হাতে তার উইকেট সংখ্যা কোনো অলরাউন্ডারের তুলনায় নেহাৎ কমও নয়৷ যদিও তিনি পুরোটা সময় একজন সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবেই সুনাম অর্জন করেছেন।

এছাড়া যুবরাজ সিং ছিলেন যিনি পরবর্তীতে জেনুইন অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। বর্তমানে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মঈন আলীরা এই তালিকায় আছেন যাদের ভূমিকা মূলত ব্যাটিং হলেও বল হাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করছেন।

তবে, আজ যাদের কথা বলবো, তাঁরা একটু ভিন্ন। মূলত ব্রেক থ্রু আনতে কখনো কখনো তাঁরা বোলিং আক্রমণে আসলেও দুই-একবার যখন জ্বলে উঠেছেন – তখন গড়েছেন ইতিহাস।

  • জো রুট (ইংল্যান্ড): ৫/৮, প্রতিপক্ষ ভারত, ২০২১

সম্প্রতি ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজে আহমেদাবাদে তৃতীয় টেস্টে ৮ রানে পাঁচ উইকেট শিকার করেন জো রুট। প্রথমে ব্যাট করে ইংলিশরা আউট হয় মাত্র ১১২ রানে! এরপর জো রুটের ফাইফরে ভারত গুটিয়ে যায় ১৪৫ রানেই।

এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে অক্ষর প্যাটেল ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের দ্বৈতভাবে নয় উইকেট শিকারে মাত্র ৮১ রানেই গুড়িয়ে যায় সফরকারীরা। মাত্র ৪৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১০ উইকেটের বড় জয় পায় স্বাগতিকরা। ইংল্যান্ড সেই ম্যাচে হারলেও রুটের সেই স্পেল একজন বিদেশি বোলার হিসেবে সেরা স্পেল ছিলো।

  • মাইকেল ক্লার্ক (অস্ট্রেলিয়া): ৬/৯, প্রতিপক্ষ ভারত, ২০০৪

২০০৪ সালে মুম্বাইয়ে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার এক টেস্টে মাত্র ৯ রানেই ৬ উইকেট শিকার করেন মাইকেল ক্লার্ক। সচরাচর বল হাতে তাকে দেখা যায়না বললেই চলে। পার্ট টাইমার হিসেবে প্রতিপক্ষের জুটি ভাঙ্গতে মাঝে মাঝে বল করেন তিনি। তবে সেই টেস্টে তার ৬ উইকেট শিকারে মাত্র ১০১ রানেই গুড়িয়ে যায় ভারত। জবাবে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ২০৩ রানে অলআউট হয়! যেখানে অনিল কম্বলে পাঁচ ও মুরালি কার্তিক শিকার করেন চার উইকেট।

জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৫ রান সংগ্রহ করে ভারত। ১০৬ রানের সহজ লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে হরভজন সিং ও মুরালি কার্তিকের ঘূর্নিতে ভারত তাদের টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সেরা জয় তুলে নেয়। পার্ট টাইমার হিসেবে ক্লার্কের সেই স্পেলটি অন্যতম সেরা হিসেবেই পরিচিত।

  • মাইকেল বেভান (অস্ট্রেলিয়া): ৬/৮২, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০০৪

বেভান তার পুরো আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারেই ওয়ানডেতে সেরা এভারেজধারী ছিলেন। তিনি যখন অবসর নেন ওয়ানডেতে তার গড় ৬০ এরও বেশি ছিলো! অবশ্য ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি যখন প্রয়োজন পড়তো বল হাতেও তিনি অধিনায়ককে উইকেট নিয়ে দিতেন। ১৯৯৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার নেওয়া ৮২ রানে ৬ উইকেট তার ক্যারিয়ারের সেরা স্পেল।

তার দূর্দান্ত স্পেলে ক্যারিবিয়ানরা দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২০৪ রানেই অলআউট হয়! যেখানে প্রথম ইনিংসে ৫১৭ রান সংগ্রহ করেছিলো তারা। সেই ম্যাচে ১১৩ রানে ১০ উইকেট শিকার করেন বেভান। অজিরা এক ইনিংস ও ১৮৩ রানের জয় পায়, ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন বেভান।

  • সাইমন ক্যাটিচ (অস্ট্রেলিয়া): ৬/৬৫, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে, ২০০৩

২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে ক্যাটিচ ৬৫ রানে ৬ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছিলেন। তার ৬ উইকেট শিকারের দিনে জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ২৬৬ রানে। অবশ্য প্রথম ইনিংসে তারা ৩০৮ রান সংগ্রহ করেছিলো। মাত্র ৩০ ওভারের মধ্যেই ১ উইকেটেই অজিরা ১৭২ রান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটের জয় তুলে নেয়।

  • অ্যালান বোর্ডার (অস্ট্রেলিয়া): ৭/৪৬, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ১৯৮৯

সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডার টেস্ট ক্রিকেটে পার্ট টাইমার হিসেবে অন্যতম সেরা স্পেল করেন। ১৯৮৯ সালে সিডনিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র ৪৬ রানের বিনিময়ে ৭ উইকেট শিকার করেন।

যেখানে ক্যারিবিয়ানরা অলআউট হয় ২২৪ রানে৷ জবাবে ৪০১ রান সংগ্রহ করে অজিরা! এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ক্যারিবিয়ানরা ২৫৬ রানেই গুড়িয়ে গেলে সহজ জয় পায় অজিরা। সেই ম্যাচে ৯৬ রানে মোট ১১ উইকেট শিকার করেন বোর্ডার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...