সমীকরণের চাপ মাথায়। তার উপরে প্রতিপক্ষ অপরাজিত। এমন এক ম্যাচে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ ব্যাটারদের দায়িত্ব অনেক। তবে তাদের কাজটা সহজ করে দিতে হতো বোলারদের। সেই কাজটাই করে দিলেন রোহানাত দৌল্লা বর্ষণ ও শেখ পারভেজ জীবন।
দুইজনে মিলে পাকিস্তান যুব দলের আট খানা উইকেট নিজেদের করে নিয়েছেন। বর্ষণের সুইং আর গতি, জীবনের স্পিন- দু’জনে মিলে বিষ ছড়িয়েছেন পাকিস্তানের গোটা ব্যাটিং অর্ডারে। শুরুটা বর্ষণের হাত ধরেই। সাধারণত একটু পুরনো বলে বর্ষণ আক্রমণে আসেন বল হাতে। তবে এদিন একটু আগেভাগেই তার হাতে বল তুলে দিলেন যুব দলের অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি।
নতুন বলে শুরুটা অবশ্য দুর্দান্তই করেছিলেন ইকবাল হোসেন ইমন ও মারুফ মৃধা। তবে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটিতে কোন ফাটল ধরাতে পারেননি তারা। তাদের দারুণ লাইন লেন্থের বলগুলোতে থাকতে হয়েছে উইকেট শূন্য। তাইতো আগের দিনের নায়ক বর্ষণের ডাক পরে যায় আগেভাগেই। আস্থার প্রতিদান দিতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি বর্ষণ।
পাকিস্তানের ওপেনার শামিল হোসেনকে বোকা বানিয়েছেন বলের গতি পথে। বাঁ-হাতি এই ওপেনার ভেবেছিলেন বল পিচ করে বেরিয়ে যাবে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে। তাই তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন সেই বল। তবে বর্ষণের ছোড়া বলটা ভেতরের দিকে ঢুকে উপড়ে ফেলে অফ স্ট্যাম্প। ব্যাস! সেখান থেকেই শুরু পাকিস্তানের দুর্দশার। এর পর আরও তিন খানা উইকেট নিজের করে নেন বর্ষণ।
তবে একটা প্রান্ত আগলে রাখছিলেন পাকিস্তানের আরেক ওপেনার শাহজিব খান। তিনি চিন্তার কারণে পরিণত হচ্ছিল ক্রমশ। তাকে দ্রুত ফেরানো ভীষণ প্রয়োজন ছিল। টুর্নামেন্টের চতুর্থ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। তাকে প্যাভিলিয়নে ফেরার পথটা দেখান জীবন। খানিকটা জোরে উপর করা বলটা ড্রিফট করে সাথে হালকা টার্ন। তাতে পরাস্ত শাহজিব খান। তার উইকেট জমা পরে আশিকুর রহমান শিবলির দস্তানায়।
তাতেই স্বস্তির কারণ হয়ে ওঠেন জীবন। তিনিও এরপর নিয়েছেন আরও তিনটি উইকেট। নিজের কোটার ১০ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে পাহাড়সম চাপেই রেখেছিলেন জীবন। অন্যদিকে, ক্রমাগত উইকেট নিয়েছেন বর্ষণের সাথে জুটি বেঁধে। উবাইদ শাহের উইকেটটি হতে পারে জীবনের বোলিং ইনিংসের অন্যতম হাইলাইটস। স্পিনার হয়েও পিন পয়েন্ট ইয়োর্কারের বোল্ড আউট করেন তিনি উবাইদ শাহকে।
অন্যদিকে, মোহাম্মদ জিসানের কাছে বাউন্ডারি হজম করে বর্ষণই দেখিয়েছেন নিজের সক্ষমতা। জিসানকে বর্ষণ ফিরিয়েছেন দারুণ এক ইয়োর্কারে। এই দুই বোলারের কল্যাণেই পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে মাত্র ১৫৫ রানে অলআউট করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ যুব দল।
সেমিফাইনালে যেতে হলে জিততেই হবে বাংলাদেশকে। তাছাড়া রান রেটেও হারাতে হবে পাকিস্তানকে। এমন এক ম্যাচে বর্ষণ ও জীবন বাংলাদেশের ব্যাটারদের জন্যে লক্ষ্য মাত্রাটা অল্পতেই থামিয়ে দিতে পেরেছেন। বাকি কাজটা জিসান আলম আর আরিফুলদের হাতেই ন্যাস্ত। নিদেনপক্ষে ৯০ বল হাতে রেখে জিততে পারলেই মিলবে সেমিফাইনালের টিকিট।