নায়ক সেই মরিসের ব্যাট

নায়ক ক্রিস মরিস গত ম্যাচেও হতে পারতেন। কিন্তু, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ম্যাচটায় দুই বলে যখন পাঁচ রান দরকার তখন সিঙ্গেল নেননি সেঞ্চুরিয়ান সাঞ্জু স্যামসন। শেষ বলে ছক্কা হাঁকানোর বিকল্প ছিল না, আর সেটা করতে গিয়েই তুলে মারেন। বল গ্যালারি খুঁজে না পেলেও ডিপ কভারে দাঁড়ানো আর্শদ্বীপ সিংকে ঠিকই খুঁজে পায়।

নায়ক ক্রিস মরিস গত ম্যাচেও হতে পারতেন।

কিন্তু, পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ম্যাচটায় দুই বলে যখন পাঁচ রান দরকার তখন সিঙ্গেল নেননি সেঞ্চুরিয়ান সাঞ্জু স্যামসন। শেষ বলে ছক্কা হাঁকানোর বিকল্প ছিল না, আর সেটা করতে গিয়েই তুলে মারেন। বল গ্যালারি খুঁজে না পেলেও ডিপ কভারে দাঁড়ানো আর্শদ্বীপ সিংকে ঠিকই খুঁজে পায়।

বিষয়টা মরিসের জন্য অপমানজনক ছিল। এবারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার। বোলিংটা তাঁর দামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছিল না। সমালোচনা বাড়ছিল। তবে, সব কিছুর অবসান ব্যাট দিয়েই করলেন মরিস।

এমন একটা লড়াইয়ে তিনি ছিলেন, যেখানে তাঁর আদৌ সম্ভাবনা আছে – সেটা মানতেও সম্ভবত কেউ রাজি ছিলেন না। ৪৩ বলে ৬২ রান করে কিলার মিলার খ্যাত প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান ডেভিড মিলার আউট হওয়ার পরই আসলে ম্যাচটা শেষ।

বাকিটা কেবলই নিয়মরক্ষা। তবে, এই সময়টাকেই নিজের সম্মানরক্ষার মঞ্চ হিসেবে বেছে নিলেন। ১৮ বলে করলেন ৩৬ রান। মানে ২০০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করলেন। ইনিংসে ছিল চারটি ছক্কা। প্রায় অসম্ভব এক লড়াই তিনি রাজস্থান রয়্যালসকে জেতালেন দুই বল বাকি থাকতেই। তিন উইকেটে জয় পায় সাঞ্জু স্যামসনের রাজস্থান। চলতি আসরে এটাই তাঁদের প্রথম জয়।

১৪৮ রানের লক্ষ্যে মুম্বাইয়ের ওয়াঙখেড়ে স্টেডিয়ামে যাচ্ছেতাই শুরু করে রাজস্থানের টপ অর্ডার। প্রথম চার ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অংকের ঘরে নিজেদের স্কোর নিতে পারেননি। ৪২ রানে পাঁচ উইকেট হারায় তাঁরা।

এরপর মিলারের লড়াই শুরু। বেন স্টোকসের ইনজুরিতে একাদশে ঠাঁই পাওয়া মারমুখী এই ব্যাটসম্যান হাফ সেঞ্চুরি করে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করে দেন দলের হয়ে। বাকিটা সময় রাহুল তেওয়াতিওয়া, কখনো জয়দেব উনাদকাতরা টেনে নিয়ে গেছেন। আর শেষটা রাঙিয়ে দিয়েছেন মরিস।

টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই রাজস্থান রয়্যালসের বোলারদের তোপের মুখে মাত্র ৩৭ রানেই টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটসম্যানকে হারায় দিল্লী ক্যাপিটালস। দিল্লী ক্যাপিটালসের ব্যাটসম্যানদের উপর তান্ডব চালান জয়দেব উনাদকাট।

উনাদকাট ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে পৃথ্বী শকে ফিরিয়ে দিয়ে শুরু করেছিলেন আর পাওয়ার প্লের শেষ বলে আজিঙ্কা রাহানেকে দিয়ে শেষ করেছেন। মাঝে উইকেটের পিছনে স্যাঞ্জু স্যামসনের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত করে আউট করেছেন শিখর ধাওয়ানকে।

উনাদকাটের বোলিং তান্ডবে ৩৬ রানে ৪ উইকেট হারানোর দিল্লির ইনিংসে প্রথম বারের মতো আঘাত হানেন মুস্তাফিজুর রহমান। এই পেসার দারুণ এক স্লোয়ার কাটারে ফিরিয়ে দেন স্টয়নিসকে। ৩৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া দিল্লঅ প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে অধিনায়ক ঋষভ পান্তের ব্যাটে।

পঞ্চম উইকেটে ঋষাভ পান্ত ও ললিত যাদবের ৫১ রানের জুটিতে যখন বড় রানের স্বপ্ন দেখছে দিল্লি ঠিক তখনই রান আউটের ফাঁদে পড়েন পান্ত। দারুণ এক থ্রোতে দিল্লীর অধিনায়ককে ফিরিয়ে দেন রিয়ান পরাগ। ঋষভ পান্তের ব্যাট থেকে আসে ৩২ বলে ৫১ রান। পান্ত ফিরে যাওয়ার পরই ২০ রান করে আউট হয়ে যান যাদবও।

এই দুজন ফিরে যাওয়ার পর টম কারানের ১৬ বলে ২১ ও ক্রিস ওকসের ১৫ রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান সংগ্রহ করে দিল্লি। রাজস্থান রয়্যালসের বোলারদের ভিতর উনাদকাট ৩ টি, মুস্তাফিজুর রহমান ২ টি ও ক্রিস মরিস শিকার করেন ১ টি করে উইকেট।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

দিল্লি ক্যাপিটালস: ১৪৭/৮ (ওভার: ২০; পৃথ্বী- ২, ধাওয়ান- ৯, রাহানে- ৮, পান্ত- ৫২, যাদব- ২০, কারান- ২১, ওকস- ১৫, অশ্বিন- ৭, রাবাদা- ৯) (উনাদকাট- ৪-০-১৫-৩, মরিস- ৩-০-২৭-১, মুস্তাফিজ- ৪-০-২৯-২)

রাজস্থান রয়্যালস: ১৫০/৪ (ওভার: ১৯.৪ ; বাটলার- ২, ভোহরা- ৯, স্যামসন- ৪, দুবে- ২, মিলার- ৬২, পরাগ- ২, রাহুল- ১৯, মরিস- ৩৬*, উনাদকাট- ১১*) (ওকস- ৪-০-২২-২, অভিষ- ৪-০-৩২-৩, রাবাদা- ৪-০-৩০- ২)

ফলাফল: রাজস্থান রয়্যালস ৩ উইকেটে জয়ী।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...