ভুলের মাশুল বিতর্কে

ক্রিকেট মাঠে ম্যাচ পরিচালনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন অন ফিল্ড আম্পায়ার। অনেক সময় কোনো আম্পায়ারের একটি ভালো কিংবা খারাপ সিদ্ধান্ত ম্যাচের ফলাফল পাল্টে দিতে পারে। তবে মাঠে এত দ্রুত সিদ্ধান্ত দেয়া নিশ্চয়ই সহজ কাজ নয়।

তাই আম্পায়ারদের ভুল হওয়াটাও খুব স্বাভাবিক এবং খেলারই একটি অংশ। যদিও এখন ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম আসার পর ভুল সিদ্ধন্তের সম্ভাবনা অনেক কমে এসেছে। তবে এমন কয়েকজন আম্পায়ার আছেন যাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক হয়েছে বারবার। যারা পরিচিত ক্রিকেট বিশ্বের বিতর্কিত আম্পায়ার হিসেবে। সেসব আম্পায়ারদের নিয়ে এই তালিকা।

  • শাকুর রানা

ক্যারিয়ারে বেশ কয়েকবার আম্পায়ারিং করে বিতর্কিত হয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক এই আম্পায়ার। ১৯৮৭ সালে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার এক টেস্ট ম্যাচে তা যেনো মাত্রা ছাড়িয়েছিল। সেই সময় ইংল্যান্ডের অধিনায়ক মাইক গ্যাটিং এর সাথে রীতিমত বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন এই আম্পায়ার।

তাঁরা দুজন একে অপরকে আঙুল দেখিয়ে হুমকি দিচ্ছিলেন। একে অপরকে বাজে গালিও দিচ্ছিলেন তাঁরা। যা সরাসরি দেখেছিল গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। এমনকি স্ট্যাম্প মাইকে তাঁদের গালিও শোনা যাচ্ছিল। এছাড়াও নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের এক ম্যাচেও জাভেদ মিয়াঁদাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেয়া নিয়ে বিতর্কিত হয়েছিলেন তিনি।

  • ড্যারেল হেয়ার

১৯৯১ সালে আম্পায়ার হিসেবে অভিষিক্ত হবার পর তাঁর ক্যারিয়ারে বারবার বিতর্কিত হয়েছেন হেয়ার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক টেস্টে মুত্তিয়া মুরলিধরণকে বারবার নো বল দিচ্ছিলেন হাত ভাঙার অভিযোগ তুলে। মোট সাতবার নো বল দেন তিনি।

পরে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা তাঁর দল নিয়ে কিছুক্ষণের জন্য মাঠও ত্যাগ করেন। এছাড়া ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের আরেকটি টেস্ট ম্যাচেও বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে পাকিস্তানের বিপক্ষে বল ট্যাম্পারিং এর অভিযোগ এনে ইংল্যান্ডে ৫ টি পেনাল্টি রান দিয়েছিলেন তিনি। চা বিরতির পর পাকিস্তান দল প্রতিবাদ জানিয়ে আর মাঠে নামেনি। পরে ইংল্যান্ডকে জয়ী ঘোষণা করেন এই আম্পায়ার।

  • আসাদ রউফ

এক সময় পাকিস্তানের অন্যতম সেরা আম্পায়ার ছিলেন রউফ। তবে ২০১২ সালে দিল্লীর এক মডেল তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছিলেন।

২০১৩ সালে আবার বাজি, প্রতারণা নানা বিষয়ের জন্য অভিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে স্পট ফিক্সিং এর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ ও আসে তাঁর বিরুদ্ধে। ফলে সে বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আম্পায়র লিস্ট থেকে তাঁর নাম সড়িয়ে নেয় আইসিসি।

  • মার্ক বেনসন

২০০৭ ও ২০০৮ সালে পরপর দুবার বছরের সেরা আম্পায়ার হয়েছিলেন মার্ক বেনসন। তবে ২০০৮ সালে সিডনিতে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার এক টেস্টে তাঁর ক্যারিয়ার নাটিকীয় ভাবে পাল্টে যায়।

রিকি পন্টিংয়ের নিশ্চিত আউট না দিয়ে প্রথম বিতর্কের জন্ম দেন তিনি। এরপরেও অস্ট্রেলিয়ার পুরো ইনিংসে বারবার ভুল সিদ্ধান্ত আসতেই থাকে। পরের বছরই তিনি আম্পায়ারিং পেশা থেকে অবসর নিয়েছিলেন।

  • স্টিভ বাকনার

ওয়েস্ট ইন্ডিজের আম্পায়ার স্টিভ বাকনার ক্রিকেটের ইতিহাসে একাধারে খুবই আলোচিত যেমন, তেমনি সবচেয়ে বিতর্কিত আম্পায়ারদের একজন। ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান মাঠে দাঁড়িয়ে নিয়েছেন নানা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার এক টেস্টে ব্যাটসম্যান পরিস্কার এইজ হওয়ার পরেও আউট দেননি তিনি।

এরপরেও আরো দুইবার ওই ব্যাটসম্যানকে আরো দুইবার নট আউট দেন তিনি। এছাড়া মাঠে রাহুল দ্রাবিড়ের সাথে একবার আজগুবি আচরণ করেও ম্যাচ ফি থেকে জরিমানা গুনেছিলেন তিনি।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link