ক্ষিপ্রতার অন্য অধ্যায়

ন্যাশনাল জিওগ্রাফি অথবা ডিস্কভারি চ্যানেলে একটা দৃশ্যের চিত্র যেন প্রায়শই চোখে পড়ত। বাঘ অথবা সিংহের শিকার করার দৃশ্য। প্রাণপণে হরিণের ছুটে চলা এবং বেঁচে গেলে ড্রয়িং রুমে বসে আমাদের দীর্ঘশ্বাস ফেলার দিনগুলো নিশ্চয়ই এখনও সজীব।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফি অথবা ডিস্কভারি চ্যানেলে একটা দৃশ্যের চিত্র যেন প্রায়শই চোখে পড়ত। বাঘ অথবা সিংহের শিকার করার দৃশ্য। প্রাণপণে হরিণের ছুটে চলা এবং বেঁচে গেলে ড্রয়িং রুমে বসে আমাদের দীর্ঘশ্বাস ফেলার দিনগুলো নিশ্চয়ই এখনও সজীব। আমরা এখন আর ঘটা করে সেগুলো দেখি না। তবে প্রতীকি একটা চিত্র কিন্তু হরহামেশাই দেখি। তাও আবার ক্রিকেট ময়দানে।

ঠিক বাঘ-হরিণের শিকার করার খেলা নয়। তবে শিকার করার একটা বিষয় সেখানে রয়েছে। উইকেট শিকারে মত্ত থাকে একদল। রান নেওয়ার ফাঁকে উইকেট নেওয়ার প্রবণতাও থাকে প্রচণ্ড। দৃষ্টিনন্দন সব থ্রোয়ে উইকেট উপড়ে ফেলা সেই সাথে প্রতিপক্ষ ব্যাটারকে প্যাভিলনে ফেরত পাঠানো। একেবারে তীক্ষ্ণ চোখেই তাকিয়ে থাকে ফিল্ডাররা। সে চোখ ফাঁকি দেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়।

তবে ক্রিকেট ইতিহাসে ধুরন্ধর সব ফিল্ডারদের ফাঁকি দেওয়া খেলোয়াড়দের সংখ্যাও খুব একটা কম নয়। বাইশ গজে রানিং বিটিউন দ্য উইকেট বিষয়টাও যে খেলার একটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশ তাই প্রমাণ করেছেন তাঁরা। তাঁদের ক্ষিপ্রতা হার মানায় যেকোন দুরন্ত ফিল্ডারকে।

  • মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত)

বুদ্ধিমত্তার সাথে সমান তালে দৌড়াতেও পারতেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ভারতের সবচেয়ে সফলতম এই অধিনায়ক নিজের ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ছিলে দূর্দান্ত অ্যাথলেট। অধিকাংশ সময় তিনি দস্তানা হাতে উইকেটের পেছনে অবস্থান করেছেন বলেই হয়ত তাঁর দৌড় সম্পর্কে খুব একটা স্বচ্ছ ধারণা কারও নেই।

তাঁর বুদ্ধিমত্তা আর দ্রুত গতির স্ট্যাম্পিং নিয়ে প্রায়শই প্রশংসা হয়েছে। তবে রানিং বিটিউইন দ্য উইকেটে তাঁর গতি নিয়ে আলোচনা খুব কম সময়ই হতে দেখা গেছে। তবে স্টার স্পোর্টেসের একবারে পর্যালোনায় দেখা যায় তিনি প্রায় ঘন্টায় ৩৫ কিলোমিটার গতিতে দৌড়ে থাকেন একজন ব্যাটারের সকল সরঞ্জাম গায়ে জড়িয়েও।

  • এবি ডি ভিলিয়ার্স (দক্ষিণ আফ্রিকা)

‘মিস্টার থ্রিসিক্সটি’ নামেই পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি ব্যাটার এবি ডি ভিলিয়ার্স। মাঠের এহেন কোন পজিশন নেই যেখানে তিনি বল পাঠিয়ে রান আদায় করে নেননি। তাঁর বিপক্ষে বোলাররা যেন রীতিমত চিন্তার মহাসাগরের কুল কিনারা খুঁজে পেতে পারতেন না।

ভার্সেটাইল এই ক্রিকেটার উইকেট রক্ষণের পাশাপাশি ওপেন ফিল্ড ফিল্ডার হিসেবেও ছিলেন দূর্দান্ত। ক্ষিপ্রতা আর বিচক্ষণতার প্রমাণ তিনি রেখেছেন খেলার মাঠে। এমনকি ব্যাটার বেশে ঢাল-তলোয়ার সমেত তিনি বাইশ গজে দ্রুতগতিতে দৌড়াতে পারাদের মধ্যে অন্যতম।

  • বিরাট কোহলি (ভারত)

কালেভদ্রে বিরাট কোহলিদের মত ব্যাটারদের দেখা মেলে। চোখ জুড়ানো ব্যাটিং প্রদর্শন বলতে যা বোঝায় তাঁর পুরোটা জুড়েই সম্ভবত বিরাট কোহলির আনাগোনা। একটা সময় ভাবা হত শচীন টেন্ডুলকারের শতকের শতক রেকর্ডটা ভেঙেই ফেলবেন বিরাট। কিন্তু হঠাৎ থমকে গেলেন তিনি।

সেখানটায় থমকে গেলেও বিরাট কখনোই বাইশ গজে রান নিতে গিয়ে থমকে যাননি। বরঞ্চ তিনি ছুটেছেন দুর্বার গতিতে। ব্যাটারদেরকে ছুটে আসা বল আর ফিল্ডারদের গতিকে পরাস্ত করতে হয়। সে কাজটায় মোটামুটি সিদ্ধহস্তই বলা চলে কোহলিকে।

  • ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার সবখানেই সরব। মাঠ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সবখানেই তাঁর অবাধ বিচরণ। সদা হাস্যজ্জ্বল দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন নিজের মারকাটারি ব্যাটিং দিয়ে। ওয়ার্নার একজন ব্যাটার সর্বোপরী একজন ক্রিকেটার হিসেবে যেমন ক্ষিপ্র ঠিক তেমনি প্রতিভাবান।

প্রায়শই তাঁকে দল থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে। সেটাই অন্তত প্রমাণ করে একজন খেলোয়াড় হিসেবে ঠিক কতটা দ্রুতগতি সম্পন্ন ছিলেন তিনি। তাছাড়া বাইশ গজেও ব্যাটার হিসেবে নেমে সবসময় নিজের ক্ষিপ্রতার পরিচয় দিয়ে গেছেন ওয়ার্নার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...