প্রথমার্ধের পর, মানে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং শেষে – বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দলগতভাবে এই ম্যাচ থেকে পাওয়ার ছিল না কিছুই। তবে ব্যক্তিগতভাবে অনেককিছু পাওয়ার ছিল। সে সুযোগটা উন্মুক্ত ছিল সবার জন্য।
কিন্তু, এক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদই কেবল তা কাজে লাগাতে পেরেছেন। তাতে দলের বড় লাভ না হলেও – একটা বার্তা দেওয়া গেছে। আর সেই বার্তাটা ব্যক্তিগত ভাবে রিয়াদের ও সামগ্রিক ভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য খুবই জরুরী ছিল।
এখন দল না জেতায় রিয়াদের এই শতককে কেন্দ্র করে নাক সিটকানোর কিংবা শতকের কৃতিত্ব কেড়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশ এই ম্যাচ এমনিতেও জিতত না। ৫৮ রানে অর্ধেক ব্যাটার সাজঘরে ফিরে যাবার পর তো আরও না। কে জানে, যোগ্য একাধিক সঙ্গী পেলে ম্যাচের লড়াইটা আরও জোড়ালো হত, রিয়াদ নিজেও আরও প্রবল হয়ে ব্যাট করতে পারতেন।
এই অবস্থায় রিয়াদ নিয়ন্ত্রণের সাথে যে ব্যাটিংটা করেছেন, তা ধুঁকতে থাকা দলের অন্যান্য ব্যাটারদের থেকে একদম আলাদা করেছে তাঁকে। রিয়াদকে তাই সুন্দর একটা ইনিংস খেলার কৃতিত্বটা দিতেই হবে।
তা ছাড়া বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে শতক বরাবরই বিশেষ। মুম্বাইয়ের ওয়াঙখেড়ে স্টেডিয়ামের এই ইনিংসটার মাধ্যমে রিয়াদ কিন্তু একটা স্টেটমেন্টও রেখে গিয়েছেন। পরিস্থিতির তাগিদে যদি উইকেট বাঁচিয়ে খেলার প্রয়োজন পড়ে, তা হলে তাঁকে যেন অবশ্যই উপরে খেলানো হয়। রিয়াদের এই স্টেটমেন্ট অবশ্য নতুন কিছু নয়।
কিন্তু ওয়াঙখেড়েতে যেভাবে ইনিংসটা তিনি বিল্ড আপ করেছেন, তাতে স্টেটমেন্টটা আরও বেশি জোরালোই হয়েছে। তবে হ্যাঁ, ব্যক্তিগত একটা ইনিংসের ভিড়ে দলের রুগ্ণ চেহারাটা যেন আড়ালে পড়ে না যায়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখা জরুরি।
আর সবকিছু ছাপিয়ে দিনশেষে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদই যে আমাদের একমাত্র উপভোগের রসদ হয়ে ওঠেছেন, সেজন্য তাঁকে বাহবা না দিলেই নয়।
অভিনন্দন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ! আপনি ফিরেছেন। প্রতাপের সাথেই ফিরেছেন। এবার স্রেফ এই ফেরাটা ধরে রাখার পালা। এর বাইরে এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশ দলের প্রাপ্তির খাতাটা একদম শূন্য।