ক্রিকেট বিশ্বে ভারত এক বড় নাম। শক্তিধর এক ক্রিকেটীয় দেশ। ক্রিকেটের ইতিহাসে একের অধিক বিশ্বকাপ জেতা দেশের তালিকাও নিজেদের নাম লিখিয়ে রেখেছে ভারত। এছাড়াও উদ্বোধনী আসরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় করা থেকে প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে ওঠা দল ভারত। বর্তমান সময়ে তারকা ঠাসা ভারতকে হারানো বেশ কষ্টসাধ্য এক বিষয়। নানান রকমে পরিকল্পনার ছক এঁকেই তবে প্রতিপক্ষকে নামতে হয় মাঠে।
একজন খেলোয়াড় ব্যাটিং কিংবা বোলিং এ বেশ পারদর্শী হতে পারে কিন্তু তাঁর মধ্য একটি দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো গুনাবলী না থাকলে তাঁকে দিয়ে আর যাই হোক অধিনায়কত্ব করানো সম্ভব নয়। ভারতের মতো ক্রিকেটের বড় দলের তো নয়ই। এই পরাশক্তি একটা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা বেশ দূরহ একটি কাজ।
এত এত ভক্ত সমর্থকদের প্রত্যাশা, ম্যাচের বিরুপ পরিস্থিতি, দলের খেলোয়াড়দের ফর্ম এসব কিছু বেশ বাড়তি চাপের সৃষ্টি করে। তাছাড়া দলের খারাপ ফলাফলের দায়ও নিতে হয় সেই অধিনায়ককে। তবুও অধিনায়কের দায়িত্ব তো পালন করতে হবে কাওকে না কাওকে।
অধিকাংশ সময়েই ভারতীয় ক্রিকেটে ব্যাটারদেরকেই অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গিয়েছে। এমন কোন বাঁধাধরা নিয়ম নেই যে একজন বোলার অধিনায়ক হতে পারবেন না। তবে একজন বোলারকে অধিনায়ক করবার রীতি ভারতীয় ক্রিকেটে বেশ বিরল। তবে একেবারেই একজন বোলারের দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার নজিড় নেই তা নয়, আজ থাকছে সেই সকল উদাহরণ নিয়েই আলোচনা।
- জাসপ্রিত বুমরাহ
আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজকে সামনে রেখে নতুন সহ অধিনায়ক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন ভারতের বর্তমান পেস আক্রমণের পরীক্ষিত সেনানী জাসপ্রিত বুমরাহ। নিজের সামর্থ্য এবং দক্ষতার পরিপূর্ণ প্রমান রেখেই বুমরাহ নিজেকে পরিণত করেছেন ভারত জাতীয় দলের এক অবিচ্ছেদ্য অংশে।
তিন ফরম্যাটেই বোলিং আক্রমণকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব থাকে জাসপ্রিতের কাঁধে। এবার পুরো দলের দায়িত্ব পালনে সাহায্য করবেন লোকেশ রাহুলকে। ইনজুরি আক্রন্ত হয়ে ভারত ওয়ানডে দলের নবনিযুক্ত অধিনায়ক রোহিত শর্মা খেলবেন না দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ। তাই তো এমন রদবদল।
- ভুবনেশ্বর কুমার
ফর্ম হীনতায় ভুগতে থাকা বর্তমান সময়ে ভারতের পেস আক্রমণের অন্যতম কাণ্ডারীও একদফা দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেছেন সাম্প্রতিক সময়ে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০২১ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত হওয়া ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের সহকারী অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
সে সময়ে দলের অধিনায়কের পদে নিযুক্ত ছিলেন অভিজ্ঞ ওপেনার শিখর ধাওয়ান। ধাওয়ান ও ভুবনেশ্বরের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ও সমান সংখ্যক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অংশ নেয় ভারত।
- অনিল কুম্বলে
ইতিহাসের এক অনন্য রেকর্ডের মালিক অনিল কুম্বলে ছিলেন তাঁর সময়ে অন্যতম সেরা স্পিন বোলারদের একজন। নানান রকম রেকর্ডের অভিজ্ঞতা ছাড়াও ভারত জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতাও রয়েছে বর্ষীয়ান এই স্পিন বোলারের।
২০০৭ সালের দিকে তৎকালীন ভারত টেস্ট দলের অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড় অধিনায়কের পদ থেকে সড়ে দাঁড়ালে সেই ফরম্যাটে অধিনায়কের শূন্যস্থান পূরণ করেন অনিল। ২০০৭-০৮ এই সময়কালে টেস্টের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর মহেন্দ্র সিং ধোনির সেই দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে কুম্বলের অধিনায়ক অধ্যায়ের।
- শ্রীনিবাসরাঘবন ভেঙ্কটরাঘবন
১৯৭৫ এবং ১৯৭৯ সালে হওয়া দুটি বিশ্বকাপে ভারত জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শ্রীনিবাসরাঘবন ভেঙ্কেটরাঘবন। তিনি মূলত ছিলেন একজন অফস্পিন বোলার। তাঁর নেতৃত্বেই বিশ্বকাপের মঞ্চে পূর্ব আফ্রিকা অঞ্চলে প্রথম জয়ের স্বাদ পায় টিম ইন্ডিয়া।
- বিষান সিং বেদি
১৮৭৫-১৯৭৮ এই সময়কালে ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন বিষান সিং বেদি। বা-হাতের ঘূর্ণি জাদুকর ভারতকে চারটি ওয়ানডে ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেই চার ম্যাচের মধ্যে একটিতে জয় পেয়েছিলো ভারত। তাঁর অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও বল হাতে অবদান রেখেছিলেন বিষান সিং বেদি।