বিরাট সব জয়ের গল্প

১ বা ২ রানের মতো ছোট জয় আমরা দেখে থাকি। আবার বিপক্ষে দুই’শ বা আড়াই’শ রানের ব্যবধানেও ওয়ানডে ম্যাচে জয় দেখা যায়। বড় জয়গুলো বেশিরভাগ সময়ই আসে বড় দলের খেলায়; ছোট দলের বিপক্ষে।

বড় জয় পাওয়ার জন্য ব্যক্তিগত অর্জনটাও খুবই জরুরী। ক্রিকেটে ইতিহাসের রানের ব্যবধানের সবচেয়ে বড় পাঁচ জয় নিয়ে খেলা ৭১ এর আজকের এই আয়োজন।

  • নিউজিল্যান্ড – ২৯০ রান (আয়ারল্যান্ড)

এটি ছিলো ২০০৮ সালে স্কটল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচ। এই ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল আয়ারল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড। টসে জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় আয়ারল্যান্ড।

ব্যাটিংয়ে নেমে আয়ারল্যান্ডের বোলারদের পাড়ার বোলার বানিয়ে ফেলেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার জেমস মার্শাল এবং ব্রেন্ডন ম্যাককলাম। মার্শাল এবং ম্যাককলামের ১৬১ এবং ১৬৬ রানের ইনিংসে সুবাদে ৪০২ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড।

৪০৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের সামনে দাড়াতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। ২৮.৪ ওভারে মাত্র ১১২ রানে গুটিয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। আর এর ফলেই ২৯০ রানের বিশাল জয় পায় নিউজিল্যান্ড। যা কিনা এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়।

  • অস্ট্রেলিয়া – ২৭৫ রান (আফগানিস্তান)

এই ম্যাচ ছিলো ২০১৫ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ। পার্থে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় আফগানিস্তান।

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই অ্যারন ফিঞ্চের উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২৬০ রান যোগ করে ৯৫ রান করা স্টিভ স্মিথ আউট হলেও ওয়ার্নার ১৭৮ রানের এক ইনিংস খেলেন। এরপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল খেলেন ৮৮ রানের ইনিংস। এই তিন ইনিংসের উপর ভর করে ৪১৭ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া।

৪১৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৪২ রানেই অল আউট হয় আফগানিস্তান। মিচেল জনসন ২২ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন। আফগানিস্তানের পক্ষে নওরোজ মঙ্গলের ৩৩ রান ছাড়া বলার মত কেউ কোনো স্কোর করতে পারেননি।

  • দক্ষিণ আফ্রিকা – ২৭২ রান (জিম্বাবুয়ে) 

২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসে জিম্বাবুয়ে। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো ছিলো না। স্কোর বোর্ডে সন্মানজনক রান না করতেই ফিরে যায় দুই ওপেনার। এরপর নিজেদের ব্যাটিং সামর্থ্যে সর্বোচ্চটা ব্যাটিং করতে শুরু করেন জেপি ডুমিনি এবং এবিডি ভিলিয়ার্স। তাঁদের দুই জনের ঝড়ো সেঞ্চুরি এবং শেষের দিকে মিডল অর্ডারের ছোটো সংগ্রহে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৯৯ রান।

৪০০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দুই ওপেনার ব্রেন্ডন টেইলর এবং হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে হারিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে। এরপর কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও প্রোটিয়া বোলারদের সামনে টিকতে পারেনি জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। জিম্বাবুয়ে ১২৭ রানে অল আউট হয়ে যায়। এর ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা ২৭২ রানের বিশাল জয় পায়।

  • দক্ষিণ আফ্রিকা – ২৫৮ রান (শ্রীলঙ্কা)

২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যায় শ্রীলঙ্কা। এই সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে এতো বিশাল জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এই ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

ব্যাটিংয়ে নেমে হাশিম আমলার সেঞ্চুরি এবং জ্যাক ক্যালিস ও ডি ভিলিয়ার্সে হাফ সেঞ্চুরিতে ৩০১ রান সংগ্রহ করে। এই রান লক্ষ্য করে জয় খুব কঠিন কিছু ছিল না শ্রীলঙ্কার জন্য। এই ম্যাচে বল হাতে ৫ উইকেট নেন শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা।

৩০২ রানের লক্ষ্য ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন দুই ওপেনার উপুল থারাঙ্গা এবং তিলকারত্নে দিলশান। কৌশল্যা কুলাসেকারা ছাড়া কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পা রাখতে পারেনি। এর ফলাফল স্বরুপ মাত্র ৪৩ রানে অল আউট হয় শ্রীলঙ্কা। আর ২৫৮ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

  • ভারত – ২৫৭ রান (বারমুডা)

এটি ছিলো ২০০৭ বিশ্বকাপের ১২তম ম্যাচ। এর আগে গ্রুপ পর্বের আগের দুই ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছিলো ভারতের। বারমুডার বিপক্ষে আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচে মাঠে নেমেছিলো ভারত।

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে আসে ভারত। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই রবিন উথাপ্পার উইকেট হারায় ভারত। এরপর সৌরভ গাঙ্গুলি, শেবাগ, যুবরাজ এবং শচীনের ব্যাটিং তোপে ৪১৩ রানের বিশাল সংগ্রহ দাড় করায় ভারত।

৪১৪ রানের লক্ষ্য ব্যাট করতে নেমে ৪৩.১ ওভারে ১৫৬ রান করতে সক্ষম হয় বারমুডা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন ডেভিড হেম্প।

বারমুডা ১৫৬ রানে অল আউট হওয়ায় ভারত জয় পায় ২৫৭ রানের বিশাল ব্যবধানে।

লেখক পরিচিতি

খেলাকে ভালোবেসে কি-বোর্ডেই ঝড় তুলি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link