সাকিবদের কী ভয় বাড়ল?

বরাবরই বড় আসরগুলোতে বড় স্বপ্ন নিয়ে এসে এক রাশ হতাশা নিয়ে ফিরে যায় আফগানরা। এবারের এশিয়া কাপে তাঁদের ভাগ্যে কি লেখা আছে? - উত্তরের জন্য সময়ের অপেক্ষা করতেই হচ্ছে। কিন্তু, শুরুটা মোক্ষমই হল এশিয়ার নবীন এই ক্রিকেট শক্তির।

যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটা দেশ, মাঠ নেই যথেষ্ট পরিমানে, রাজনৈতিক অস্থীরতা সেখানে রোজকার ঘটনা, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দেখা মেলে না দেশটির মাঠগুলোতে। এত  নেই নেইয়ের মাঝেও আফগানিস্তান দেশটা ক্রিকেট নিয়েই গর্ব করতে পারে। বিশ্ব ক্রিকেটের মঞ্চে শক্তিশালী এক সাহসী দল হিসেবেই নিজেদের প্রমাণ করে চলেছে তাঁরা।

ছোটখাটো দৈত্যবধ তাঁরা প্রায়ই করে। বড়দের পার্টি নষ্ট করে দিতে এই আফগান দলটার কোনো জুড়ি নেই। তবে, বড় আসর আসলেই কেমন যেন দম হারিয়ে ফেলে দলটা। ঠিক অভিজ্ঞতার অভাব থাকলে যেমন হয় আরকি।

এই যেমন গেল এশিয়া কাপে, মানে ২০১৮ সালে তাঁরা এশিয়া কাপ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল। কিন্তু, ফাইনালেও যাওয়া হয়নি দলটির। এরপর ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে দৃশ্যটা আরো ভয়াবহ। কারণ, এবার গ্রুপ পর্বের সবগুলো ম্যাচেই হারে দলটা। আর হারার থেকেও বড় কথা হল – মাঠে একদমই প্রতিরোধ গড়তে পারেনি সেবার রশিদ খান, মোহাম্মদ নবিরা।

বরাবরই বড় আসরগুলোতে বড় স্বপ্ন নিয়ে এসে এক রাশ হতাশা নিয়ে ফিরে যায় আফগানরা। এবারের এশিয়া কাপে তাঁদের ভাগ্যে কি লেখা আছে? – উত্তরের জন্য সময়ের অপেক্ষা করতেই হচ্ছে। কিন্তু, শুরুটা মোক্ষমই হল এশিয়ার নবীন এই ক্রিকেট শক্তির।

এশিয়া মহাদেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট লড়াইয়ের সবচেয়ে সফল দলগুলোর একটিকে আক্ষরিক অর্থেই গুড়িয়ে দিয়েছে তাঁরা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে মাত্র ৭৫ রানেই প্রতিপক্ষের নয়টা উইকেট ফেলে দেয় আফগানরা। সেই সময় ১০০’র নিচে অলআউট হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল এক কালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল শ্রীলঙ্কা। তবে, শেষ উইকেটে ৩০ রান যোগ হয়েছিল বলে একটু লড়াইয়ের পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা।

অবশ্য, ঠিক লড়াইয়ের পুঁজি নয়। ম্যাচটা খানিক দীর্ঘায়িত হয় কেবল। ব্যাটিংয়ে নেমে আফগান ওপেনাররা ছিলেন রূদ্রমূর্তিতে। ছয় ওভারে হজরতউল্লাহ জাজাই ও রহমানুল্লাহ গুরবাজ মিলে যোগ করেন ৮৩ রান। ম্যাচ শেষ সেখানেই। এরপর আদৌ আর লড়াইয়ে ফেরা হয়নি শ্রীলঙ্কার। বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আফগানিস্তান, সেটাও প্রায় ১০ ওভার হাতে রেখে। প্রথম ম্যাচেই দেখা মিললো ‘ক্লিনিকাল’ আফগানিস্তানের।

এই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই এশিয়া কাপের লড়াই শুরু করবে বাংলাদেশ। আসছে ৩০ আগস্ট, মঙ্গলবার ম্যাচটা অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহাসিক শারজাহ স্টেডিয়ামে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। তার ওপর দলে চলছে পালাবদল। দলে এক গাদা পরিবর্তন এসেছে। সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছে সাকিব আল হাসানকে।

ফলে, বাংলাদেশ দল ব্যাকফুটে থেকেই মাঠে নামবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। প্রশ্ন হল, এই আফগানদের বিপক্ষে পারবে তো বাংলাদেশ দল? প্রশ্নটা চাইলে সাকিবও নিজের দলকে করতেই পারেন। বাংলাদেশের সুখস্মৃতি হল, এই মরুর বুকেই সর্বশেষ এশিয়া কাপে আফগানদের বিপক্ষে জয় পাওয়া। আবার সর্বশেষ মোকাবেলায় বাংলাদেশের মাটি থেকেই জয় নিয়ে ফিরেছিল আফগানরা। টি-টোয়েন্টি সিরিজ ড্র হয়েছিল।

তাই, ঠিক কার পাল্লাটা এই মুহূর্তে ভারি সেটা বলা ‍মুশকিল। তবে, প্রথম ম্যাচেই মোহাম্মদ নবির দলের এই ক্লিনিকাল পারফরম্যান্স দেখার পর বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ভয় পেতেই পারেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...