৪৪ ম্যাচ আর প্রায় এক মাস ক্রিকেটীয় মহাযজ্ঞের পর অত:পর ফাইনাল। অন্তিম এ মহারণের জন্য প্রস্তুত মেলবোর্ন। তবে আরাধ্য এই ম্যাচের আগে চোখ রাঙানি দিচ্ছে বৃষ্টি। ফাইনাল ম্যাচের আগে এমনই এক দু:সংবাদ শুনিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আগামী রবিবার মেলবোর্নে ইংল্যান্ড-পাকিস্তান ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হবে অস্ট্রেলিয়া সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। আর এ সময়টাতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ। রবিবারের ফাইনাল ভেস্তে গেলে রিজার্ভ ডে আছে অবশ্য। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, সে দিনে মেলবোর্নে বৃষ্টি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা আছে। তাই দুই দিনেও ফাইনাল না গড়ালে এবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হবে যুগ্মভাবে দুই দলই।
বাটলার কিংবা বাবর নিশ্চয়ই এমনটা চান না। ইংলিশ অধিনায়ক জশ বাটলার তো এমন সম্ভাবনা কল্পনাই করতে পারছেন না। ফাইনালের আগে জানিয়েছেন সম্ভাবনার গল্প, জানান দিয়েছে আত্মবিশ্বাসের সুর। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের দল বেশ ভাল। যেভাবে খেলোয়াড়রা পারফর্ম করছে তা অবশ্যই দুর্দান্ত। আমাদের প্লেয়াররা যদি তাদের সেরাটা দিতে পারে, আমাদের হারানো যেকোনো দলের জন্যই কঠিন হবে। আমরা অবিশ্বাস্য রকমের বিপদজনক দল হতে পারি যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই।’
জশ বাটলারের এমন আত্মবিশ্বাসের সুর অবশ্য ফাটকা কোনো বাণী নয়। সেমিফাইনালে তারা রীতিমত ভারতকে বিধ্বস্ত করেছে। এমন পারফরম্যান্সের কারণে ইংল্যান্ড তাই যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্যই অশনি এক সংকেত। তাছাড়া, বিশ্বকাপের আগে ৭ ম্যাচের এক টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। আর ঐ সিরিজে পূর্ণশক্তির পাকিস্তানকে ৪-৩ এ হারিয়েছিল বাটলার বিহীন ইংল্যান্ড। আত্মবিশ্বাস তাই তুঙ্গে থাকারই কথা ইংলিশ শিবিরে।
যদিও, পাকিস্তানকেও একেবারে হেলায় দেখার সুযোগ নেই। শুরুটা বাজে হলেও, দুর্দান্তভাবে টুর্নামেন্টে ফিরেছে তারা। তর্কযোগ্যভাবে বিশ্বের সেরা পেস বোলিং লাইনআপ তাদের। আর পাকিস্তানের জন্য সবচেয়ে স্বস্তির ব্যাপার হল, তাদের সব ক্রিকেটারই ক্রমেই ছন্দে ফিরেছে। শাহীন আফ্রিদি দারুণ বোলিং করেছেন শেষ তিন ম্যাচে।
যে ওপেনিং জুটির ফর্ম নিয়ে এত চিন্তার বিষয় ছিল, সেই বাবর, রিজওয়ান সেমির ম্যাচে শতরানের জুটি গড়েছেন। এবারের টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ফিফটিও পেয়েছেন এ ম্যাচেই। এ ছাড়া টুর্নামেন্টের মাঝ পথে মোহাম্মদ হারিসের সংযুক্তি পাকিস্তানের টপ অর্ডারে বাড়তি শক্তি যোগ করেছে। সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের জন্য পাকিস্তান মোটেই সহজ প্রতিপক্ষ নয়।
২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। আর পরের আসরে শিরোপা জিতেছিল পল কলিংউডের ইংল্যান্ড। দুই দলই একবার করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে। সংখ্যাটা এবার তাই ২ করার পালা। একই সাথে, সর্বোচ্চ সংখ্যক দুইবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাশে নাম লেখানোর সুযোগ তো থাকছেই।
এখন দেখার পালা, মেলবোর্নের মহারণে জয়টা আসলে শেষ পর্যন্ত কার আসে? বেরসিক বৃষ্টি নাকি ইংল্যান্ড, পাকিস্তানের মধ্যে এক দলের। বৃষ্টির জয়ে অবশ্য দুই দলই বিজয়ী হবে। কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেট নিশ্চয় এমন জমজমাট টুর্নামেন্টের নিরস সমাপ্তি দেখতে চাইবে না। অপেক্ষাটা তাই বাইশ গজের সত্যিকার লড়াইয়ের, ধুন্ধুমার একটি ফাইনালের।