একদম এক তরফা ম্যাচ। কে জানত, একদমই প্রতিরোধ করতে পারবে না ভারত। তাও আবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। সকল আয়োজন, জল্পনা-কল্পনার ইতি। ভারতকে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ১০ উইকেটে হারিয়ে সাত বছর পর নিজেদের তৃতীয় ফাইনালে পৌঁছে গেল ইংল্যান্ড।
অ্যাডিলেড ওভালে আগের ১২ টি-টোয়েন্টির টসে জিতে কোন অধিনায়ক-ই ম্যাচ জিততে পারেননি। কিন্তু সে রেকর্ডকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। আগের ম্যাচ থেকে সেমিফাইনালে একাদশে দুই পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে ইংলিশরা। অপরদিকে আগের ম্যাচের একাদশ নিয়েই দল সাজায় ভারত।
ব্যাটিংয়ের শুরুতেই ওপেনার লোকেশ রাহুল ক্রিস ওকসের বলে উইকেটের পেছনে বাটলারকে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে শুরুতেই ধাক্কা খায় ভারত। কিন্তু টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ খেলা ভিরাট কোহলি এসে জুটি বাঁধেন অধিনায়ক রোহিতের সাথে। এরপর বিরাটের সাথে রোহিতের জুটি ভাঙলে দ্রুতই ফিরে যান সুরিয়াকুমার যাদবও। পাঁচে নামা হার্দিক পান্ডিয়া যেন এদিন অ্যাডিলেডকে নিজের রঙে রাঙানোর শপথ করেই মাঠে নেমেছিলেন।
এই বিশ্বকাপের চতুর্থ অর্ধশতক করার পরপরই বিরাট কোহলি আউট হয়ে গেলেও ইনিংসের শেষ বলে হিট উইকেট হওয়ার আগে পর্যন্ত ৩৩ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলেন পান্ডিয়া। যাতে ছিল ৪ টি চার এবং ৫ টি ছয়ের মার। মূলত পান্ডিয়ার ইনিংসেই ভারতীয়দের দলীয় রান ১৬৮ তে পৌঁছায়।শেষ দশ ওভারে ১০৭ রান সংগ্রহ করে টিম ইন্ডিয়া।
জিতলেই স্বপ্নের ফাইনাল! যদিও অ্যাডিলেডে এত রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড আগের কোন দলের নেই। সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডটাও ইংল্যান্ডের। ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৫৮ রানের।সুতরাং জিততে হলে রেকর্ড করেই জেতা লাগত ইংল্যান্ডের।
ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দারুণ করে ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার অ্যালেক্স হেলস এবং জস বাটলার। ভূবনেশ্বর কুমারের করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই ৩ টি চারের মারের ইনিংসের শুরু করেন বাটলার। অপর প্রান্ত থেকে ঝড় শুরু করেন আরেক ওপেনার অ্যালেক্স হেলস। এই দুই ওপেনার এর বিপক্ষে ভারতীয় বোলাররা যেন নখদন্তহীন হয়ে পরেন।
পাওয়ার প্লেতে সংগ্রহ করেন বিনা উইকেটে ৬৩ রান। পাওয়ার প্লে শেষে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন এই দুই ব্যাটসম্যান। একে একে অশ্বিন, প্যাটেল, শামি সবাইকে তুলোধুনো করে ছাড়েন অ্যালেক্স হেলস এবং জস বাটলার। একে একে নিজেদের ব্যক্তিগত অর্ধশত পূরণ করেন এলেক্স হেলস এবং জস বাটলার।
১৬৯ রানের টার্গেট ২৪ বল বাকি থাকতেই পৌঁছে যান ইংলিশ এই দুই ওপেনার। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ডও করেন এই ওপেনাররা। এই জয়ের আসছে ১৩ নভেম্বর, রোববার মেলবোর্ন এর ফাইনালে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে ইংলিশরা।