কোপা আমেরিকার সবচেয়ে হাই ভোল্টেজ ম্যাচ। উরুগুয়ের মুখোমুখি ব্রাজিল। দুই দলের লড়াইয়ে যতটা শৈল্পিক নৈপুন্য প্রত্যাশা করেছিল দর্শকরা। তার ছিটেফোটাও দেখা মেলেনি। পেশিশক্তির লড়াইয়ে নির্ধারিত সময়ে দুই দলই থেকেছে গোল শূণ্য। টাইব্রেকারে ভাগ্য নিজেদের পক্ষে নিয়ে এসেছে উরুগুয়ে। ব্রাজিলের কোপা আমেরিকার যাত্রা থামিয়ে তারা চলে গেছে সেমিফাইনালে।
একেবারে প্রথম মিনিট থেকেই ব্রাজিলের নাভিশ্বাস তুলে দেয় উরুগুয়ে। হাই-প্রেস, সেই সাথে গতিতে সেলেসাওদের পায়ে বলই রাখতে দেয়নি ডারউইন নুনেজরা। ব্রাজিল যেন কোন মতে শুরুর ২০ মিনিট নিজেদের রক্ষণ সামলে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। সফলও হয়েছে বটে। কেননা তখন অবধি একটাও শট গোলবারে রাখতে পারেনি উরুগুয়ে।
অবশ্য সেটা পুরো ম্যাচেরই দৃশ্যপট ছিল। কোন দলই দুই দলের গোলরক্ষকদের খুব একটা পরীক্ষা নিতে পারেনি। গোছানো আক্রমণের বড্ড অভাব ছিল পুরো ৯০ মিনিট জুড়েই। ফাউলের বন্যা বসিয়ে কোন মতে দুই দল আটকে রাখতে চেয়েছিল নিজেদের। সে ধারায় ম্যাচের ৭৪ মিনিটের রদ্রিগোকে মাথায় গুরুতর এক ফাউল করে বসেন উরুগুয়ের নাহিথান ন্যান্দেজ। প্রথমে রেফারি হলুদ কার্ড দিলেও, পরবর্তীতে ভিডিও অ্যাসিস্টেন্ট রেফারির সহয়তায় লাল কার্ড দেখান রেফারি।
শেষের ১৫ মিনিটের জন্যে উরুগুয়ে দশ জনের দলে পরিণত হয়। তবুও ব্রাজিল তাদের রক্ষণ ভাঙতে পারেনি। উরুগুয়ে শেষ মুহূর্তে নিজেদের রক্ষণকে আঁটসাঁট করে ফেলে। রদ্রিগোরা কোন ভাবেই জমাট সেই রক্ষণে ভাঙনের সুযোগ পায়নি। যদিও এর আগে মিড ফিল্ড পেরিয়ে ঠিকঠাক আক্রমণ করতেই পারেনি লুকাস পাকুয়েতারা।
শেষ অবধি দশজনের দল নিয়েও উরুগুয়ে ঠেকিয়ে দেয় ব্রাজিলকে। বরং বলা যেতে পারে দশ জনের দলের বিপক্ষে প্রায় ২০ মিনিট সময় পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে ডরিভাল জুনিয়রের শীষ্যরা। অবশ্য এই দায় যতটা না কোচের তার থেকেও বেশি খেলোয়াড়দের। ব্রাজিলের মধ্যমাঠ যে এক নিষ্ফলা বৃক্ষ। যে বৃক্ষ দেয়না ফল, এমনকি দেয়না একটু ছায়াও।
ঠিক সে কারণেই টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে নয়বারের কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়নদের। এই টাইব্রেকারও যেন আরেক বিভীষিকায় পরিণত হয়েছে। ব্রাজিল যে টাইব্রেকারেও বেশ দূর্বল। এত দূর্বলতা নিয়ে আর যাই হোক টুর্নামেন্ট জেতা যায় না। তবে উরুগুয়ে দলে তেমন কোন দূর্বলতা পরিলক্ষিত হয়নি। ঠিক সে কারণেই এবারের কোপা জয়ের অন্যতম দাবিদার তারা। আর দু’পা এগুলেই মিলবে ১৬ তম শিরোপা।