দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে চট্টগ্রামের

দেশের তরুণ ক্রিকেটারদের প্রাধান্য দেওয়া। এরপর প্লে-অফ পর্যন্ত দাপটের সাথে খেলে যাওয়া। এসব কিছু মিলিয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের নামডাক ছড়িয়ে যায় বাংলাদেশের ক্রিকেটা পাড়ায়। গেল আসরে দারুণ ছন্দে থাকা চট্টগ্রামের শেষ অবধি শিরোপাটা জেতা হয়নি। তবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের মঞ্চে দারুণ কিছু করে দেখানোর বার্তা ছড়িয়ে দিতে পেরেছিল চ্যালেঞ্জার্স ফ্রাঞ্চাইজি।

কিন্তু বছর ঘুরতেই যেন ভিন্ন এক চিত্র চট্টগ্রামের শিবিরে। ধুঁকছে গোটা দল। অর্ধেক পথে দলটির হারের পাল্লা ভারি। অবস্থান টেবিলের একেবারে তলানিতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলে দুই জয় চ্যালেঞ্জার্সের দখলে। দলটি যেন ঠিক দলগত পারফরমেন্সটাই করতে পারছে না। পুরো বিপিএলে চট্টগ্রামের কাছে বলার মত গল্প আছেই একটি।

খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ১৭৮ রান তাড়া করে জেতা ম্যাচটি। সে ম্যাচে পাকিস্তানি ব্যাটার উসমান খানের সেঞ্চুরি চ্যালেঞ্জার্সকে দিয়েছিল বিজয়ের স্বাদ। তাও আবার প্রথম বিজয়ের। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সেই ম্যাচটি দুই বিদেশি ব্যাটারের নৈপুণ্যে জিতেছিল চট্টগ্রাম। নেদারল্যান্ডসের খেলোয়াড় ম্যাক্স ও’ডউডও সেদিন অর্ধশতকের দেখা পেয়েছিলেন।

এরপর আসলে কখনো ব্যাটিং বিপর্যয় তো আবার কখনো বোলিং আক্রমণ থুবড়ে পড়া। এসবকিছু মিলে কাঙ্ক্ষিত আগ্রাসনটা ঠিক দেখাতে পারছে না দলটি। এর পেছনে অবশ্য বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তারুণ্য নির্ভর একটা দল গড়তে গিয়ে গেল আসরে বেশ একটা বিতর্কের সম্মুখীন হতে হয়েছে ফ্রাঞ্চাইজিটিকে। এবার সে বিতর্কের দেখা এখন অবধি না মিললেও, কমেছে তরুণদের সংখ্যা। সেই সাথে কমেছে মানসম্মত বিদেশি খেলোয়াড়দের পরিমাণও।

সব কিছু মিলিয়ে যাচ্ছেতাই অবস্থা গোটা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। সাত ম্যাচ খেলে মাত্র দুইটি ম্যাচ জিততে পেরেছে তাঁরা। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ম্যাচটি ছাড়া আরেকটি ম্যাচ তাঁরা জিতেছে ঢাকা ডমিনেটর্সের বিপক্ষে। ঢাকার অবস্থানও টেবিলের নিচের দিকে। তবে রান রেটের জটিল হিসেবে চট্টগ্রামের থেকে এক ধাপ এগিয়ে রয়েছে ঢাকা।

তবে কোন রকম হিসেবের সুযোগ নেই চট্টগ্রামের সামনে। হয় মরো, না হয় লড়াই করো। কেননা প্লে-অফের গণ্ডি পার করার কাজটা এখন ভীষণ কঠিন। একটু পা হড়কে গেলেই ছিটকে যেতে হবে টূর্নামেন্ট থেকে। সেটা নিশ্চয়ই চাইবে না। তাইতো ঘুরে দাঁড়ানোর দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স দল হাজির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি সিলেটে।

বিপিএলের পরবর্তী রাউন্ডের ম্যাচ আয়োজিত হবে সিলেটে নয়নাভিরাম স্টেডিয়ামে। সেখানে দুইটি ম্যাচ খেলবে চট্টগ্রাম। বাকি থাকা পাঁচটি ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই চট্টগ্রামের সামনে। আর সেই শুরুটা সিলেট থেকেই করতে চাইবে চট্টগ্রাম। তাইতো পুরোদমে অনুশীলনে ব্যস্ত গোটা দল। নিজেদের মানসিকতা নিশ্চয়ই ঢেলে সাঁজাতে চাইবে চ্যালেঞ্জার্স টিম ম্যানেজমেন্ট।

দলের সকল দূর্বলতাগুলো নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ করতে শুরু করেছে দলটির কোচিং প্যানেল। ব্যাটারদের পাওয়ার হিটিং সক্ষমতা বাড়ানোর কাজটা শুরু করে দিয়েছেন দলের কোচ জুলিয়ান উড। বাকি থাকা দূর্বলতা গুলোর সমাধান খুঁজে এরপরই বরিশালের বিপক্ষে মাঠে নামতে চাইবে চট্টগ্রাম। বাকিটা অবশ্য মাঠের ক্রিকেটই বলে দেবে।

ঠিক কোথায় গিয়ে থামবে চট্টগ্রামের যাত্রা, সেটা সময় বলে দেবে। তবে এখনও সুযোগ রয়েছে চট্টগ্রামের ঘুরে দাঁড়ানোর। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে ঘুরে দাঁড়াতেই হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link