ম্যাচের লাগাম বাংলাদেশের হাতেই

সিরিজ জয়ের ম্যাচে দারুণ বোলিং করে লক্ষটা ব্যাটসম্যানদের নাগালেই রেখেছেন শরিফুল ইসলাম। তরুণ এই পেসার শিকার করেছেন চার উইকেট। দুই উইকেট শিকার করে ছন্দ ধরে রেখেছেন সাকিব আল হাসানও। আর একটি উইকেট পেলেও দুর্দান্ত বল করেছেন তাসকিন আহমেদ।

ওয়েসলি মাধেভেরের হাফ সেঞ্চুরিতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ২৪১ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে এর বেশি রান তাড়া করে একবারই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেটাও প্রায় এক যুগ আগে। তাই আজ সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে ব্যাটসম্যানদের।

তবে সিরিজ জয়ের ম্যাচে দারুণ বোলিং করে লক্ষ্যটা ব্যাটসম্যানদের নাগালেই রেখেছেন শরিফুল ইসলাম। তরুণ এই পেসার শিকার করেছেন চার উইকেট। দুই উইকেট শিকার করে নিজের ছন্দ ধরে রেখেছেন সাকিব আল হাসানও। আর একটি উইকেট পেলেও দুর্দান্ত বল করেছেন তাসকিন আহমেদ।

প্রথম ম্যাচের মত আজও হারারে স্পোর্টস ক্লাবের উইকেটে মুভমেন্ট ছিল। প্রথম ঘন্টায় উইকেট থেকে সুবিধা পাবেন পেসাররা। প্রথম ম্যাচে যে সুবিধা পেয়েছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু প্রথম ম্যাচে রান তাড়া করতে নেমে যেই ভাবে আত্মসমর্পণ করেছিল স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। সেটা ভেবেই হয়তো আজ টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নিয়েছিল জিম্বাবুয়ে।

তবে তাতেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। নতুন বলে উইকেট থেকে সুবিধা নিয়ে দারুণ শুরু করেন তাসকিন আহমেদ। তাঁর দুর্দান্ত বোলিংয়েই শুরুটা ভালো হয়নি হয়নি জিম্বাবুয়ের। এই পেসারের প্রথম ওভারে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের শর্ট অব লেংথ বল কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে আফিফ হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৫ বলে ১ রান করে ফিরে যান তিনাশে কামুনহুকাম্বে।

তিনাশে ফিরে যাওয়ার পর উইকেটে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি জিম্বাবুয়ের আরেক ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানিও। ষষ্ট ওভারের পঞ্চম বলে মেহেদী হাসান মিরাজের বাক নিয়ে একটু ভেতরে ঢোকা বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান মারুমানি। ১৮ বলে ১৩ রান করা মারুমানি অবশ্য ফিরে যেতে পারতেন আগের ওভারেই।

কিন্তু তাসকিনের করা ঐ ওভারের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বলে দুই বার ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান এই ওপেনার। মিড অনে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ক্যাচ ছাড়ার পর থার্ড ম্যানে ক্যাচ ছাড়েন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৩৩ রানে দুই উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন মিডল অর্ডার থেকে তিনে উঠে আসা গত ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান রেগিস চাকাভা ও অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে স্বাচ্ছন্দ্যেই ব্যাট করতে থাকেন দুজন। বাংলাদেশের বোলারদের তেমন সুযোগই দেননি দুই ব্যাটসম্যান। তবে এই জুটি বেশি বড় হতে দেননি সাকিব আল হাসান। ৩২ বলে ২৬ রান করা চাকাভা মিডল স্টাম্পে থাকা বল ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে গেলে ভাঙে ৪৭ রানের জুটি। চাকাভার বিদায়ের পর  ভালো শুরু পেয়েও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি টেইলর।

দূর্ভাগ্যজনক ভাবে আউট হয়েছেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক। শরিফুলের ইসলামের বল আপার কাট করতে গিয়ে ব্যর্থ হন টেইলর। সেই শটের শ্যাডো করতে গিয়েই স্ট্যাম্পে লাগে তাঁর ব্যাট। ৫৭ বলে ৪৬ রান করে হিট উইকেট হয়ে ফিরে যান টেইলর। এরপর ভালো শুরু পেয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি ডিয়ন মেয়ার্স। সাকিবের দ্বিতীয় শিকার হয়ে তিনি ফিরে যান ৩৪ রান করে।

১৪৫ রানে ৫ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ের হাল ধরেন ওয়েস্লি মাধেভেরে ও সিকান্দার রাজা। ষষ্ট উইকেটে দুজন যোগ করেন ৬৩ রান। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে মাধেভেরে ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি। ৬৩ বলে ৫৬ রান করে শরিফুলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি। এরপর শরিফুলের জোড়া আঘাতে লুক জঙ্গে ও ব্লেসিং মুজারাবানি ফিরে গেলে বেশি দূর যেতে পারেনি জিম্বাবুয়ে।

শেষ পর্যন্ত রাজার ৩০ রানে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বোলারদের ভিতর চার উইকেট শিকার করেন শরিফুল ইসলাম। এছাড়া সাকিব আল হাসান দুটি এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ একটি করে উইকেট শিকার করেন।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

জিম্বাবুয়ে: ২৪০/৯ (ওভার: ৫০; কামুনহুকাম্বে- ১, মারুমানি- ১৩, চাকাভা- ২৬, টেইলর- ৪৬, মাধেভেরে- ৫৬, (তাসকিন- ১০-০-৩৮-১, সাকিব- ১০-০-৪২-২, শরিফুল- ১০-০-৪৬-৪, মিরাজ- ৭.২-০-৩৪-১, সাইফউদ্দিন- ১০-০-৫৪-১)

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...